ঢাকা : বন্ধু নীলয় হত্যার বিচার চেয়ে প্রেসক্লাবের সামনে ব্যানার টাঙিয়েছেন আরেক বন্ধু। জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনের রেলিংয়ে লাগানো হচ্ছিল বেশ বড়সড় ব্যানারটি। তাতে লেখা, ‘নিলয় নীল হত্যাকাণ্ডের এক বছর, রাষ্ট্র এবং প্রশাসনের কী খবর?’
বড়টির পাশে আরো ছোট দুটি ব্যানার। তবে অনশন করছিলেন শুধু একজন ব্যক্তিই। তার নাম সাজ্জাদ সাজু। ব্লগার নিলয় নীল হত্যার প্রতিবাদে দিনব্যাপী অনশনে বসেন তিনি। একাই ডাক দিয়েছেন অনশনের।
গলায় ব্যানার ঝোলানো সাজ্জাদের। তিনি নিলয়ের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন। ছিলেন সহযোদ্ধা ও সহকর্মী। এখন নিলয়ের হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবিতে রাজপথে নেমেছেন একাই।
২০১৫ সালের ৭ আগস্ট এদিনে রাজধানীর গোড়ানে বাসায় ঢুকে ব্লগার নীলাদ্রি চট্টোপাধ্যায়কে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। তিনি ‘নিলয় নীল’ নামে বিভিন্ন ব্লগে লিখতেন।
গণজাগরণ মঞ্চের সক্রিয় কর্মীও ছিলেন তিনি। ব্লগের পাশাপাশি ফেসবুকেও ছিলেন নীলাদ্রি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর শেষ করে একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠানে কাজ করতেন তিনি।
তার হত্যাকাণ্ডে ই-মেইল বার্তায় হত্যার দায় স্বীকার করে আনসার আল ইসলাম নামের একটি সংগঠন। সেই ঘটনায় পুলিশ উগ্রপন্থীদের সন্দেহ করার কথা জানিয়েছিল।
তার মাথায় ও ঘাড়ে বেশ কয়েকটি ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন ছিল। এ তথ্য পুলিশের। বন্ধুর হত্যাকাণ্ডের তদন্ত বা বিচারের ক্ষেত্রে কোনো উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি নেই বলে মনে করেন সাজ্জাদ সাজু।
তার ভাষ্য, জঙ্গিদের প্রশ্রয় দেয়ার কারণেই গুলশান ও শোলাকিয়ার মতো জায়গায় জঙ্গি হামলা হচ্ছে। নিলয়ও এসব কথাই বলত। সে বলত গ্রেপ্তার করা না হলে, বিচার না হলে জঙ্গিরা আরো উৎসাহিত হবে।
নিলয়ের হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবিতে প্রতিবাদী অনশনে একাই কেন তিনি এমন প্রশ্নের জবাবে সাজ্জাদ বলেন, অনেকেই প্রতিবাদ করতে চায়। কিন্তু নিরাপত্তার অভাবে পারে না। অবস্থাটা এমনই দাঁড়িয়েছে যে, গণমাধ্যম ছবি তুললেও ভয়ে থাকে সবাই।
‘তবে জঙ্গিবাদ সম্পর্কে দেশের মানুষ এখন সচেতন হচ্ছে। সরকার কিছু পদক্ষেপ নিচ্ছে। মানুষ এখন জঙ্গিদের ঘৃণা করতে শিখছে। এ থেকেই হয়তো একটি সমাধান বের হয়ে আসবে,’ জানালেন সাজ্জাদ।
৭ আগস্ট,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম