ডেল স্টেইন : আমার ক্রিকেট জীবনের দীর্ঘতম বিদেশ সফর একই সঙ্গে সবচেয়ে উত্তেজকও! কিছুতেই না ভেবে থাকতে পারছি না যে, আগামী দু’মাসে অনেকের কেরিয়ার চূড়ান্ত চেহারা নেবে, তৈরি হবে এমনকী ভেঙেও পড়বে! এবং কথাটা আমি দু’দলের সম্পর্কেই বলছি।
দু’টো দলের মধ্যেই মিল রয়েছে। দু’দলেই হাফডজন করে প্রতিষ্ঠিত প্লেয়ার রয়েছে, যারা স্কোয়াডের ভিত গড়ছে। সঙ্গে বেশ কিছু নতুন মুখ। যারা আন্তর্জাতিক মঞ্চে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে মুখিয়ে। লম্বা সফরের সূচি আর গোটা ভারত চষে ফেলার ভীতি ছাপিয়েও আমি বেশি উত্তেজিত। সাত-সাতটা বছর আইপিএলে কাটিয়ে আমরা জানি ঠিক কী আমাদের থেকে প্রত্যাশা করা হচ্ছে এই সফরে।
একটার পর একটা শহর জার্নিতে কী ভাবে বিরক্তি কাটিয়ে উঠতে হয়। যেটা ভাল ব্যাপার— এ দেশের সবচেয়ে আরামদায়ক হোটেলগুলোয় আমরা থাকছি। আর বিশ্বের সবচেয়ে ক্রিকেট-আবেগী দর্শকদের সামনে পারফর্ম করার সম্মান আর সুযোগ পাচ্ছি। সীমিত ওভারের ফর্ম্যাটে ভারত এগিয়ে রয়েছে। টেস্ট ক্রিকেটে আবার আমরাই এক নম্বর টিম। আমার মনে হচ্ছে, ভারত সেটার থেকে আমাদের টেনে নামাতে চাইবে এই সিরিজে।
আমরা টি-টোয়েন্টি আর ওয়ান ডে—দু’টোতেই ওদের শ্রেষ্ঠত্বকে চ্যালেঞ্জ জানাতে তৈরি। এক দিনের ম্যাচে আন্ডারডগ থাকতে আমার কোনও আপত্তি নেই। স্বভাবতই যে দলের নেতৃত্বে এমএস ধোনি সেই টিমে ‘চাপ’ শব্দটা না থাকাই প্রত্যাশিত। তবে পাশাপাশি ঘরের মাঠে খেলার যে বিরাট প্রত্যাশার ওজন, সেটাও কিন্তু থাকবে ভারতের উপর। টেস্ট সিরিজে আবার আমাদের গৌরবের রেকর্ড রক্ষা করতে হবে। সত্তর-আশির দশকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের টানা ১৭টা বিদেশ সফরে অপরাজিত থাকার পরে দ্বিতীয় সেরা রেকর্ড আমাদেরই। দক্ষিণ আফ্রিকাও ২০০৬ থেকে বিদেশে টানা ১৪ টেস্ট সিরিজে হারেনি।
যদিও আমাদের টেস্ট ক্যাপ্টেন হাসিম আমলাকে আমরা বিড়ম্বনায় ফেলে দেব ‘রেকর্ড রক্ষা করব’ বললে। কেননা পাঁচ দিনের ফর্ম্যাটে আপনি হার বাঁচাতে চাওয়ার অর্থ টেস্ট ক্রিকেটের আসল পয়েন্টটাই মিস করছেন! আমাদের অপরাজিত থাকার সংখ্যাকে সাফল্যের সঙ্গে ১৫-এ নিয়ে যাওয়ার একটাই উপায়— ভারত সফরে টেস্ট সিরিজ জেতা। আমরা আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলব। ভারতীয় দলের প্রতি আমার শ্রদ্ধার সীমা-পরিসীমা নেই। কিন্তু তার মানে এই নয় যে, মাঠের দড়ি পেরনোর পরেও আমার নীল জার্সির বন্ধুদের বন্ধুই ভাবব!
২ অক্টোবর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এসএস/এসবি