বৃহস্পতিবার, ২৮ জুলাই, ২০১৬, ০৯:৪৪:২৫

গুলশানে হামলা, জঙ্গিদের আশ্রয়দাতা সেই পরিবারের খোঁজে পুলিশ

গুলশানে হামলা, জঙ্গিদের আশ্রয়দাতা সেই পরিবারের খোঁজে পুলিশ

গুলশান হামলাগুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলাকারীদের বাসায় আশ্রয় দেওয়া সন্দেহভাজন একটি পরিবারকে খুঁজছে পুলিশ। গত মঙ্গলবার রাতে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের একটি দল ওই পরিবারকে ধরতে পল্লবীর একটি বাসায় অভিযান চালায়।

এদিকে, কাউন্টার টেররিজমের কর্মকর্তারা মনে করছেন, গত সোমবার রাতে কল্যাণপুরে পুলিশের অভিযানে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় গ্রেপ্তার রাকিবুল হাসান (রিগ্যান) গুলশানের হামলাকারীদের সঙ্গে যুক্ত। হাসান এখন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পুলিশের পাহারায় চিকিৎসাধীন। এ বিষয়ে তাঁর কাছ থেকে কিছু তথ্য পাওয়া গেছে। সুস্থ হয়ে উঠলেই তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

মামলার তদন্তসংশ্লিষ্ট কাউন্টার টেররিজমের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা গতকাল বুধবার বলেন, গোপন খবরের ভিত্তিতে পল্লবীর একটি বাসায় অভিযান চালানো হয়। কিন্তু আগেই জঙ্গিদের আশ্রয়দাতা হিসেবে সন্দেহভাজন পরিবারটি সেখান থেকে সটকে পড়ে। তাদের আটক করা গেলে গুলশানে হামলার ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যাবে।

তদন্তের সঙ্গে সম্পৃক্ত সূত্র জানায়, গুলশানে হামলার দুই দিন আগে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এস এম গিয়াসউদ্দিন আহসানের একটি ফ্ল্যাটে হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলাকারীরা উঠেছিল। গত জুনে ওই ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়েছিল একটি পরিবার। সেখানে স্বামী-স্ত্রী, তাঁদের দুই শিশুসন্তান এবং আরেক আত্মীয় নারী বসবাস করতেন। গুলশানে হলি আর্টিজানে হামলার পর পরিবারটি পালিয়ে গিয়ে পল্লবীর একটি বাসায় ওঠে। রিমান্ডে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক গিয়াসউদ্দিনের ফ্ল্যাটের তত্ত্বাবধায়ক মাহবুবুর রহমান ও ভাগনে আলম চৌধুরীর কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পল্লবীতে অভিযান চালানো হয়।

গিয়াসউদ্দিনের একজন স্বজন জানান, মে মাসের মাঝামাঝি দুই সন্তানসহ এক নারী গিয়াসউদ্দিনের বসুন্ধরার বাসাটি ভাড়া নিতে এসেছিলেন। ওই নারী তখন তাঁর বাড়ি দিনাজপুরে বলে জানিয়েছিলেন। জুনে বাসাটিতে ওঠার সময় ওই নারী সামান্য কিছু মালামাল এনেছিলেন। তখন বাড়ির তত্ত্বাবধায়ক তাঁর জাতীয় পরিচয়পত্রসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র চেয়েছিলেন। তত্ত্বাবধায়ককে ওই নারী বলেন, ঈদুল ফিতরের পরে আরও মালামাল নিয়ে উঠবেন তিনি। তখন কাগজপত্র দেওয়ার কথা বলেছিলেন ওই নারী। কিন্তু তা আর দেননি।

নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক গিয়াস উদ্দিন আহসান, তাঁর ফ্ল্যাটের তত্ত্বাবধায়ক মাহবুবুর রহমান ও ভাগনে আলম চৌধুরীকে রিমান্ড শেষে গত মঙ্গলবার কারাগারে পাঠানো হয়।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেররিজম ও ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম বিভাগের (সিটি) প্রধান মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, রিমান্ডে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকসহ চারজনের কাছ থেকে কিছু তথ্য পাওয়া গেছে। প্রয়োজনে তাঁদের আবার দ্বিতীয় দফায় রিমান্ডে নেওয়া হবে। গুলশানে রেস্তোরাঁয় হামলার ঘটনায় বিএনপির নেতা রুহুল কুদ্দুস তালুকদারের পারিবারিক গাড়িচালক নাসিরউদ্দিনকে কুমিল্লা থেকে এবং আমিনুল ইসলামকে আশুলিয়া থেকে গ্রেপ্তারের খবর জানা নেই বলে জানিয়েছেন কাউন্টার টেররিজমের প্রধান। তিনি বলেন, গুলশানে হামলার ঘটনায় করা মামলায় এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়নি।

দুই সাক্ষীর আদালতে জবানবন্দি: জঙ্গি হামলার সময় নিজের প্রচেষ্টায় বেরিয়ে আসা হলি আর্টিজান বেকারির কর্মী সুমন রেজা ও জিম্মিদশা থেকে উদ্ধার চিকিৎসক ভারতীয় নাগরিক সত্যপ্রকাশ পাল গত মঙ্গলবার ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতের সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দিয়েছেন।

এদিকে জিম্মিদশা থেকে উদ্ধারের পর হাসনাত করিম ও কানাডায় অধ্যয়নরত বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র তাহমিদ হাসিব খান গতকাল পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে ছিলেন বলে ওই বাহিনীর একটি সূত্র জানিয়েছে। -প্রথম আলো
২৮ জুলাই, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪.কম/সৈকত/এমএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে