শনিবার, ১২ নভেম্বর, ২০১৬, ১১:৪৫:৩০

গরিব বাবার অনেক কষ্টের ধন আজকের চেতেশ্বর পূজারা

গরিব বাবার অনেক কষ্টের ধন আজকের চেতেশ্বর পূজারা

স্পোর্টস ডেস্ক : তার বাবা অরবিন্দ পুজারার কাহিনী শুনলে আবেগতাড়িত না হয়ে আপনার উপায় নেই। ভারতের ক্রিকেট ইতিহাসে ছোটখাটো, অথচ খুব গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য সৌরাষ্টের হয়ে ৭০ এর দশকে তিনি ছয়টি রনজি ট্রফির ম্যাচ খেলেছিলেন। খেলোয়াড়ী জীবনটা খুব বড় ছিলো না। এরপর সাধারণ একটা চাকরি।

চাকরি করতেন রেলের কেরানী হিসেবে। সামান্য বেতন, তাতে সংসার চালানোই কষ্ট। কিন্তু ঐ অল্প বেতনের টাকার বড় অংশ খরচ করতেন বাচ্চা ছেলেদের খেলা শেখানোর জন্য। রেলওয়ের মাঠের একদিকে পরিত্যাক্ত পিচে তিনি তাদের নিয়ে প্র্যাকটিস করতেন এবং তাদের বল ব্যাট কিনে দিতেন।

অরবিন্দ স্বপন দেখতেন এই ছেলেগুলোকে তিনি ক্রিকেটার বানাবেন এবং মজার ব্যাপার তার নিজের ছোট্ট ছেলেটিই চার বছর বয়স থেকে ক্রিকেট ব্যাটের প্রেমে পরলো। সকালে কাজে যাবার আগে আর বিকালে কাজ সেরে তাই বাবা তাকে বল করতো; আর ছেলে ব্যাট। প্রচন্ড অভাবের মাঝেও তার এই এক ধ্যান জ্ঞান।

কপাল ভালো রীনার মতো একজন ভালো স্ত্রী তার ছিলো যিনি তাকে সাহায্য করেন এই পাগলামিতে।

অন্য যেসব ধনীর ছেলেরা একাডেমীতে অনেক টাকা খরচ করে সুযোগ সুবিধা পায়, অরবিন্দ তার কিছুই দিতে না পারলেও বাপ আর ছেলের খেলার প্রতি ভালবাসা আর জেদ তাদের দমাতে পারেনি। দিনের পর দিন বাপ আর ছেলের সে কি নিরন্তর সাধনা! সেই শিশুটি হয়ে উঠে দুর্দান্ত এক ব্যাটস্ম্যান-চেতেশ্বর পুজারা

তার প্রথম শ্রেণীর অভিষেক হয় ১৭ বছর বয়সে আর সেই বছরই তার মা মারা যান। ভালো খেলার ফল হিসেবে তার পাচ বছর পর ভারতের জাতীয় দলে অভিষেক হয়। ছোটবেলা থেকে নিখুত ব্যাটিং এর পুজারী হলেও সেই খেলার প্রথম ইনিংসের তৃতীয় বলেই অস্ট্রেলিয়ার মিচেল জনসনের বলে এলবিডব্লিউ হন চার রান করে। কিন্তু চতুর্থ ইনিংসে ২০৭ রানের একটা ট্রিকি রান চেস করতে গিয়ে ঝলমলে ৭২ রানের এক ইনিংস খেলেন। এই ইনিংস দেখে সেই ম্যাচের ম্যান অব দি ম্যাচ শচীন টেন্ডুলকার খুশী হয়ে তাকে উপহার দেন।

সেই ম্যাচে ছেলের খেলা দেখতে অরবিন্দ মাঠে যাননি। স্বপ্নপূরণের ঐ দিনে তিনি তার প্রয়াত স্ত্রীকে স্মরণ করেন এবং বাড়ি বসে প্রার্থনা করেন। ভারত-ইংলান্ড সিরিজ নিয়ে আমার তেমন একটা আকর্ষণ নেই। আজকে অন্য কাজে ব্যস্ত থাকায় একটি বলও দেখা হয়নি। কিন্তু যখন বাসায় দেখলাম অরবিন্দ পুজারার সেই ছেলে, চেতেশ্বর পুজারা, সম্ভবত ভারতীয় দলের সবচেয়ে টেকনিকালি কারেক্ট ব্যাটসম্যান, সেঞ্চুরি করেছে, তখন মনটা ভালো লাগলো।

ভারতীয় দলকে ভীষণ অপছন্দ করি, কিন্ত চেতেশ্বর এর প্রতি একটা আবেগ কাজ করে। যেরকম কাজ করে ইংল্যান্ডের জনি বেয়ারস্টোর প্রতি। সেই গল্প অবশ্য আগেই বলেছিলাম, বাংলাদেশের সাথে তাদের সিরিজ চলাকালে।-খেলাধুলা
১২ অক্টোবর ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/হাবিব/এইচআর

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে