সোমবার, ২৪ অক্টোবর, ২০১৬, ১২:২৫:১৮

বাংলাদেশ-ইংল্যান্ডের লড়াই নিয়ে যা লিখলেন ক্রিকেটার এনামুল

বাংলাদেশ-ইংল্যান্ডের লড়াই নিয়ে যা লিখলেন ক্রিকেটার এনামুল

এনামুল হক জুনিয়র, ঢাকা: এমন লড়াই আমি কল্পনাও করিনি। সত্যি বলছি, এই ম্যাচে এমন লড়াই আমি কল্পনাও করিনি।

ইংল্যান্ড যখন ২৮৬ রানের টার্গেট দিলো, আমি ভেবেছিলাম, অন্তত এক শ রানের ব্যবধানে হারবে। সেই ম্যাচে ২২ রানে ব্যবধান নামিয়ে আসাটাই তো বিরাট একটা ব্যাপার। মুশফিক, আগে ইমরুল এবং শেষ অবদি সাব্বির যে ক্রিকেট খেলেছে, তাতে আমি মুগ্ধ।

অনেকেই বলছেন, এই ম্যাচে জয়-পরাজয়ের চেয়ে অনেক বড় হয়েছে ক্রিকেটের জয়। বাংলাদেশ দল এখন বিশ্বের একটা সেরা দল ইংল্যান্ডকে যে লড়াই উপহার দিয়েছে, সেটা জয়ের সমতূল্য। এ ব্যাপারে আমারও দ্বিমত নেই। আমরা যে লড়াই করেছি, তাতে অনেকেরই হৃদয় জয় করে ফেলতে পেরেছি আমরা।

কিন্তু একজন সমর্থক হিসেবে যদি বলি, আমি এবার একটা জয় চাই।

বাংলাদেশ দল এখন আর কেবল এই লড়াই করে, বিশ্বকে চমকে দিয়ে থেমে থাকার জায়গায় নেই। এখন আমাদের ঝাকে ঝাকে অসাধারণ প্রতিভাধর খেলোয়াড় উঠে আসছে। সিস্টেম একটু একটু করে ভালো হচ্ছে। ওয়ানডেতে আমরা পরাশক্তি হয়ে উঠছি। এ অবস্থায় কেবল মন জয় করলে চলবে না, ম্যাচ জিততে হবে।

আমি জানি, সে ক্ষেত্রে প্রধাণ বাধা হলো টেস্ট ক্রিকেট, এমনকি প্রথম শ্রেনীর ক্রিকেটও নিয়মিত না খেলা। বাংলাদেশ ১৪ মাস পর টেস্ট খেলছে; এটা খুব বাজে একটা ব্যাপার। একটা টেস্ট খেলুড়ে দল এভাবে বিরতিতে থাকতে পারে না। টেস্ট খেলাটা একটা অভ্যাসের ব্যাপার।

আমাদের প্রথম শ্রেনীর ক্রিকেট যেমনই হোক, জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা সেখানেও খুব একটা খেলার সময় পায় না। টেস্ট খেলোয়াড়দের প্রস্তুত রাখার জন্য এর বাইরেও তেমন লংগার ভার্শনের খেলা ‘এ’ দল বা অ্যাকাডেমি দলের জন্য আয়োজন করা হয় না। ফলে একেবারেই প্রস্তুতি ছাড়া বিভিন্ন সময় টেস্ট খেলতে নামতে হয়।

এই সমস্যাগুলো দেখা দায় বোর্ডের। আমরা চাই এই সমস্যাগুলো দূর করে আমাদেরকে এই কাছে গিয়ে তরী ডোবার কষ্টের হাত থেকে মুক্তি দেবেন সকলে। ফতুল্লা, মুলতান, চট্টগ্রাম; অনেকবার এমন কষ্টে পুড়লাম আমরা। তাতে বাইরের লোক হয়তো বাহবা দেবে। কিন্তু আমরা এই কষ্টের চক্র থেকে বের হতেই পারছি না।

একেবারে শেষ দিকের ম্যাচ বিশ্লেষন যদি করি, তাহলে দেখবো যে, আসলে গতকাল যখন ৩৩ রান বাকী থাকতে স্ট্যাম্পস হয়ে গেলো, তখনই আসলে এই ম্যাচে আশা করার আর কিছু ছিলো না। একমাত্র আশা করা যেতো যে, সাব্বির আরও আরও সেন্সেবেল ক্রিকেট খেলবে।

এই ছেলেটার অভিষেক হলো মাত্র। ও প্রথম শ্রেনীর ক্রিকেটও বেশী খেলেনি। ফলে এমন সিচুয়েশন ওর জন্য নতুন। তাই যেটা করা যেত, সেটা হয়তো ও ঠিক বুঝে উঠতে পারেনি। এখানে টেইলটা কম এক্সপোজ করে খেলে গেলে একটা শেষ চান্স ছিলো হয়তো। ওকে নিজের হাতে বেশী স্ট্রাইক রাখতে হতো। যাই হোক, এই দোষ দেওয়ার কোনো অর্থ নেই। ও যে অসাধারণ ক্রিকেট খেলে ম্যাচটাকে এখানে নিয়ে এসেছে, সে জন্য অন্তত ধন্যবাদ পাবে।

এই ম্যাচে একটা ব্যাপার খুব বাজে হয়ে রইলো-আম্পায়ারিং। আমি বুঝি, উইকেটের ক্যারেক্টার আম্পায়ারদের অসহায় করে ফেলেছিলো। উইকেট খুব আনপ্রেডিক্টেবেল ছিলো। ফলে আম্পায়াররা একদমই আপ টু দ্য মার্ক থাকতে পারেননি। ২৬টা রিভিউ ও এক গাদা ওভারটার্ন নিশ্চয়ই তাদের দুর্বলতা প্রকাশ করেছে। শেষ দিকে আমাদের দুটো উইকেটের একটা আমার কাছে আপত্তিকরই মনে হয়েছে।

তবে শেষ বিচারে এটাই খেলা। সেই খেলায় আবারও বলি, আমরা হৃদয় জিতেছি। এবার ম্যাচ জিততে হবে। ঢাকাতেই হোক সেই জয়।-খেলাধুলা
২৪ অক্টোবর ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/হাবিব/এইচআর

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে