বৃহস্পতিবার, ০৬ অক্টোবর, ২০১৬, ০৯:০৯:২৮

সাতটি সেঞ্চুরির মালিক হয়েও বুকভরা কষ্ট সোহাগ গাজীর!

সাতটি সেঞ্চুরির মালিক হয়েও বুকভরা কষ্ট সোহাগ গাজীর!

আব্দুল্লাহ এম রুবেল : ১৮তম ওয়ালটন জাতীয় ক্রিকেট লিগের দ্বিতীয় রাউন্ডে খুলনায় ঢাকা মেট্রো ও বরিশাল বিভাগের ম্যাচটি ড্র হয়েছে। ড্রয়ের ম্যাচে আলো ছড়িয়েছেন বরিশালের সোহাগ গাজী।

মূলত বোলার পরিচয়ের সোহাগ গাজী এই ম্যাচে হয়ে উঠেছিলেন ব্যাটসম্যান সোহাগ গাজী। প্রথম ইনিংসে তার অনবদ্য ১৪২ রানে ভর করে বিশাল সংগ্রহ পায় বরিশাল বিভাগ। পরে বল হাতে দুই ইনিংসে নিয়েছেন ৩ উইকেট। সব মিলিয়ে ম্যাচ সেরা জাতীয় দলের সাবেক এই ক্রিকেটার। তবে ব্যাট হাতে পারফর্ম করলেও জানিয়েছেন তার মূল পরিচয় বোলারই। সেঞ্চুরি নয়, ৫ উইকেট পেলে বেশি খুশি হতেন বলেও জানিয়েছেন।


আর লড়াইয়ে টিকে থাকতে হলে বোলিংয়ের মতো ব্যাটিংয়েও গুরুত্ব দিতে হবে তার। এই উপলব্ধি থেকেই ব্যাট হাতে নিজেকে প্রস্তুত করছেন তিনি। বুধবার ম্যাচ শেষে দেশের প্রথম সারির একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালের সঙ্গে আলাপকালে জানিয়েছেন এখনও দেশকে অনেক কিছু দেয়ার বাকি তার। আর সেটা পারফর্ম করেই প্রমাণ দিবেন তিনি।

তবে ম্যাচ জিততে না পারার আক্ষেপটা আছে। ভালো অবস্থানে থেকেও ঢাকা মেট্রোর বিপক্ষে জয়টা হাতছাড়া হয়েছে তাদের। এটা বিষয়ে বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করেছি, কিন্তু উইকেট আমাদের সাপোর্ট করেনি। প্রথম ইনিংসে ওদের ফলো অন করানোর পর ইচ্ছা ছিল অল্প রানে তাদের আটকে রাখতে পারলে ম্যাচ জিততে পারব। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেটা হয়ে ওঠেনি। উইকেটে বোলাররা সাপোর্ট পাচ্ছিল না। আর ওরা (ঢাকা মেট্রোর ব্যাটসম্যান) বেশ ভালোও করেছে।

জাতীয় লিগে এক সময় বরিশাল ছিল তলানির দল। সেখান থেকে উঠে এসে দলটি প্রথম টায়ারে খেলছে। আর এই মুহুর্তে রয়েছে পয়েন্ট তালিকারও শীর্ষে। দল নিয়ে কি ভাবছেন এই ক্রিকেটার। এবার জাতীয় লিগে লক্ষ্যই বা কী? এমন কথার জবাবে সোহাগ গাজী বলেন, ‘হ্যাঁ, বরিশাল নিয়ে এক সময় সবাই খুব সমালোচনা করতো। এখন আমরা প্রথম টায়ারের দল। আর আমাদের প্রথম লক্ষ্যই হল কোনভাবেই সেকন্ড টায়ারে নেমে যাওয়া যাবে না। সে লক্ষ্যে প্রথম ধাপে আমরা ঠিক পথেই আছি। আর এই মুহুর্তে আমাদের লক্ষ্য প্রথম অথবা দ্বিতীয় স্থানে থেকে লিগ শেষ করা।

ব্যাট হাতে চমক এবারই প্রথম না। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে সাত সাতটি সেঞ্চুরির মালিক তিনি। টেস্টেও সেঞ্চুরি আছে তার। ব্যাটিংটা তাহলেই ভালো উপভোগ করছেন। উত্তরে বলেন, ‘আমি সবসময়ই চেষ্টা করি বোলিংয়ের পাশাপাশি ব্যাটিংটাও ভালো করার। প্রথম রাউন্ডের ম্যাচে আমি খুব বাজেভাবে আউট হয়েছি। এটা নিয়ে খুব এক্সাইটেড ছিলাম। আমাকে প্ল্যান করে আউট করা হয়েছিল, তার মানে প্রতিপক্ষ আমার দুর্বল জায়গাটা ধরে ফেলেছে। এটা নিয়ে আমি কাজ করেছি গত কয়েকদিন। আর তার ফলটাও হাতেনাতে পেলাম।’

তার মানে কি বোলার সোহাগ গাজী এখন ব্যাটসম্যান সোহাগ গাজী হয়ে যাচ্ছেন,  ‘মোটেই না। আমার মূল পরিচয় আমি বোলারই। এই ম্যাচে আমি সেঞ্চুরি না করে ৫ উইকেট পেলে আরও বেশি খুশি হতাম। তবে এখন যে কম্পিটিশন চলছে, তাতে শুধু বোলিং করে দলে জায়গা পাওয়া খুব কষ্টকর ব্যাপার। এজন্য বোলিংয়ের পাশাপাশি আমি ব্যাটিং নিয়েও ভাবি। কিভাবে ব্যাটিংয়ের উন্নতি করা যায় সেটা নিয়েও কাজ করছি। এ ম্যাচেও আরও বেশি উইকেট পাওয়া আমার লক্ষ ছিল।’

তার মানে চোখ তো জাতীয় দলে? সোহাগ গাজী বলেন, ‘হ্যাঁ, আল্টিমেটলি আমি আবারও জাতীয় দলেই ফিরতে চাই। আর সেটা ঘরোয়া ক্রিকেটে পারফর্ম করেই। এখনও দেশকে অনেক কিছু দেয়ার বাকি আছে।’

২০১২ সালে জাতীয় লিগে বরিশালের হয়ে পারফর্ম করেই জাতীয় দলে ডাক পেয়েছিলেন সোহাগ গাজী। জাতীয় লিগে সে মৌসুমে খুলনাতেই খুলনার বিপক্ষে একই ম্যাচে হ্যাটট্রিকসহ ৭ উইকেট আবার ব্যাটিংয়েও সেঞ্চুরি ছিল। মাঠে বসেই খেলা দেখেছিলেন জাতীয় দলের নির্বাচক হাবিবুল বাশার। এরপরেই জাতীয় দলে ডাক পড়ে খুলনার। আবার খুলনাতেই সেঞ্চুরি। খুলনা কি তাহলে সোহাগ গাজীর জন্য লাকি ভেন্যু?

হেসে জবাব দিলেন, ‘অনেকটা তাই। বাবার চাকরির সুবাদে আমার ছোটবেলা কেটেছে খুলনায়। খুলনায় আমি অনেক ভালো ইনিংস খেলেছি। আমার ওয়ানডে অভিষেকও এই মাঠে। সব মিলিয়ে এ মাঠে খেলতে নামলে একটু বাড়তি কনফিডেন্স তো চলেই আসে।’
৬ অক্টোবর,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এআর

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে