স্পোর্টস ডেস্ক : ক্রিকেটে বল কখন ‘পাখি’ হয়? পাখি না হলেও এমনই মনে হয় সেরা মূহুর্তে। ক্রিস গেইল কিংবা শহীদ আফ্রিদিরা যখন উড়িয়ে মারেন! বল উড়িয়ে মারতে ব্যাটসম্যানের অভাব নেই টি-টোয়েন্টির এ যুগে। ব্যাটসম্যানদের ধ্রুপদি কিংবা গা-জোয়ারি শটে কত ছক্কাই তো দেখা যায়। সাতটি বিশাল ছক্কায় বল হারানোর ঘটনা জেনে নিন এ রচনায়।
ব্রডের ‘কান্না’
ক্যারিয়ারে সুখের অনেক স্মৃতি থাকলেও স্টুয়ার্ট ব্রডের এখনো বোধ হয় দুঃস্বপ্ন হয়ে হানা দেয় যুবরাজের সেই ছয় ছক্কা! ২০০৭ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ডারবানে ‘রাজা’ হিসেবেই আবির্ভাব হয়েছিলেন যুবরাজ। ১৯তম ওভারে তরুণ ইংলিশ পেসারের ওপর যেভাবে হামলে পড়লেন, ব্রড যেন পালিয়ে বাঁচেন। প্রথম বলটাই কাউ কর্নার দিয়ে মারলেন উড়িয়ে। বল কোথায় যে পড়ল, টিভি ক্যামেরা ধরতেই পারল না। তবে জানাল, ১১১ গজি ছক্কা হাঁকিয়েছেন যুবরাজ। যে বল খুঁজেই পাওয়া গেল না, সেটা আবার পরিমাপ করা হলো কীভাবে? আশ্চর্য!
বল স্কুলের ছাদে!
২০০৯ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ওভালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সামনে ১৭০ রানের লক্ষ্য দিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। পঞ্চম ওভারে বোলিংয়ে এলেন ব্রেট লি। যথারীতি সংহার রূপে ক্রিস গেইল। দু-দুবার চালালেন সপাটে। বল সীমানা নয়, গ্যালারির বাইরে। যাকে বলে ‘ভায়োলেন্ট সিক্স’! ক্রিকইনফোর ধারাবিবরণীতে লেখা হলো, ‘স্টেডিয়ামের পাশে স্কুলের বাচ্চারা চমকে ওঠো না। বলটা ছাদেই পড়েছে...’!
ধ্রুপদি ছক্কা
অফস্টাম্পের বাইরের বল। খানিকটা জায়গা করে নিয়ে দুর্দান্ত এক পুল। বল উড়ে গেল গ্যালারির বাইরে! ২০০৩ বিশ্বকাপে ডারবানে অ্যান্ড্রু ক্যাডিককে এভাবেই উড়িয়ে মেরেছিলেন শচীন টেন্ডুলকার। কেবল গা জোয়ারি শট নয়, অসাধারণ টাইমিং আর সূক্ষ্ম ক্রিকেটীয় জ্ঞানেও বিশাল ছক্কা মারা যায়, টেন্ডুলকার বুঝিয়েছিলেন।
হেলিকপ্টার শটে পার
হেলিকপ্টার ওড়ে আকাশে। মহেন্দ্র সিং ধোনিও যেন চান হেলিকপ্টার শটে বলকে উড়িয়ে মারতে। ২০১৩ সালের নভেম্বরে বেঙ্গালুরুর চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে রোহিত শর্মার ডাবল সেঞ্চুরির দিনে অস্ট্রেলীয় পেসার জেমস ফকনারের করা ৪৮তম ওভারের পঞ্চম বলটা গ্যালারি পার করলেন প্রিয় হেলিকপ্টার শটেই!
‘বুম-বুম’ আফ্রিদি
তখনও ‘বুম-বুম’ তকমাটা লাগেনি গায়ে। তবে ছক্কা মারতে পারঙ্গম ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই। ১৯৯৭-এর সেপ্টেম্বরে টরন্টোয় ইনিংসের পঞ্চম ওভারে আবে কুরিবিল্লাকে সোজা আছড়ে ফেললেন গ্যালারির বাইরে। খেলা চালাতে হলো নতুন বলে। ২৫০ রান তাড়া করতে নেমে পাকিস্তান ম্যাচটা জিতেছিল ৫ উইকেট হাতে রেখেই।
টেলরের ‘পাওয়ার’
গত ফেব্রুয়ারিতে ন্যাপিয়ারে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে বিলওয়াল ভাট্টির করা ৪৩তম ওভারের পঞ্চম বলটা যেভাবে মিডউইকেটের ওপর দিয়ে হাঁকালেন রস টেলর, যেন কামান থেকে গোলা উড়ে পড়ল দূরে কোথাও! গ্যালারির ছাদে কয়েক বাউন্সে বল স্টেডিয়ামের বাইরে। অবাক চোখে বল উড়ে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকলেন ভাট্টি।
স্মরণীয় ছয়
জাস্টিন কেম্প বলতেই পারেন, ‘আমাকে ভুলতে পারেন, তবে আমার ছক্কা নয়!’ ২০০৫-এর অক্টোবরে পোর্ট এলিজাবেথে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে শেষ ওভারে ৯ রানের দরকার ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার। প্রথম বলেই লং-অন দিয়ে শেন বন্ডকে গ্যালারি ছাড়া করলেন কেম্প! পরের বলে চার। ম্যাচ প্রোটিয়াদের পকেটে।-প্রথম আলো
৬ অক্টোবর ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/হাবিব/এইচআর