বুধবার, ০৫ অক্টোবর, ২০১৬, ১১:৪৪:১৬

এগিয়ে আছে বাংলাদেশ!

এগিয়ে আছে বাংলাদেশ!

দেবব্রত মুখোপাধ্যায়: ব্যাপারটা বিশ্বাস করা একটু কঠিন। টেস্ট, ওয়ানডে বা টি-টোয়েন্টি; কোনো ফরম্যাটেই র্যাংকিংয়ে ইংল্যান্ডের ধারেকাছে নেই বাংলাদেশ। ইতিহাসে তো প্রশ্নই আসে না। ইংল্যান্ডের ক্রিকেটের ইতিহাস খেলাটির ইতিহাসের সমান সমৃদ্ধ। সেখানে আমরা ক্রিকেটে এখনো ‘হাঁটি হাঁটি পা’ করছি। তারপরও ইংল্যান্ডের চেয়ে এগিয়ে আছে বাংলাদেশ!
 
এই এগিয়ে থাকাটা সাম্প্রতিক লড়াইয়ে। ওয়ানডে ক্রিকেটে দু’ দলের সর্বশেষ চারটি সাক্ষাতের তিনটিতেই জয়ী দলের নাম বাংলাদেশ! আগামীকাল ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ শুরুর আগে আর কিছু না হোক, এই একটা পরিসংখ্যানই পারে বাংলাদেশ দলকে উজ্জীবিত রাখতে।
 
ইংল্যান্ডের সঙ্গে বাংলাদেশ প্রথম ম্যাচ খেলেছিলো সেই ২০০০ সালে। সেই থেকে শুরু করে ২০১০ সাল পর্যন্ত প্রথম দশ বছরে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশের কোনো জয় ছিল না। এই সময়ে দুই দল ১২টি ম্যাচ খেলে ফেলেছিল।
 
আর এই ২০১০ সাল থেকে চিত্রটা একেবারে বিপরীত হয়ে গেল। ২০১০ সালের জুলাইতে ব্রিস্টলে ইংল্যান্ডকে প্রথম হারায় বাংলাদেশ। লো স্কোরিং ম্যাচে বাংলাদেশের পাঁচ বোলার হয়ে ওঠেন দারুণ ত্রাস। আগে ব্যাট করে ইমরুল কায়েসের ৭৬ ও জহুরুল ইসলাম আমির ৪০ রানে ভর করে ২৩৬ রান তুলেছিল বাংলাদেশ। জবাবে ইংলিশ ব্যাটিং লাইনআপকে কখনোই স্বচ্ছন্দ থাকতে দেননি মাশরাফি, রাজ্জাক, সফিউল, রুবেল ও সাকিব; প্রত্যেকে দুটো করে উইকেট নেন। উল্লেখ করা যেতে পারে, মাশরাফি ইনজুরি থেকে ফিরে সেই সিরিজটায় অধিনায়কত্ব করেছিলেন।
 
পরের ম্যাচেই বার্মিংহামে অবশ্য হেরে যায় বাংলাদেশ। কিন্তু এরপরই পরপর দুটো বিশ্বকাপে দুটো জয়। ২০১১ বিশ্বকাপটা বাংলাদেশের তেমন ভালো কাটেনি। তার মধ্যেই সেরা ঘটনা ছিল এই ইংল্যান্ডকে হারানো।
 
নাঈম, রাজ্জাক ও সাকিবের বোলিংয়ে আগে ব্যাট করা ইংল্যান্ড চট্টগ্রামের সেই ম্যাচে ২২৫ রানে অলআউট হয়েছিল। বাংলাদেশকে ভালো শুরু এনে দিয়েছিলেন ইমরুল ও তামিম। ইমরুল আবারও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জয়ের ম্যাচে ফিফটি করেন; ৬০ রান করে আউট হয়েছিলেন। তবে এই ম্যাচও হারতে বসেছিলো বাংলাদেশ। ১৬৯ রানে হারিয়ে ফেলেছিল তারা ৮ উইকেট। সেখান থেকেই মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে মিলে ব্যাট হাতে বাংলাদেশকে নাটকীয় ম্যাচ জিতিয়েছিলেন সফিউল; ২৪ বলে ২৪ রান করেছিলেন।
 
সর্বশেষ ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জয়টা তো রূপকথা হয়ে গেছে।
 
গত বিশ্বকাপে বাংলাদেশের জন্য সেটা ছিলো গ্রুপপর্বে শেষের আগের ম্যাচ। বাংলাদেশ এই ম্যাচ না জিতে পরের ম্যাচ জিতলেও কোয়ার্টার ফাইনালে যেত। কিন্তু ইংল্যান্ডকে জিততেই হতো। এমন ম্যাচে ৮ রানে দুই ওপেনারকে হারিয়ে ফেলার পরও বাংলাদেশ ২৭৫ রানের বড় পুঁজি করেছিলো এডিলেডের সেই ম্যাচে। কারণ এক ঐতিহাসিক সেঞ্চুরি করেছিলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। রিয়াদের ১০৩ রানের সাথে মুশফিকের ছিল ৮৯ রান।
 
আর জবাব দিতে নেমে বারবার লড়াইয়ে ফেরার চেষ্টা করেছিল ইংল্যান্ড। ১৩২ রানে ৫ উইকেট হারানর পর পাল্টা লড়াই করেন বাটলার ও ওকস। মাশরাফি আগেই ২ উইকেট নিয়েছিলেন, বাটলারকে ফিরিয়ে ২ উইকেট নেন তাসকিন। আগেই ২ উইকেট ছিল রুবেলেরও। এই সময় সমীকরণ যখন টানটান, তখনই রুবেলের বিখ্যাত সেই দুই বল—উড়ে গেল ব্রড ও অ্যান্ডারসনের উইকেট। বাংলাদেশ চলে গেল কোয়ার্টার ফাইনালে।
 
আর কিছু না হোক, সিরিজ শুরুর আগে শূন্যে বল ওড়ার দৃশ্যটা মনে পড়বে বাংলাদেশের।-ইত্তেফাক
০৫ অক্টোবর,২০১৬/এমটি নিউজ২৪/আ শি/এএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে