সোমবার, ২৮ নভেম্বর, ২০১৬, ০৬:০৭:০৭

বাবা-ছেলের এই আবেগময় গল্পটা শুনুন

বাবা-ছেলের এই আবেগময় গল্পটা শুনুন

স্পোর্টস ডেস্ক: এ যেন রুটিন হয়ে উঠেছিল। প্রত্যেক শনিবার নিকো রসবার্গের মোবাইল টিটটিট করে বেজে উঠে থেমে যেত। গ্রাঁ প্রিঁর প্রতিটা রেসের আগে বাবা কেকের কাছ থেকে একটা করে মেসেজ পেতেন নিকো। এ শুধু পুত্রের প্রতি পিতার নির্দেশ বয়ে আনা মেসেজ নয়। এ ছিল সাবেক ফর্মুলা ওয়ান চ্যাম্পিয়নের কাছ থেকে পাওয়া সংক্ষিপ্ত কিন্তু খুবই জরুরি কিছু টিপস! কেকে ​রসবার্গ যে ১৯৮২ সালে জিতেছিলেন এই বহু আরাধ্যের ট্রফি। নিকোর বয়স তখন মাত্র তিন বছর।

সেই নিকো গতকাল নিশ্চিত করেছেন ২০১৬ ফর্মুলা ওয়ান বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপের মুকুট। বাবার পর এই প্রথম কোনো পুত্র ফর্মুলা ওয়ান জিতলেন। এর আগে যে কীর্তি ছিল গ্রাহাম ও ড্যামন হিলের। বিরল কীর্তিতে এভাবেই ব্র্যাকেট-বন্দী হলেন কেকে ও নিকো রসবার্গ।

কেকের জন্য কালকের দিনটা ছিল আরও বেশি আবেগের। ১৯৯৬ সালে যখন ড্যামন বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হন, তার বহু আগেই এক বিমান দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছিলেন বাবা গ্রাহাম। ইতিহাসে তাঁদের কীর্তিটা দ্বিতীয় হলেও এই প্রথম বাবা নিজে সামনে থেকে দেখলেন পুত্রের জয়। কেকে তাই রসিকতা করলেন, ‘আমি একমাত্র জীবিত থেকে এই কীর্তি দেখেছি। শুধু আমি একাই।’

ছেলের রেস অবশ্য সরাসরি দেখেননি। দুবাইয়ে এক বন্ধুর বাসায় বসে দেখেছেন টিভিতে। জয় নিশ্চিত হওয়ার পর এসে যোগ ​দিয়েছেন মার্সিডিজ দলের বিজয়-উৎ​সবে। কেকে আরও একটি কাজ খুবই সতর্কভাবে করে এসেছেন গত ছয় বছর। পুত্র যখন ধীরে ধীরে সাফল্যচূড়ার দিকে এগোচ্ছিল, সচেতনভাবেই সব সাক্ষাৎ​কার এড়িয়ে গেছেন। হয়তো জানতেন, অনিবার্যভাবে তাঁর বিজয়ের কথা আসবে। আর তাতে ছেলের ওপর অকারণ একটা চাপ জন্ম নেবে।
দুবাইয়েও দুজনের দেখা হয়েছে নাকি ৪৫ সেকেন্ডের জন্য। কেকের কথা একটাই, ‘ওর সঙ্গে তো আমার কথা বলার কোনো প্রয়োজন ছিল না। ও জানে এটা আমাদের পারিবারিক খেলা। ও ভালো করেই জানে, এটা আমার জন্য আর ওর জন্য কত বিরাট একটা ব্যাপার।’

এমনিতে পিতা-পুত্রের এই দুই জয়ের মধ্যে মিলের চেয়ে অমিলই বেশি। সবচেয়ে বড় অমিল, কেকে ফিনল্যান্ডের পতাকা নিয়ে লড়েছেন, নিকো মা ও তাঁর জন্মভূমি জার্মানিকে বেছে নিয়েছেন। তবে সবচেয়ে বড় মিল বোধ হয়, দুজনই শেষটা টেনে দিয়েছেন মরুপ্রান্তরের ট্র্যাকে। আর নিকোও ভালো করে জানতেন, বাবা তাঁর চোখের সামনে না থাকলেও বাবার চোখের সামনে প্রতিটা মুহূর্তেই আছেন তিনি।

এ কারণে জয়ের পর টুইটারে যে ছবিগুলো দিয়েছেন, এর প্রতিটাতেই আছে বাবা-ছেলের আবেগময় এক গল্প। সেই শৈশবে, শখের গো-কার্ট রেসিংয়ে ছোট গাড়ি দিয়ে খুদে রেসার নিকো ট্র্যাকে ঝড় তুলছেন। আর সেটার পুরো দেখভাল করছেন বাবা নিজে। রেসে নামার ছোট্ট নিকোর মাথায় যত্ন করে হেলমেট বেঁধে দিচ্ছেন কেকে।-প্রথমআলো
 ২৮ নভেম্বর ২০১৬/এমটিনিউজ২৪ডটকম/টি.জে

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে