স্পোর্টস ডেস্ক: বিশ্বের অনেক বিখ্যাত ফুটবলার আছেন যাদের ভাইয়েরাও ফুটবলার। কিন্তু খুব কম লোকই এই ভাইদের সম্পর্কে জানে। বেশিরভাগ সময়ই একজনের সাফল্যের আড়ালে অন্যজন ঢাকা পড়েছেন। জেনে নিন এমন বিখ্যাত এইসব ফুটবলারদের ভাইদের সম্পর্কে।
টনি ক্রস ও ফেলিক্স ক্রস:
সাবেক বায়ার্ন মিউনিখ ও বর্তমান রিয়াল মিডফিল্ডার টনি ক্রস জার্মানির হয়ে বিশ্বকাপ এবং বায়ার্নের হয়ে ট্রেবল জিতেছেন। রিয়ালের হয়ে জিতেছেন চ্যাম্পিয়ন্স লিগও। গত বছর ফিফা ব্যালন ডি অর’র তালিকায় নাম ছিলো তার। এই টনি ক্রসকে সবাই চিনলেও তার ভাই ফেলিক্স ক্রসকে খুব কম লোকই চেনে। ফেলিক্স খেলেন বুন্দেসলিগার দল ওয়েন্ডার ব্রেমেনে।
বায়ার্ন এবং ব্রেমেনে নাম লেখানোর আগে টনি ও ফেলিক্স একই সঙ্গে খেলেছেন হানসা রোস্টকে। টনি ২০০৬ সালে বায়ার্নে যোগ দেয়ার পর ২০১০ পর্যন্ত রোস্টকেই ছিলেন ফেলিক্স। তবে গত পাঁচ বছর ধরে ওয়েন্ডার ব্রেমেনে খেলা ফেলিক্স জার্মান অনূর্ধ্ব-২১ দলে খেললেও জাতীয় দলে এখনো জায়গা পাননি।
ওয়েলসি স্নাইডার ও রডনি স্নাইডার:
নেদারল্যান্ডসের অন্যতম তারকা ওয়েলসি স্নাইডার। খেলেছেন আয়াক্স, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, রিয়াল মাদ্রিদ ইন্টার মিলানের মতো দলে। ২০১০ সালে ইন্টারের হয়ে জিতেছেন ট্রেবল। দেশের হয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ম্যাচ খেলা স্নাইডার গোল করেছেন ২৮টি।
এই বিখ্যাত ভায়ের ছোট ভাই রডনি খেলেন স্কটল্যান্ড ইউনাইটেডে। ভাইয়ের আয়াক্সেই ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন রডনি। তবে সুবিধে করতে পারেননি। অনূর্ধ্ব-১৭ ও অনূর্ধ্ব-১৯ দলে খেললেও জাতীয় দলে এখনো সুযোগ পাননি এই ২৪ বছর বয়সী।
বাস্তিয়ান সোয়াইনস্টেইংগার ও তোবিয়াস সোয়াইনস্টেইংগার:
শৈশবের ক্লাব বায়ার্ন মিউনিখ ছেড়ে এই মৌসুমেই ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে যোগ দিয়েছেন জার্মান মিডফিল্ডার বাস্তিয়ান সোয়াইনস্টেইংগার। বায়ার্নের হয়ে অনেকগুলো শিরোপা জয়ের পাশাপাশি জার্মানির সর্বশেষ বিশ্ব জয়েরও অন্যতম কারিগর তিনি। তার ভাই তোবিয়াস সোয়াইনস্টেইংগার বায়ার্নের দ্বিতীয় দলে খেললেও কখনো মূল দলে খেলেননি। তবে বুন্দেসলিগায় কখনো না খেললেও বায়ার্ন মিউনিখের সমর্থক তিনি।
পল পগবা-ম্যাথিয়াস পগবা ও ফ্লোরেনটিন পগবা:
বর্তমান সময়ের অন্যতম আলোচিত খেলোয়াড় ফ্রান্সের পল পগবা। জুভেন্টাস তারকাকে দলে পেতে লাইন দিয়েছে ম্যানচেস্টার থেকে শুরু করে রিয়াল মাদ্রিদ, বার্সেলোনার মতো সব বড় বড় ক্লাব। ২০১৪ বিশ্বকাপের সেরা উদীয়মান খেলোয়াড়ও হয়েছেন তিনি।
অন্যদের চেয়ে আরে এক জায়গায় এগিয়ে পগবা। তারা যে তিন ভাই ফুটবলার। বড় দুই ভাই ম্যাথিয়াস ও ফ্লোরেনটিন পগবা অবশ্য তার মতো আলো ছড়াতে পারেননি। ম্যাথিয়াস খেলেন স্কটিশ ক্লাব প্যাট্রিকে। আর ফ্লোরেনটিন খেলছেন ফরাসি ক্লাব সেইন্ট ইনটাইনে। আরো মজার ব্যাপার হলো, পগবা ও ফ্লোরেনটিন ফ্রান্সের হয়ে খেললেও ম্যাথিয়াস খেলেন গায়ানার হয়ে।
জাভি অ্যালেনসো-মিকেল অ্যালেনসো:
বিশ্বকাপ ও দুইবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ী স্পেনের ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার জাভি অ্যালেনসো। খেলেছেন লিভারপুল ও রিয়াল মাদ্রিদে। বর্তমানে বায়ার্ন মিউনিখের অন্যতম সদস্য তিনি। ফিফার নির্বাচিত সেরা একাদশে ঠাই পেয়েছেন দুইবার।
ইংলিশ ক্লাব লিভারপুলে যোগ দেয়ার আগে খেলতে স্প্যানিশ ক্লাব রিয়াল সোসিয়েদাদে। এই ক্লাবেই তার সতীর্থ ছিলেন বড় ভাই মিকেল অ্যালেনসো। পরে মিকেলও ইংল্যান্ডে পাড়ি জমান। বোল্টন ওয়ান্ডার্সের পর মিকেল খেলেছেন চার্লটন অ্যাথলেটিকসে। তবে বড় দুটি লিগে খেললেও জাতীয় দলের জার্সি গায়ে জড়াতে পারেননি তিনি।
লুইস সুয়ারেজ ও পাওলো সুয়ারেজ:
নানা বিতর্কের জন্ম দেয়া সাবেক লিভারপুল তারকা লুইস সুয়ারেজ বর্তমানে খেলছেন লা লিগা চ্যাম্পিয়ন বার্সেলোনায়। ২০১১ সালে কোপা আমেরিকার সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হওয়ার পাশাপাশি ২০১৪ সালে ইংলিশ লিগের সেরা খেলোয়াড়ও নির্বাচিত হন তিনি। তবে বিশ্বকাপে কামড়কাণ্ডে জড়িয়ে বেশ সমালোচিত হন উরুগুয়েন তারকা।
সুয়ারেজের বড় ভাই পাওলো সুয়ারেজও ফুটবলার। পাওলো নিজের পুরো ক্যারিয়ার জুড়ে খেলেছেন এলসালভাদরের ক্লাব মেটাপানে। অনূর্ধ্ব-২০ দলে খেললেও জাতীয় দলে কখনো খেলতে পারেননি।
সামি খেদিরা ও রানি খেদিরা:
২০১৪ সালের বিশ্বকাপ জেতা জার্মান দলের অন্যতম সদস্য সামি খেদিরা। ২০১০ সালে রিয়াল মাদ্রিদে যোগ দেয়ার আগে খেলেছেন বুন্দেসলিগার ক্লাব স্টুটগার্ডে। সম্প্রতি রিয়াল ছেড়ে যোগ দিয়েছেন ইতালির জুভেন্টাসে।
সামির ছোট ভাই রানি খেদিরাও ফুটবলার। বড় ভাইয়ের মতো তিনিও বেড়ে উঠেছেন স্টুটগার্ডের একাডেমিতে। প্রথমসারির দলে সুযোগ না পেয়ে রানি যোগ দেন বুন্দেসলিগার দ্বিতীয় সারির দল লিপজিকে। জার্মান অনূর্ধ্ব-১৫, অনূর্ধ্ব-১৭ ও অনূর্ধ্ব-১৯ দলে খেলেছেন। সামি জার্মানির হয়ে খেললেও তার ২১ বছর বয়সী ভাই খেলতে চান তিউনিসিয়ার হয়ে।
জন টেরি-পল টেরি:
সাবেক ইংল্যান্ড অধিনায়ক এবং বর্তমান চেলসি অধিনায়ক জন টেরি ইংলিশ ফুটবলে সম্ভাব্য সব ট্রফিই জিতেছেন। প্রিমিয়ার লিগ, চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, এফএকাপ, ইউরোপা লিগ ও ক্যাপিটাল কাপ সব ট্রফিই তার ঝুলিতে রয়েছে।
তবে একজন ফুটবলার হওয়ার পর এতো শিরোপাজয়ী জন টেরির ভাই পল টেরিকে খুব কম লোকই চেনে। ইংল্যান্ডের বেশ কয়েকটি দ্বিতীয় সারির ক্লাবে খেলার পর ২০১২ সালে অবসর নেন পল। চ্যানেল আই
৩০ সেপ্টেম্বর,২০১৫/এমটিনিউজ২৪/রাসেল/মাহমুদ