স্পোর্টস ডেস্ক: আজ থেকে বছর দশেক আগেও টি২০ ক্রিকেটের বিষয়ে ক্রিকেটপ্রেমীদের তেমন কোনও ধারণাই ছিল না। ক্রিকেটীয় বিনোদনের নিরীখে আইপিএল, বিগ ব্যাশের দাপটে আজ টেস্ট, ওয়ানডেকে বলে বলে গোল দিতে পারে টি-টোয়েন্টি।
আন্তর্জাতিক স্তরে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের আত্মপ্রকাশ ২০০৩ সালে ইংল্যান্ড বোর্ডের হাত ধরে। এর পর গত ১৩ বছরে অনেকটাই বদলে গিয়েছে টি২০ ক্রিকেটের মানচিত্র।
এই সময়ে গেইল-কোহালি-ডি ভিলিয়ার্সদের মতো বিধ্বংসী ব্যাটসম্যানরা যেমন এসেছেন, তেমনই সুনীল নারিনদের মতো বোলাররাও উঠে এসেছে। এই তারকাদের থেকে আমরা বেছে নেওয়ার চেষ্টা করলাম সর্বকালের সেরা টি২০ একাদশ।
দেখুন তো আপনার বাছাই একাদশের সঙ্গে এর মিল কতটা।
ব্রেন্ডন ম্যাকালাম: বিশ্বের অন্যতম বিধ্বংসী এ ওপেনারকে রাখা হয়েছে ওপেনিংয়ের দায়িত্বে। আইপিএলের প্রথম ম্যাচে মাত্র ৭৩ বলে ১৫৮ রান করেছিলেন তিনি। এই ফরম্যাটে কিউই ওপেনারের ৭টি সেঞ্চুরি এবং ৩৩টি হাফ সেঞ্চুরি রয়েছে। স্ট্রাইক রেট ১৩৭।
ক্রিস গেইল: তর্কাতিত ভাবে টি২০ ইতিহাসের সবচেয়ে বিধ্বংসী ব্যাটসম্যান ক্রিস গেইল। এই ফর্ম্যাটে তাঁর সর্বোচ্চ রান ১৭৫। ১৮টি সেঞ্চুরি এবং ৫৯টি হাফ সেঞ্চুরির মালিক গেইলের স্ট্রাইক রেট প্রায় ১৫১।
বিরাট কোহালি: এবির মতোই এই মুহূর্তে বিরাটকে বাদ দিয়ে টি২০ দল ভাবা সম্ভব নয়। মোট প্রায় ২০০টি ম্যাচ খেলে ফেলা কোহালির টি২০তে ৪টি সেঞ্চুরি রয়েছে। গড় প্রায় ৫০।
এ বি ডেভিলিয়ার্স: এই মুহূর্তে বিশ্বের যে কোনও সেরা দলে অনায়াসে জায়গা পাবেন এ বি। যে কোনও অবস্থায় ম্যাচের রং বদলে দিতে পারেন এই প্রোটিয়া ব্যাটসম্যান। মোট ২১৬টি ম্যাচে ১৪৫ স্ট্রাইক রেটে প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার রান করেছেন তিনি।
সাকিব অল হাসান: বাংলাদেশের সর্বকালের সেরা এই অলরাউন্ডারকে রাখা হয়েছে পাঁচ নম্বরে। বাঁহাতি স্পিনার অলরাউন্ডার বল এবং ব্যাট দু’ক্ষেত্রেই দলকে সাহায্য করতে পারবে। মোট ২০৮টি ম্যাচে ২৪০টি উইকেটের পাশাপাশি ১২৩ স্ট্রাইক রেটে প্রায় সাড়ে তিন হাজার রানও করেছেন তিনি।
মহেন্দ্র সিংহ ধোনি: ব্যাটসম্যান এবং ফিনিশার ধোনির রেকর্ড অসামান্য। তা ছাড়া অধিনায়ক হিসাবেও তাঁর রেকর্ড অসামান্য। আইপিএলে ১৪৩টি ম্যাচে প্রায় সাড়ে তিন হাজার রান করেছেন তিনি। প্রায় হেরে যাওয়া বহু ম্যাচ একার হাতে জিতিয়ে দিয়েছেন ফিনিশার ধোনি।
ডোয়েন ব্রাভো: ওয়েস্ট ইন্ডিজের এই পেসার অল রাউন্ডার তালিকার সাত নম্বরে। আইপিএল, ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগ, বিগ ব্যাশ খেলা এই ক্যারিবীয় অল রাউন্ডার ৩২৪ ম্যাচে ৩৪১ উইকেট নিয়েছেন। ১২৫ স্ট্রাইক রেটে পাঁচ হাজারের বেশি রানও করেছেন তিনি।
ডেল স্টেইন: দক্ষিণ আফ্রিকার এই বোলার শুধু সেরা টি২০ একাদশ নয়, সম্ভবত টেস্ট এবং ওয়ান ডে দলেও অনায়াসে সুযোগ পাবেন। আইপিএলে ডেকান চার্জার্স, সানরাইজার্স হায়দরাবাদ, গুজরাত লায়ন্সের হয়ে খেলা স্টেইন মোট ১৭৯টি টি২০তে ২০১ উইকেট নিয়েছেন। বোলিং গড় ৬.৬৭।
সুনীল নারিন: পরিসংখ্যানের দিক থেকে ক্যারিবিয়ান এই অফ স্পিনার অবশ্যই টি২০ ক্রিকেটের সেরা বোলার। তিনিই একমাত্র বোলার যার ওভার প্রতি গড় রান ছয়ের নীচে। মোট ১৯১টি টি২০তে ওভার প্রতি ৫.৬২ রান দিয়ে ২৪১ উইকেট নিয়েছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান: দলে পেসার হিসাবে রাখা হয়েছে দ্য ফিজকে। বাংলাদেশী এ বাঁহাতি সবেমাত্র ক্যারিয়ার শুরু করলেও ইতিমধ্যেই তাঁর ক্লাস দেখিয়েছেন। আইপিএলে তাঁর বোলিংয়ে ভর করেই লিগ জিতেছে সানরাইজার্স। জাতীয় দলেও তিনি অসামান্য প্রতিভার স্বাক্ষর রাখছেন।
লাসিথ মালিঙ্গা: তাঁর অদ্ভুত অ্যাকশান তাঁকে সবসময়েই অন্য বোলারদের থেকে আলাদা করে রেখেছে। টি২০তে যেখানে ওভার প্রতি ৮ রানের নীচে রাখাটাকেই ভাল বোলিং বলা হয়, সেখানে এই শ্রীলঙ্কান পেসারের বোলিং গড় ৬.৬৯। ২২১টি আন্তর্জাতিক টি২০ খেলে ২৯৯টি উইকেট নেন তিনি।
সুরেশ রায়না: দ্বাদশ ব্যক্তি হিসাবে দলে থাকলেন সবচেয়ে বেশি আইপিএল ম্যাচ খেলা সুরেশ রায়না। মারকুটে এই মিডল অর্ডার বাঁহাতির ২৪২টি ম্যাচে ১৩৯ স্ট্রাইক রেটে প্রায় সাড়ে ছ’হাজার রান রয়েছে। তিনটি সেঞ্চুরি এবং ৩৬টি হাফ সেঞ্চুরি রয়েছে তাঁর।-অনন্দ বাজার
১১ আগস্ট,২০১৬/এমটি নিউজ২৪/আ শি/এএস