মঙ্গলবার, ০২ আগস্ট, ২০১৬, ০৮:৪৬:১৫

তামিম চৌধুরী ভারতে আত্মগোপন করতে পারে: বাংলাদেশ পুলিশ

তামিম চৌধুরী ভারতে আত্মগোপন করতে পারে: বাংলাদেশ পুলিশ

নিউজ ডেস্ক : গুলশান হামলার ‘মাস্টারমাইন্ড’ তামিম আহমেদ চৌধুরী গ্রেফতার এড়াতে ভারতে আত্মগোপন করতে পারে বলে বাংলাদেশ পুলিশের বরাতে জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস। তামিম চৌধুরীর বিরুদ্ধে জঙ্গি হামলার পরিকল্পনা করা, জঙ্গিদের আর্থিক সহায়তা দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।

সোমবার ভারতীয় বার্তা সংস্থা পিটিআই-কে বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিচালক এ.কে.এম শহীদুল হক জানিয়েছেন, “গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তোঁরায় হামলার ‘মাস্টারমাইন্ড’ তামিম চৌধুরী গ্রেফতার এড়াতে ভারতে আত্মগোপন করে থাকতে পারে, এ সম্পর্কে ইতিমধ্যে ভারতীয় নিরাপত্তা সংস্থাগুলোকে আমরা সতর্ক করেছি।”

সম্প্রতি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানসহ পুলিশ প্রধান শহীদুল হক ভারত সফর করেন। এসময়ে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ তামিম চৌধুরীর বিষয়ে ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এনআইএ) এবং সিবিআই-কে সতর্ক করার পর ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলো তামিমের অনুসন্ধান চালাচ্ছে বলেও শহীদুল হক জানান।

তিনি আরও বলেন, তামিম চৌধুরী বাংলাদেশে ইসলামিক স্টেট (আইএস)-এর মূল ব্যক্তি হতে পারে। তবে এখনও পর্যন্ত জঙ্গি হামলাগুলোয় আইএস-এর কোনও সংযুক্তি খুঁজে পাওয়া যায়নি বলে তিনি জানান। পিটিআই-এর বরাতে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস এক প্রতিবেদনে এ কথা জানিয়েছে।

আইএস তামিম চৌধুরীকেই বাংলাদেশে আইএস-এর প্রধান বলে দাবি করেছে। আনুমানিক ৩৫ বছর বয়সী তামিম চৌধুরীকেই বাংলাদেশের আইএস প্রধান আবু ইব্রাহিম আল-হানিফ বলে ধারণা করা হচ্ছে। ২০১৩ সালে তিনি কানাডা ছাড়েন। অনেক নিরাপত্তা বিশ্লেষক তার পরিচয় নিশ্চিত করেছেন। প্রতিবেশী দেশগুলোর স্থানীয় জঙ্গিগোষ্ঠী এবং আইএস-এর সঙ্গে তার সংযোগ রয়েছে বলে ধারণা করা হয়। চলতি বছরে আইএস-এর কথিত প্রপাগান্ডা ম্যাগাজিন দাবিক-এ তার একটি সাক্ষাৎকার প্রকাশিত হয়েছিল। পুলিশ জানিয়েছে, তামিম জেএমবি-র একাংশের প্রধান। অপর অংশের নেতৃত্বে আছে সাইদুর রহমান।

ভারতে বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিচালক শহীদুল হকের সফরসঙ্গী এক জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তা বলেছেন, জামায়াতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি)-এর এই নতুন অংশ আইএস-এর সঙ্গে যুক্ত হয় বছর তিনেক আগে। একইভাবে আল-কায়েদার সঙ্গে যুক্ত হয় আনসারুল্লাহ বাংলা টিম নামে একটি জঙ্গি সংগঠন।

এদিকে, তামিমসহ জেএমবি-র অন্তত পাঁচ সদস্য ভারতে প্রবেশ করেছে বলে সন্দেহ করছে বাংলাদেশ। এরইমধ্যে সেই পাঁচ সন্দেহভাজনের নামের তালিকা ভারতীয় কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি সে দেশে গ্রেফতার সন্দেহভাজন জেএমবি সদস্য নুরুল হক মণ্ডল ওরফে নাইমকে ফেরত দেওয়ারও অনুরোধ জানানো হয়েছে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল গত বৃহস্পতিবার নয়াদিল্লিতে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় এক বৈঠকে সন্দেহভাজন পাঁচ জেএমবি সদস্যের ব্যাপারে আলোচনা করেন। সেই বৈঠকেই নাইমকে দেশে ফেরত পাঠানোর এ অনুরোধ জানান বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গুলশান হামলার পর থেকেই পশ্চিমবঙ্গ, আসাম ও মেঘালয়ার মতো ভারতীয় রাজ্যগুলোকে সতর্কতায় রাখা হয়েছে। সে সতর্কতার মধ্যেই এবার বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে পাঁচ সন্দেহভাজন জঙ্গির তালিকা ভারতকে দেওয়া হয়।

কয়েকদিন আগে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব) যে ৬৮ জন নিখোঁজের তালিকা প্রকাশ করেছে তার মধ্যে ওই পাঁচজনের নাম রয়েছে। বাংলাদেশের দাবি অনুযায়ী, তারা সবাই জেএমবি-র কর্মী। তারা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতে প্রবেশ করেছে বলে ধারণা করছে বাংলাদেশ।

পাঁচ সন্দেহভাজনের মধ্যে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কানাডীয় নাগরিক তামিম চৌধুরীও রয়েছেন। তাকে গুলশান হামলার হোতা বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, বাংলা ট্রিবিউন
০২ আগস্ট, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে