নিউজ ডেস্ক : বিএনপির কমিটি চূড়ান্ত ঘোষণার পর উচ্ছ্বাস প্রকাশের পরিবর্তে ক্ষোভের বিস্ফোরণ ঘটেই চলেছে। কমিটি ঘোষণার পর পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন নতুন কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান পদ পাওয়া মোসাদ্দেক আলী ও সহ-প্রচার সম্পাদক শামীমুর রহমান শামীম।
নতুন কমিটিতে ভাইস চেয়ারম্যান পদে না থাকার ঘোষণা দিয়েছেন আবদুল্লাহ আল নোমান। সোমবার বিকেলে নোমান নিজেই এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
বিএনপির রাজনীতি থেকেও তিনি সরে দাঁড়াতে পারেন বলে ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গেছে।
তবে বিএনপির জন্য দুঃসংবাদ ক্ষুব্ধ হয়ে আরো ২৪ নেতা বিএনপির রাজনীতিকে বিদায় জানাতে যাচ্ছেন। বিএনপির দায়িত্বশীল সূত্র এমনই ইঙ্গিত দিয়েছে।
বিএনপির দায়িত্বশীল একাধিক নেতা বলেছেন, কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার হাতে একক ক্ষমতা দেয়া হলেও তাকে প্রভাবিত করা হয়েছে। কমিটি গঠনের আগ পর্যন্ত বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্যদের কাছেও তেমন কোনো তথ্য ছিল না।
তারা বলেছেন, অনেক জুনিয়র নেতা সিনিয়রের চেয়ে উপরের পদ পাওয়ায় ক্ষোভ আরো বাড়ছে। অনেকে আগের কমিটিতে যে পদে দায়িত্ব পালন করেছেন নতুন কমিটিতে তার চেয়ে নিচের পদ পেয়েছেন। এতে অনেকেই অপমানবোধ করছেন।
তারা বলছেন, বিএনপির ইতিহাসে সবচেয়ে বড় কমিটি ঘোষণার পাশাপাশি বড় ধরনের ব্যর্থতাও। বড় কমিটি দিয়ে সবাইকে খুশি রাখার চেষ্টা করা হলেও বেশির ভাগ নেতারই ক্ষুব্ধ। ত্যাগীদের যথাযথ মূল্যায়ন না করায় তৃণমূলের নেতাকর্মীরাও হতাশ।
বিএনপির সবচেয়ে প্রবীণ নেতা শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন। তিনি আগের কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। নতুন কমিটিতেও ভাইস চেয়ারম্যান পদে রয়েছেন তিনি। প্রত্যাশিত পদ না পেয়ে আশাহত তিনি।
দলের দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, কমিটি গঠনের পর নিজেদের পদ দেখে ক্ষুব্ধ হওয়া নেতাদের মধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান (আগে যুগ্ম সম্পাদক ছিলেন), ৯০-এর স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের আরেক নেতা ডাকসুর সাবেক এজিএস ও বিএনপি নির্বাহী কমিটির সদস্য নাজিম উদ্দিন আলম (আগের কমিটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূঁইয়া (আগের কমিটির সমাজকল্যাণ সম্পাদক), উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু, নির্বাহী সদস্য নাদিম মোস্তফা, উপদেষ্টা জয়নুল আবদীন ফারুক (আগের কমিটির প্রচার সম্পাদক), উপদেষ্টা আবদুস সালাম (আগের কমিটির অর্থনীতি বিষয়ক সম্পাদক), বিশেষ সম্পাদক ড. আসাদুজ্জামান রিপন (আগের কমিটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক), নির্বাহী সদস্য ডা. মাজহারুল ইসলাম (আগের কমিটির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক) প্রমুখ। ক্ষুব্ধ আছেন পদ ছাড়া আবদুল লতিফ জনি যিনি আগের কমিটির সহ-দপ্তর সম্পাদক ছিলেন।
প্রত্যাশিত পদ না পেয়ে ক্ষোভের তালিকায় বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জে (অব.) মাহবুবুর রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান (আগের কমিটিতে ভাইস চেয়ারম্যান), ভাইস চেয়ারম্যান সাদেক হোসেন খোকা (আগের কমিটিতেও ভাইস চেয়ারম্যান), ভাইস চেয়ারম্যান শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন (আগের কমিটিতে ভাইস চেয়ারম্যান), আবদুল আউয়াল মিন্টু (আগের কমিটিতে উপদেষ্টা), অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন (আগের কমিটিতে উপদেষ্টা), ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজউদ্দিন আহমদ (আগের কমিটিতে ভাইস চেয়ারম্যান)।
তাদের মধ্যে কেউ কেউ রাজনীতি থেকে দূরে সরে যেতে পারেন। কেউ কেউ পদত্যাগের চিন্তাভাবনাও করছেন।
৮ আগস্ট,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম