স্পোর্টস ডেস্ক: অস্ট্রেলিয়া তাদের নির্ধারিত সিরিজটি বাতিল করায় এবারের ঘরোয়া আসরে জাতীয় দলের খেলোয়াড়রাও খেলছেন। তবে মাঝে মাঝে বৃষ্টির হানায় ম্যাচের হিসাব নিকাশ অনেক সময় পাল্টে যাচ্ছে। আর সেকারণেই হয়তো প্রথম ম্যাচে তামিম আউট হয়েছিলেন মাত্র ১৩ রানে। এক মৌসুম পর জাতীয় লিগে ফেরা তামিম পরের ম্যাচেও নিজেকে চেনাতে পারেন নি। দুই ইনিংসে করলেন মাত্র ০ ও ৪। সর্বশেষ নয়টি প্রথম শ্রেণির ইনিংসে মাত্র একবার ৫০ ছাড়ানো এই বাঁহাতি অবশেষে নিজেকে ফিরে পেলেন তৃতীয় ম্যাচে। বরিশালের বিপক্ষে প্রথম দিন শেষে ৯০ রানে অপরাজিত থাকা তামিম কাল সাতসকালেই তুলে নিলেন সেঞ্চুরি।
.তামিম শেষ পর্যন্ত আউট হয়েছেন ১৩৭ রান করে। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে সেঞ্চুরি পেয়েছেন তামিম-সতীর্থ তাসামুল হকও। ফতুল্লায় সেঞ্চুরি পেয়েছেন ঢাকা মহানগরের ওপেনার শামসুর রহমান। কিন্তু এই ম্যাচেই সেঞ্চুরি থেকে ১১ রান দূরে থেকে দিন শুরু ঢাকা বিভাগের রকিবুল হাসান কাটা পড়েছেন ৯৯ রানে। ২০১০-১১ মৌসুমের পর জাতীয় লিগে এই প্রথম ৯৯ রানে আউট হলেন কেউ। দিনে নড়বড়ে নব্বইয়ের দ্বিতীয় শিকার নাসির হোসেন। খুলনায় ৯৬ রানে আউট হয়েছেন রংপুরের এই ব্যাটসম্যান।
চট্টগ্রামে প্রথম দিনে বৃষ্টিতে খেলা হতে পেরেছিল মাত্র ৫৭.১ ওভার। কালও তিনবার খেলা বন্ধ করেছে বৃষ্টি। তবে আধঘণ্টা আগে শুরু হওয়া দিনে শেষ পর্যন্ত ৯৩.৫ ওভার খেলা হয়েছে। ২ উইকেটে ২০৬ রান নিয়ে দিন শুরু করা চট্টগ্রামের স্কোর দিন শেষে ৭ উইকেটে ৪৪৪। প্রথম শ্রেণির ক্যারিয়ারের ত্রয়োদশ সেঞ্চুরি করা তামিম তৃতীয় উইকেটে ১৫৪ রান যোগ করেছেন তাসামুলকে নিয়ে। তাসামুল তাঁর সপ্তম প্রথম শ্রেণির সেঞ্চুরিটি পেতে ব্যাট করেছেন প্রায় ছয় ঘণ্টা, ২৯২ বল খেলে আউট হয়েছেন ১০৭ রানে। তামিমও ব্যাট করেছেন পাঁচ ঘণ্টার ওপরে।
বগুড়ায় দ্বিতীয় স্তরের অন্য ম্যাচে ৯১ রানে শেষ ৬ উইকেট হারানো সিলেট অলআউট হয়েছে ৩২৮ রানে। প্রথম দিন শেষে ১২৫ রানে অপরাজিত ইমতিয়াজ ফিরেছেন ক্যারিয়ার-সর্বোচ্চ ১৫৪ রান করে। এরপর ৩ উইকেট হারিয়ে রাজশাহী তুলেছে ১৮৩ রান। দ্বিতীয় উইকেটে নাজমুল হোসেন শান্তকে নিয়ে ১৪৩ রান যোগ করা ফরহাদ হোসেন অপরাজিত ছিলেন ৮০ রানে। টানা তৃতীয় ইনিংসে ফিফটি করে আউট হয়েছেন নাজমুল।
ফতুল্লায় দ্বিতীয় দিন শেষে প্রায় সাম্যাবস্থায় আছে দুই ঢাকার ম্যাচ। ঢাকা বিভাগকে ৩২৭ রানে অলআউট করার পর ঢাকা মহানগর ৪ উইকেটে হারিয়ে তুলেছে ২২১। এর অর্ধেকের বেশি ১১৮ রান করে অপরাজিত ওপেনার শামসুর, এটি তাঁর নবম প্রথম শ্রেণির সেঞ্চুরি। প্রথম দুই ম্যাচে ৩৩ রান করা মাহমুদউল্লাহ কাল ফিরেছেন ১০ রানে। অল্পতে ফিরেছেন আগের ম্যাচের জোড়া সেঞ্চুরিয়ান মার্শালও। এর আগে ৬০ রানেই ঢাকা বিভাগের শেষ ৬টি উইকেট তুলে নেয় মহানগর। দলটির বাঁহাতি স্পিনার আরাফাত সানি নিয়েছেন ৬ উইকেট।
খুলনায় ৬ উইকেট নিয়েছেন খুলনার অফ স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজও। আগের ম্যাচে ৬১ রানে ৬ উইকেট নেওয়া বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের অধিনায়ক এবার ৬ উইকেট নিতে খরচ করেছেন ৫০ রান। সিলেটের বাকি ৪টি উইকেট নিয়েছেন অভিজ্ঞ স্পিনার আবদুর রাজ্জাক। যুগল স্পিন আক্রমণে ২২০ রানে অলআউট হলেও প্রথম ইনিংসে ৯ রানের লিড নিয়েছে নাসির হোসেনের রংপুর।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
ঢাকা বিভাগ-ঢাকা মহানগর, ফতুল্লা
ঢাকা বিভাগ: ১১৩.৪ ওভারে ৩২৭ (রকিবুল ৯৯, মজিদ ৬৬, নাদিফ ৩৯; আরাফাত ৬/৯৬)। ঢাকা মহানগর: ৬৬ ওভারে ২২১/৪ (শামসুর ১১৮*, সৈকত ৪৮, মার্শাল ২৪; মোশাররফ ২/৭৩)।
খুলনা-রংপুর, খুলনা
খুলনা: ২১১ ও ১৭ ওভারে ৩০/০ (মেহেদী ১৭*; ইমরুল ১৩*)। রংপুর ১ম ইনিংস: ৯৮.২ ওভারে ২২০ (নাসির ৯৬, নাঈম ৪৪, সোহরাওয়ার্দী ২৪; মিরাজ ৬/৫০, রাজ্জাক ৪/৭৭)।
রাজশাহী-সিলেট, বগুড়া
সিলেট ১ম ইনিংস: ১২৮.৫ ওভারে ৩২৮ (ইমতিয়াজ ১৫৪, রুমান ৮২, এনামুল জু. ২৯; সানজামুল ৪/৭৩, মঈনুল ২/৫৬, শাফাক ২/৭১)। রাজশাহী ১ম ইনিংস: ৪৫.৪ ওভারে ১৮৩/৩ (ফরহাদ হোসেন ৮০*, নাজমুল ৬২; অলক ১/২২)।
চট্টগ্রাম-বরিশাল, চট্টগ্রাম
চট্টগ্রাম ১ম ইনিংস: ১৫১ ওভারে ৪৪৪/৭ (তামিম ১৩৭, তাসামুল ১০৭, নাফিস ৫৬, ইরফান ৪৭; সোহাগ ৩/১১৪, আল আমিন ২/৫৬)।
১২ অক্টোবর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/রাসেল/মাহমুদ