শুক্রবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১০:৩৭:২৩

‘আমি তখন কেবল পাকিস্তান ক্রিকেট টিমে দলভুক্ত হয়েছি’

 ‘আমি তখন কেবল পাকিস্তান ক্রিকেট টিমে দলভুক্ত হয়েছি’

স্পোর্টস ডেস্ক: আমার মুক্তিযুদ্ধটা শুরু হয়েছিল মূলত মার্চ মাসের আগেই, ফেব্রুয়ারির ২৬ তারিখে। আমি তখন ক্রিকেট খেলি। তখন সবেমাত্র ইন্টারমিডিয়েট পাস করেছি। পাকিস্তান টিমে দলভুক্ত হয়েছি। ঢাকায় চারদিনব্যাপী একটা ক্রিকেট টেস্ট ম্যাচ পাকিস্তান বনাম আন্তর্জাতিক একাদশের মধ্যে। সেই ম্যাচে আমি সুযোগ পাই খেলার। তখন আমি তো খুব একটা ছোটও ছিলাম না। জ্ঞান বুদ্ধি হয়েছে, আমি ধরতে পেরেছি ভুট্টো এবং ইহাহিয়ার মধ্যে একটা টালবাহানা চলছে যাতে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করতে না পারে এবং বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় না আনার পাঁয়তারা।

আমি দেখলাম, আমার একট নীরব প্রতিবাদ করার সুযোগ আছে।  সবাইকে যে ব্যাটটা দেওয়া হয়েছিল সেখানে সোর্ড মার্কা সেটে দেওয়া হয়েছিল। যেটা ছিল ভুট্টোর নির্বাচনি মার্কা। আমরা পূর্বাণী হোটেলে উঠলাম। আমার ব্যাটে ওই স্টিকারটা ছিল না। আমার ব্যাটের স্টিকারটা ছিল আড়াআড়ি, হরাইজেন্টাল। তখন রুমে সবাই আসছে আমার সঙ্গে দেখা করতে, শুভেচ্ছা জানাতে। আমার বন্ধু শেখ কামাল, ড. মোস্তাফা জালাল মহিউদ্দিনও আসছে। তখন আমার মাথায় আসল যে, আমি একটা নীরব প্রতিবাদ করব।

আমি সবার সঙ্গে এটা শেয়ার করলাম। শেখ কামালকে বললাম, আমাকে একটা স্টিকার দিতে হবে। বললেন কিসের স্টিকার? তখন স্টিকারগুলো ছিল তিন কোণা। বিশেষ করে গাড়িতে লাগানো হতো। জয় বাংলা লেখা যেখানে একটা লাল সূর্যের মাঝে পূর্ব পাকিস্তান তথা আজকের বাংলাদেশের হলুদ ম্যাপ জোগাড় করলাম। তারপর সেটা আমার ব্যাটের উল্টো দিকে লাগিয়ে মাঠে খেলতে নামলাম। নামার পর এটা নিয়ে বিরাট সাড়া পড়ে যায়।

২৭ ফেব্রুয়ারি তখন বাংলাদেশের সব পেপারে এই ছবিটি ছাপা হয়। আমি এটাই প্রমাণ করতে চেয়েছিলাম যে, ভুট্টো যে টালবাহানা করে মার্কা দিল, আমি আমার জয় বাংলা দিয়ে সেটা প্রতিবাদ করলাম। তবে এর জন্য আমাকে অনেক মূল্য দিতে হয়েছে। কারণ আমাকে শোকজ করা হয়েছিল। জিজ্ঞাস করেছিল এটা কি? আমি বললাম, এটা একটা স্টিকার। তখন কিন্তু মার্শাল ল’ চলছিল। বলল স্টিকারে কি লেখা। আমি বললাম লেখা জয় বাংলা। বলল জয় বাংলার মানে কি? তখন আমি বললাম, ইস্ট পাকিস্তান জিন্দাবাদ।

তারপর সেই উত্তাল মার্চ। কালরাত। ক্যাপ্টেন ইউনুস তার ব্যাটালিয়ান নিয়ে পাকিস্তান থেকে এখানে চলে আসে। সে দিপু ভাইয়ের কাছে বলেছে, রকিবুলকে বলো ঢাকা ছেড়ে দিতে। ওর নামে রিপোর্ট আছে। ওর নামে দেশদ্রোহীর অভিযোগ আছে। ওকে পেলে কিন্তু ধরে নিয়ে মেরে ফেলবে। এটা ছিল ২৭ মার্চ, যখন কারফিউ তুলে নেওয়া হয়েছিল ছয় ঘণ্টার জন্য। তখন আমি খবর পাই যে, শহীদ মোস্তাককে মেরে ফেলছে। শহীদ মোস্তাক ছিল আমার ক্রিকেটের গুরু। তিনি আমাকে হাতে ধরে ক্লাবে আনেন। আর শহীদ জুয়েল আমার সতীর্থ একসঙ্গে ক্রিকেট খেলতাম আমরা।

