নিউজ ডেস্ক : গুলশান হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্টে হামলা ও কল্যাণপুরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানের পর পুলিশ ঢাকা শহরের বিভিন্ন মেসগুলোতে নজরদারি এবং তল্লাশি জোরদার করেছে।
সন্দেহভাজন জঙ্গীদের খোঁজে গত রাতে পুলিশ ঢাকার ১১টি মেসে তল্লাশি চালিয়েছে, যদিও কাউকে আটক করা হয়নি। তার দু'দিন আগে কল্যাণপুরে একটি ফ্ল্যাটে পুলিশি অভিযানে ৯ জঙ্গী নিহত হয়।
পুলিশি অভিযানের আশঙ্কায় শহরের অনেক বাড়ির মালিক তাদের মেসে থাকা ভাড়াটিয়াদের ওপর নজরদারিও বাড়িয়েছেন। এসব মেসে থাকা ছাত্র এবং চাকরীজীবীরা এমন অবস্থায় তাদের জন্য কঠিন পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে।
ঢাকার বিভিন্ন এলাকার মেসগুলোতে যে নজরদারি জোরদার হয়েছে সেটি বেশ টের পাওয়া যাচ্ছে। পুলিশি অভিযানের আশঙ্কায় খানিকটা চিন্তিত ব্যাচেলররা।
অনেকে মনে করেন, যেভাবে মেসগুলোতে পুলিশ তল্লাশি চালাচ্ছে তাতে করে বাড়িয়াওয়ালারা মেস বাড়া দেয়ার ব্যাপারে নিরুৎসাহিত হচ্ছেন। কারণ পুলিশি অভিযান একটি বাড়তি ঝামেলা তৈরি করে বলে মনে করেন তারা।
অনেকেই বলছেন, এমনিতেই ঢাকা শহরের বাড়ির মালিকরা ব্যাচেলরদের বাসা ভাড়া দিতে চায় না, তার ওপর আবার পুলিশের তল্লাশি। বর্তমান প্রেক্ষাপটে আরো কঠিন হয়ে পড়েছে।
ঢাকা শহরের মেসগুলোতে কত লোক বসবাস করে তার সুনির্দিষ্ট কোনো পরিসংখ্যান নেই। প্রতি মাসেই বিভিন্ন মেসে নতুন ভাড়াটে আসা-যাওয়া করে। সেক্ষেত্রে পুরনো ভাড়াটেরা নতুনদের সম্পর্কে আগে থেকেই পুরোপুরি তথ্য জানতে পারেন না।
পুলিশ মনে করে, জঙ্গিরা সংগঠিত হতে কখনো-কখনো বাসা ভাড়া নেয়। মেসগুলোতে বসবাসরত ছাত্রদের দলে ভেড়ানোর জন্যও টার্গেট করা হতে পারে। সেজন্যই পুলিশ নজরদারি বাড়িয়েছে।
এদিকে বাড়িওয়ালারাও মেসে বসবাসকারী ভাড়াটের ওপর নজরদারি বাড়িয়েছে। এক্ষেত্রে বাড়িওলাদের বিভিন্ন প্রশ্নের মুখে পড়ছেন মেসে বসবাসকারী ভাড়াটিয়ারা।
ঢাকার মেস ভাড়া দেয়া বাড়ির মালিকরা জানান, প্রতিনিয়ত মেসে বসবাসকারীদের নজরদারিতে রাখা হচ্ছে। থানায় যেসব ভাড়াটিয়াদের সম্পর্কে তথ্য দিয়েছি, তার বাইরে কেউ বাড়িতে থাকতে পারবে না। ভাড়াটেদের বাসায় কোনো মেহমান যদি রাতে থাকতে চায় তাহলে অবহিত করতে হবে- এ ব্যাচেলরদের জানিয়ে দিয়েছি।
পুলিশ বলছে, মেস ভাড়া দেয়ার বিষয়ে তারা কোনো বিধি-নিষেধ আরোপ করেননি। তবে ভাড়াটেদের তথ্য থানায় জমা দিতে বাড়ির মালিকদের তাগাদা দেয়া হয়েছে। সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে বিভিন্ন মেসে অভিযান চালানো হচ্ছে।
গুলশান ও কল্যাণপুরে অভিযানের পর পুলিশ ঢাকা শহরের বিভিন্ন মেসগুলোতে নজরদারি এবং তল্লাশিও জোরদার করেছে। সন্দেহভাজন জঙ্গীদের খোঁজে গতরাতে পুলিশ ঢাকার ১১টি মেসে তল্লাশি চালায়, যদিও কাউকে আটক করা হয়নি।
অনেক বাসিন্দা মনে করছেন, যেভাবে মেসগুলোতে পুলিশ তল্লাশি চালাচ্ছে তাতে করে বাড়িয়াওয়ালারা মেস বাড়া দেয়ার ব্যাপারে নিরুৎসাহিত হচ্ছেন। চিন্তাটা এখন আরো বাড়ছে। ভাড়াটিয়া ব্যাচেলরদের চেয়ে বেশি চিন্তা করে মালিকদের। তারা মনে করেন ব্যাচেলরদের রাখছি, কোনো সমস্যা আছে কি-না।
২৯ জুলাই,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম