স্পোর্টস ডেস্ক: গতবারের মত সংযুক্ত আরব আমিরাতের শুষ্ক পিচে হোয়াইটওয়াশের হাত থেকে রেহাই পেতে হলে এবারও স্বাগতিক পাকিস্তানের নবরূপের কঠিন স্পিন বোলং।
সংযুক্ত আরব আমিরাতে সর্বশেষ ২০১২ সালে দুই দলের মোকাবেলায় দুই স্পিনার সাঈদ আজমল (২৪ উইকেট) এবং আব্দুল রেহমানের (১৯ উইকেট) বদৌলতে পাকিস্তানের কাছে তিন টেস্টের সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হয়েছিল তৎকালীন টেস্ট র্যাংকিংয়ের শীর্ষ দল ইংল্যান্ড।
মঙ্গলবার দল দু’টি আবুধাবিতে তিন টেস্টের সিরিজ শুরু করতে যাচ্ছে । তাই আজমল ও বাবরের পরিবর্তে দলে সুযোগ পাওয়া দুই লেগ স্পিনার ইয়াসির শাহ এবং জুলফিকার বাবরের একই ধরনের অস্ত্রের উপর নির্ভর করবে পাকিস্তান।
ইংল্যান্ড অধিনায়ক এলিস্টার কুক তার দলের কঠিন চ্যালেঞ্জের কথা স্বীকার করেন।
২০১২ সালের সিরিজে অংশ নেয়া চার জনের একজন কুক বলেন, ‘আমি জানি তারা ছয় অথবা সাতটি টেস্ট সিরিজ খেলেছে এবং যার মধ্যে একটিতেও হারেনি। এ থেকেই বোঝা যায় আমাদের সামনে কি অপেক্ষা করছে। টেস্ট ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে বিদেশের মাটিতে জয় লাভ করা। এটা কঠিন থেকে কঠিনতর ব্যাপার।’
২০১২ সালেই বোলিং এ্যাকশন নিয়ে বিতর্ক ওঠা আজমল গত বছর নিষিদ্ধ হন। তারপর পরীক্ষা দিয়ে মুক্তি পেলেও আজমলের নতুন বোলিং এ্যাকশন উইকেট শিকারের কার্যকারিতা হারিয়ে ফেলায় আজমলের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারই এখন হুমকির সম্মুখে। ’
কুক বলেন, ‘যাই হোক আজমলের অনুপস্থিতিতে তাদের দল দুর্বল কিংবা শক্তিশালী হয়েছে বলে আমি মনে করি না। আপনি যখন পাকিস্তান, ভারত অথবা শ্রীলংকার বিপক্ষে খেলবেন সব সময়ই স্পিনের একটা ভূমিকা থাকে।
পাকিস্তান অধিনায়ক মিসবাহ উল হকের দৃঢ় বিশ্বাস শাহ শূন্য স্থান পূরণ করবেন। গত বছর আবুধাবিতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে এবং তিন মাস আগে শ্রীলংকা সফরে সিরিজ জয়ে শাহ যেমনি মুখ্য ভূমিকা পালন করেছেন এবার ইংল্যান্ডের বিপক্ষেও তিনি একই ভূমিকা পালন করবে বলে আত্মবিশ্বাসী মিসবাহ।
ইংল্যান্ডে সিরিজের পরই অবসর নিতে যাওয়ার পথে থাকা মিসবাহ বলেন, ‘ইয়াসির যেভাবে বোলিং করছে তাতে সে যে কোন দলের জন্যই হুমকি। একই সঙ্গে বিষয়টি আমাদের ফাস্ট বোলারদের জন্যও এবং তাদের স্পিনের বিপক্ষে আমাদের ব্যাটিংয়ের ধরন।’
শাহর ভিন্ন ধর্মী চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে স্বীকার করেন কুক।
ইংলিশ অধিনায়ক বলেন, ‘অসাধারনভাবে তিনি তার টেস্ট ক্যারিয়ার শুরু করেছেন। দশ টেস্টে ৬০ উইকেট অনেক বড় অর্জন এবং অবশ্যই আজমলও একই ধরনের বড় মাপের বোলার ছিলেন।’
গত এক বছরে দারুন ফর্মে থাকা ইউনিস খান, মিসবাহ এবং সরফরাজ আহমেদকে নিয়েই আবর্তিত হবে পাকিস্তানের ব্যাটিং লাইন-আপ।
গত বছর অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৪৬৮ রানের পর পাকিস্তানের সর্বশেষ শ্রীলংকায় জয়ী টেস্ট সিরিজে ম্যাচ জয়ী অপরাজিত ১৭১ রান করেন ইউনিস। ফলে টেস্ট ক্রিকেটে পাকিস্তানের সর্বোচ্চ ৮,৮৩২ রান করা জাভেদ মিঁয়াদাদের চেয়ে মাত্র ১৮ রানে পিছিয়ে আছেন এ তারকা ব্যাটসম্যান।
তবে পাকিস্তানের জন্য দুঃসংবাদ ইনজুরির কারণে নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছেন দলের অন্যতম ব্যাটসম্যান আজহার আলী। পায়ের ইনজুরি থেকে এখনো পুরোপুরি সুস্থ হয়ে ওঠেননি তিনি। একই ইনজুরির কারণে গত সপ্তাহে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডে ম্যাচেও খেরতে পারেননি আজহার।
তার পরিবর্তে সুযোগ পেতে পারেন পাঁচ বছর টেস্ট না খেলা শোয়েব মালিক।
নিরাপত্তা শংকার কারণে সংযুক্ত আরব আমিরাতে হোম সিরিজ খেলতে বাধ্য হচ্ছে পাকিস্তান। তবে এখানে কোন সিরিজে পারেনি তারা। মোট সাত সিরিজের চারটিতে জয়ী হয়েছে এবং তিনটিতে ড্র করেছে।
পাকিস্তানের স্পিন চ্যালেঞ্জের উত্তর হতে পারে টেস্ট অভিষেক হতে যাওয়া আদিল রশিদ। ওয়ানডে অভিষেক হওয়ার ছয় বছর পর টেস্ট অভিষেক ঘটতে যাচ্ছে রশিদের।
প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে কখনো না করলেও কুকের সঙ্গে ওপেনার হিসেবে মাঠে নামতে পারেন মঈন আলী। একই সঙ্গে স্পিনার হিসেবে বাড়তি দায়িত্বও পালন করতে হবে তাকে।
তেমনটা ঘটলে ২০১২ সালে এন্ড্রু স্ট্রস অবসর নেয়ার পর আলী হবে কুকের সপ্তম ওপেনিং পার্টনার।
মানসম্মত স্পিনের বিপক্ষে পরীক্ষা মিলবে ব্যাট হাতে ইংল্যান্ডের সেরা পারফর্মার জো রুট এবং বেন স্টোকসের।
দল (সম্ভাব্য):
পাকিস্তান: মিসবাহ উল হক (অধিনায়ক), আহমেদ শেহজাদ, শান মাসুদ, আজহার আলী, মোহাম্মদ হাফিজ, ফওয়াদ আলম, আসাদ শফিক, ইউনিস খান, শোয়েব মালিক, সরফরাজ আহমেদ, ইয়াসির শাহ, জুলফিকার বাবর, ওয়াহাব রিয়াজ, ইমরান খান, রাহাত আলী, জুনাইদ খান।
ইংল্যান্ড: এলিস্টার কুক (অধিনায়ক), মঈন আলী, জেমস এন্ডারসন, সামিত প্যাটেল, জনি বেয়ারস্টো, ইয়ান বেল, স্টুয়ার্ট ব্রড, জস বাটলার, স্টিভেন ফিন, এ্যালেক্স হেলস, লিয়াম প্লানকেট, আদিল রশিদ. জো রুট, বেন স্টোকস, জেমস টেইলর, মার্ক উড। বাসস
১১ অক্টোবর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/রাসেল/মাহমুদ