বৃহস্পতিবার, ০৬ অক্টোবর, ২০১৬, ১১:৫৭:৫১

সংসদে প্রধানমন্ত্রীর প্রশ্ন: সবাই দাঁড়িয়ে ভিডিও করলো, মেয়েটিকে বাঁচাতে কেউ এগিয়ে গেলো না কেন?

সংসদে প্রধানমন্ত্রীর প্রশ্ন: সবাই দাঁড়িয়ে ভিডিও করলো, মেয়েটিকে বাঁচাতে কেউ এগিয়ে গেলো না কেন?

নিউজ ডেস্ক: সিলেটের কলেজছাত্রী খাদিজা আক্তার নার্গিসকে কুপিয়ে আহত করার ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘সিলেটে একটি মেয়েকে কিভাবে কোপানো হলো! আমার অবাক লাগলো, যখন ছবিটা দেখলাম, নার্গিস কোপানো হচ্ছে। মানুষ দাঁড়িয়ে দেখছে, ভিডিও তুলছে।

তারা কি একজোট হয়ে ওই লোকটিকে ধাওয়া দিতে পারতো না? তারা কি ওই মেয়েটিকে রক্ষা করতে যেতে পারতো না? কেন মানবিক মূল্যবোধগুলো হারিয়ে গেল? কেন কেউ সেখানে গেল না এই মেয়েটিকে বাঁচাতে? সেটাই আমার প্রশ্ন।’ বৃহস্পতিবার দশম জাতীয় সংসদের দ্বাদশ অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একটা লোক কোপাচ্ছে আর এতগুলো লোক দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছে, তাদের হাতে কি কিছু ছিল না?’ এ ঘটনায় পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরের প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, ‘এখন বড় বড় পত্রিকায় আসছে অমুক দল করে, তমুক দল করে। এখানে কোনও দলীয় কোন্দল ছিল না বা দল হিসেবে কেউ ‍মারতে যায়নি। কেন মারতে গেছে সেটা তো পত্রিকায় এসেছে। সে প্রেম নিবেদন করেছে, মেয়েটি প্রত্যাখ্যান করেছে। সেই জন্য হত্যা করতে গেছে। কিন্তু সেই জন্য কি একটা মানুষকে হত্যা করতে হবে?’

শেখ হাসিনা বলেন,  ‘পত্রিকা ও কিছু লোক বিষয়টিকে দলীয় হিসেবে প্রচার করার চেষ্টা করছে। দলীয় হিসেবে আমরা তো তাদের প্রশ্রয় দিচ্ছি না।যেই অপরাধ করুক, সে শাস্তি পাবেই। শাস্তি তাকে পেতেই হবে। দেশবাসীকে বলতে পারি, কে, কোন দল করে, আমি সেটা দেখি না। দেখবও না। যে অপরাধী সে অপরাধীই। অপরাধীর বিচার হবেই।’

এ বিষয়ে বিএনপি নেতাদের বক্তব্যের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এখন বিএনপির অনেক নেতা অনেক প্রশ্ন করছেন। কিন্তু তারা যখন জীবন্ত মানুষের গায়ে পেট্রোল ঢেলে দিয়ে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মাররেন, বাস থেকে চালককে টেনে বের করে তার গায়ে আগুন দিয়ে তামাশা দেখলেন, পুলিশকে ক্ষতবিক্ষত করে তাকে হত্যা করলেন, সে কথাটি তারা ভুলে যাচ্ছেন। এভাবে প্রকাশ্যে মানুষ হত্যা করা এই বিএনপিই শিখিয়েছে। এই বিএনপি-জামায়াতই তো নৃশংসতা করে করে পথ দেখিয়েছে। এভাবে তারা মানুষের ভেতরে পশুত্বের জন্ম দিয়েছে।’

সম্প্রতিক জঙ্গি ও সন্ত্রাসী ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে আমরা কঠোর অবস্থান নিয়েছি। যারা এর সঙ্গে জড়িত, তাদের বিচার হচ্ছে এবং হবে।’

সবাইকে ধর্মীয় সম্প্রতি বজায় রাখার আহ্বান জানিয়ে সংসদ নেতা বলেন, ‘ধর্ম যার যার, উৎসব সবার। আগামীতে যেসব উৎসব হবে, তা সবাই পালন করবে। কেউ কারও যেন ক্ষতি করতে না পারে, সেভাবে লক্ষ রাখবেন।’

দেশের উন্নয়নে বিভিন্ন সেক্টরে গৃহীত পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা প্রতিটি ক্ষেত্রে উন্নতি করেছি। এখন আমাদের হাতে সময় খুবই কম। নির্বাচন কাছে। আর ‍দুই বছর দুই মাস মাত্র সময় আমাদের হাতে আছে। কিন্তু এর মাঝেও আমাদের চেষ্টা থাকবে আমরা দারিদ্র্যের হার আরও কমাব। যেন বাংলাদেশ একটি দারিদ্র্যমুক্ত দেশ হতে পারে। দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশ হবে দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত ও শান্তিপূর্ণ দেশ। ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করব।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা দেশকে এগিয়ে নিচ্ছি। দেশ অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে। বিশ্বের অনেক আন্তর্জাতিক সংস্থা এটা স্বীকার করতে বাধ্য হচ্ছে। বিশ্বের কাছে আজকে বাংলাদেশ একটা মহাবিস্ময়। আমরা যেখানেই যাই, সবাই জিজ্ঞাসা করে আপনাদের অর্থনৈতিক উন্নয়নের ম্যাজিকটা কী? জবাবে বলি ম্যাজিক কিছুই না, ম্যাজিক হচ্ছে একটাই আমাদের আন্তরিকতা দেশপ্রেম ও মানুষের প্রতি ভালোবাসা। আন্তরিকতা নিয়ে নিঃস্বার্থভাবে কাজ করছি বলেই এই উন্নতি সম্ভব হয়েছে।’-বাংলা ট্রিবিউন
০৬ অক্টোবর,২০১৬/এমটি নিউজ২৪ ডটকম/এ পি/ডিসি

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে