নিউজ ডেস্ক : রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে বিপুল পরিমাণ জাল টাকা ও জাল টাকা তৈরির উপকরণসহ ৯ বিদেশিসহ এক বাংলাদেশিকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-২। এদের মধ্যে সাতজন ক্যামেরুনের, দুইজন কঙ্গোর এবং একজন বাংলাদেশি নাগরিক রয়েছে।
সোমবার বেলা ১২টার দিকে র্যাব-২ এর আগারগাঁওয়ের কার্যালয়ে কমান্ডিং অফিসার (সিও) লে. ক. মো. মহিউদ্দিন আহমেদ এক ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানান। তিনি জানান, কয়েকজন ভুক্তভোগীর অভিযোগের ভিত্তিতে রবিবার বিকালে বসুন্ধরার তিনটি বাসায় পৃথক অভিযান চালানো হয়। এরপর তাদের গ্রেফতার করা হয়।
কালো আবরণে ঢাকা, একটু কেমিক্যাল দিয়ে ঘষলেই হয়ে যায় চকচকে সাদা ডলার। এমন ম্যাজিক দিয়ে ডলার প্রস্তুত করে তা বাংলাদেশিদের কাছে দীর্ঘদিন ধরে বিক্রি করে আসছিল বিদেশি একটি প্রতারক চক্র। অবশেষে ভুক্তভোগীদের অভিযোগের ভিত্তিতে র্যাবের হাতে গ্রেফতার হয়েছে এই প্রতারক চক্রের নয় সদস্য।
প্রতারণার ধরনের বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, জাল ডলার তৈরি, তা বাজারে বিক্রি এবং ডলার দিয়ে মানুষের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে এই চক্রটি প্রতারণা করে আসছিল। এরা প্রথমে বাংলাদেশিদের সঙ্গে মেইল ও মোবাইলে যোগাযোগ করে। এরপর তারা ডলার ব্যবসা করার প্রস্তাব দেয়। তারা বাংলাদেশিদের বলে,এই ডলার অবৈধভাবে আসা সম্ভব না, ডিপ্লোম্যাটিক লাগেজে কালো ডলার আসবে, যা আপনি সাদা করে ব্যবহার করতে পারেন। এরপর ডলারের রং বদলের প্রক্রিয়া দেখায় প্রতারক চক্রটি।’
তিনি আরও বলেন, আগে থেকেই কিছু ডলারের ওপর বিশেষ কালো রং করে রাখে চক্রটি। এরপর বাংলাদেশিদের তাদের বাসায় নিয়ে যায়। বাসায় বসে কালো ডলারের ওপর কেমিক্যাল দিয়ে তা ঘষে পরিষ্কার করে দেখায় চকচকে ডলার হয়ে যাচ্ছে। তারা দুই একটি ডলার বাংলাদেশিদের কাছে দিয়ে দেয়, যা বাংলাদেশিরা খরচও করতে পারে। এরপর স্থানীয়রা লোভে পরে কমদামে এসব ডলার কেনার জন্য বিদেশি চক্রটির সঙ্গে চুক্তি করে। তখন বিদেশি চক্রটি টাকার বিনিময়ে আসলের নাম করে তাদের নকল ডলার দিয়ে দেয়।
সিও বলেন, ‘তারা বাংলাদেশে বিভিন্নভাবে প্রবেশ করে। এসেই সাধারণ পরিবারে বিয়ে করে। এরপর রাজধানীর অভিজাত এলাকায় তারা বসবাস শুরু করে। বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার বি-ব্লকের ১০নং সড়কে অভিযান চালিয়ে আবদু নাসারা (৩৫), জিয়ান ক্লডি (৪০) এবং বাংলাদেশি নারী মেরি ময়না পরীকে (২৬) আটক করা হয়। তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ জালমুদ্রা, জালমুদ্রা তৈরির কেমিক্যাল ও সরঞ্জামাদি উদ্ধার করা হয়। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বসুন্ধরার এফ-ব্লকের ২নং সড়কের একটি বাসা থেকে গোনু ডিসায়ার (৩৭), কাম্বিয়া ডিউ নিদোর্ত (৪৩) ও তিয়াদিউ বার্নার্ডকে (৩৪) আটক করা হয়। তাদের নিয়ে অভিযান চালিয়ে মোগুয়েম সোলোকে (৪২) জালমুদ্রা ও ইয়াবাসহ আটক করা হয়। সোলোর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে জঙ্গা দিয়াদোনামা মার্লিন (৪১), মুতম্ব জালি ইউসুফ (৪৪) ও মিম্বা সার্গেসকে (৩৭) আটক করা হয়।
সিও বলেন, ‘তাদের কাছে দেশি বিদেশি অনেক সিম রয়েছে। সব সিম সচল। তারা দীর্ঘদিন ধরে এভাবে জালিয়াতি করে বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশে পাচার করেছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
০৮ আগস্ট, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএম