স্পোর্টস ডেস্ক: পাকিস্তান ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে সফল বোলার ওয়াশিম আকরাম ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছেন ২০০৩ সালের বিশ্বকাপ ক্রিকেটের পর। এর পর থেকে তিনি ধারাভাষ্যকার ও কোলকাতা নাইট রাইডার্সের কোচের দায়িত্বপালন করে আসছেন। তবে এবার তিনি ভারত-পাকিস্তান ক্রিকেট সিরিজ আয়োজনের জন্য মরিয়া। তাই বৃহস্পতিবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রতি আহবান জানিয়ে কিংবদন্তী পেসার ওয়াসিম আকরাম বলেছেন, চলমান অচলাবস্থা সমগ্র বিশ্বের ভক্তদের কষ্ট দিচ্ছে।
২০০৭ সালের পর উভয় দেশের মধ্যে প্রথমবারের মত আগামী ডিসেম্বরে সংযুক্ত আরব আমিরাতে প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ সিরিজের জন্য নয়াফদিল্লীর সবুজ সংকেতের অপেক্ষা করছে পাকিস্তান।
পাকিস্তানী জঙ্গীতের পরিকল্পনায় ২০০৮ সালে মুম্বাই হামলার পর চির প্রতিদ্বন্দ্বি পাকদের বিরুদ্ধে বেশিরভাগ খেলাধুলা বর্জন করে আসছে ভারত। যদিও ২০১২ সালের শেষ দিকে ভারতের মাটিতে উভয় দল সিমিত ওভারের একটি সিরিজ খেলেছে।
বিতর্কিত কাশ্মীর নিয়ে উভয় দেশের সীমান্তে সম্প্রতি গোলাগুলিসহ উত্তেজনা বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রস্তাবিত সিরিজ নিয়ে সন্দেহ সৃষ্টি হয়েছে। তবে ৪৯ বছর বয়সী ওয়াসিম বলেন, মোদি এ সিরিজের জন্য সবুজ সংকেত দেবেন বলে আশাবাদী তিনি।
বার্তা সংস্থা এএফপিকে ওয়াসিম বলেন, ‘এ সফরের জন্য অনুমতি দিতে আমি ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদিকে অনুরোধ করছি। আমি শুনেছি তিনি তার মন্ত্রী পরিষদকে বলেছেন, পাকিস্তানের সঙ্গে খেলাধুলায় তার কোন সমস্যা নেই। অতএব ক্রিকেট এগিয়ে যাওয়া উচিত।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমি জানি প্রধানমন্ত্রী মোদি ভারতকে একটি সুপারপাওয়ারে পরিণত করতে চান এবং তারা ক্রিকেটে সুপারপাওয়ার অতএব সমগ্র বিশ্বকে দেখাশোনা করা এবং অন্যদের অগ্রগতিতে সাহায্য করা তাদের কর্তব্য। তাই আমি নিশ্চিত তিনি এ সিরিজে অনুমতি দেবেন।’
ক্রিকেট ইতিহাসে বাঁ-হাতি সেরা পেস বোলারদের একজন হিসেবে বিবেচিত ওয়াসিম বলেন, ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ ক্রিকেট ফ্যাব্রিকস এর একটি অংশ এবং এটা না হওয়ায় খেলাটির ক্ষতি হচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘এটা বিশ্ব ক্রিকেটের জন্য ক্ষতিকর। ভারত-পাকিস্তান ক্রিকেটটা চুড়ান্ত প্রতিদ্বন্দিতা এবং একটি ইন্দো-পাক ম্যাচে খেলব এমন স্বপ্ন দেখে আমি বড় হয়েছি।’
১৯৯৯ সালে পাকিস্তান দলের ভারত সফরের কথা স্মরণ করেন তিনি। সে সময় তিন টেস্টের সিরিজে দুই ম্যাচে স্বাগতিকদের হারিয়েছিল পাকিস্তান।
তৎকালীন পাকিস্তান দলের অধিনায়কত্ব করা ওয়াসিম বলেন, ‘অনেক হুমকির মধ্যেই আমরা ভারত সফরে গিয়েছিলাম। কিন্তু আমাদের জন্য সেটা ইতিহাস হয়ে আছে। আমরা যেখানে গেছি সবখানেই উষ্ণ সম্বর্ধনা পেয়েছে এবং সে ভালবাসা ও আপ্যায়ন ছিল অবিশ্বাস্য।
তিনি আরও বলেন, ‘২০০৪ সালে ভারতীয় দলের পাকিস্তান সফরে ঠিক একই ঘটনা ঘটেছিল এবং এমনকি এখনো একজন ধারাভাষ্যকর হিসেবে আমি যখনই ভারত যাই জনগণের কাছ থেকে অনেক ভালবাসা পাই এবং তারা আমার কাছে জানতে চায়- আমরা কেন ক্রিকেট খেলছি না।
পাকিস্তান-ভারতের সমর্থকদের ক্রিকেট আবেগের বিষয়টি মাথায় রেখে তিনি বলেন, ‘লক্ষ-কোটি ক্রিকেট ভক্ত ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ দেখতে চায় এবং অন্য সকল দলের চেয়ে এ দুই দেশের মূল বিষয় হচ্ছে কেউই হারতে চায় না, এমনকি কোন ভক্তও তার দলের পরাজয় দেখতে চায় না। অতএব আমি মনে-প্রাণে বিশ্বাস এবং আশা করি সব কিছু ঠিক হয়ে যাবে এবং বিরতিহীনভাবে ক্রিকেটীয় সম্পর্ক সচল হবে।’
সূত্র: বাসস/এএফপি
১ অক্টোবর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/রাসেল/মাহমুদ