মোস্তাকের মৃত্যুর খবর পেয়ে আমি গেলাম ডিডিআইসিতে, বর্তমান জেলা ক্রীড়া সংস্থার প্যাভিলিয়নে। সেখানে গিয়ে দেখি যে, সত্যিই তার লাশ পড়ে আছে। রক্তে ভেসে গেছে মেঝে। ওখান থেকে বের হয়ে আসার পথেই দিপু ভাইয়ের সঙ্গে দেখা। আমি মূলত লাশের সৎকার করার জন্য খবর দিতে আমাদের সেক্রেটারি মাহবুব ভাইয়ের কাছে যাই। বর্তমান বঙ্গবন্ধু পিজি হাসপাতাল। সেখানে তিনি আমাকে দেখে বললেন, তুমি এখনই চলে যাও। তোমার নামে হুলিয়া  আছে। আমাকে জানাল ক্যাপ্টেন ইউনুস। তুমি এখনই ঢাকা ছাড়।

আমি ঢাকা ছাড়লাম ২৯ তারিখ। বাসায় গিয়ে আমার বাবা-মাকে যখন বললাম, সবাই তো অস্থির। এরপর তড়িঘড়ি করে দুদিনের মধ্যে আমরা রওনা দিলাম দেশের বাড়ি গোপালগঞ্জের উদ্দেশে। গোপালগঞ্জ মানে কাশিয়ানী। তখন সেখানে মুক্তিযুদ্ধের ক্যাম্প শুরু হয়ে গেছে। আমাদের কার্জেন ভাই, ক্যাপ্টেন নুরুল দা। তার নেতৃত্বে আমাদের স্কুলের পেছনে প্রশিক্ষণ হতো। গোপালগঞ্জ থেকে সেখানে অনেকে আসত ট্রেনিং করতে। বাবা যেহেতু পুলিশে চাকরি করত তার সার্ভিস রিভলবার ছিল। সেটা আমি চুরি করলাম। বাবা এটা জানত না। আমি রিভলবার সঙ্গে করে হাঁটতাম। ট্রেনিং নিতাম। এরপর কোথায় কোথায় রাজাকার আছে তার সন্ধানে নামি। দলে দলে ভাগ করে বিভিন্ন এলাকায় পাহারা দিতাম মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে যে রাজাকার দল ছিল তাদের খুঁজতে।

ভাটিয়াপাড়ায় তখন আর্মি ক্যাম্প ছিল। তাদের নেতৃত্বে রাজাকার বাহিনী ছিল। রাজাকার নিধনে তখন আমাদের খণ্ডকালীন গেরিলা কর্মকা- চলত। গেরিলা কর্মকারের সঙ্গে থাকার কারণে আমি কয়েকটা অপারেশনে অংশগ্রহণ করি। সে সময় বঙ্গবন্ধুর ভাতিজা শেখ শহীদুল ইসলাম একদিন আমাকে ডেকে বললেন, রকিবুল তুমি কি করছ। আমি বললাম, আমি এই কাজ করছি। মুক্তিযুদ্ধের ট্রেনিং নিয়ে আমি এটা করছি। তখন তিনি আমাকে একটা কথা বললেন যেটা আমার মনে দাগ কাটে যায়। বলেন, তুই কি স্বাধীন বাংলা বেতার শুনিস? আমি বললাম, হ্যাঁ শুনি। বললেন, স্বাধীন বাংলা ফুটবল ক্লাবও যে আছে জানিস? বললাম, হ্যাঁ তারা দেশের বিভিন্ন জায়গায় খেলছে। তারা সবাইকে জানান দিচ্ছেন যে, আমরা আপনাদের সহায়তা চাচ্ছি।

একদিন শহীদ ভাই আমাকে বললেন, এ দেশ কি স্বাধীন হবে? আমি বললাম, ইনশাল্লাহ একদিন তো হবেই। তখন কি ক্রিকেট থাকবে? হ্যাঁ, থাকবে। কারা খেলবে? আমি বললাম, যারা বেঁচে থাকবে তারা খেলবে। তখন শহীদ ভাই বললেন, কি যে হবে রকিবুল আমি জানি না। তবে এখন সবাই মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিচ্ছে। প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে অংশ নিচ্ছে। নাট্যকাররা নাটকে, গায়করা গানের মাধ্যমে এম আর আক্তার মুকুলের সেই প্রোগ্রামে।

তিনি আমাকে বললেন যে, স্বাধীন বাংলা ক্রিকেট দল হতে হবে। কারণ যুদ্ধ কদিন চলে ঠিক নেই। উনি তখন আমাকে বললেন, আমি কয়েকদিনের মধ্যে চলে যাব। জুলাইয়ের দিকে, দেশে তখন বন্যা হয়েছিল। উনি বললেন, আমি চলে যাই, আমার একটা চিঠি আসবে তোমার কাছে। সেখানে গাইড আসবে। ওই গাইডে সব বৃত্তান্ত থাকবে। সাতদিনের মধ্যে চিঠি এলো।

স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল হয়েছিল পিন্টু ভাইয়ের নেতৃত্বে। তারা সবাই ধর্মপাড়ায় একটা বিল্ডিংয়ে থাকতেন। আমিও সেখানে যোগ দেই। আমি স্বাধীন বাংলা ক্রিকেট দল নিয়ে কাজ করতে শুরু করলাম। তাৎক্ষণিকভাবে আমি সেখানে বেশ কয়েকজন খেলোয়াড় পেলাম। ফুটবলার নওশের, সালাউদ্দিন, প্রবাদ। আমাদের মূল লক্ষ্য ম্যাচ জেতা নয়। আমাদের লক্ষ্য ছিল আমরা একটা টিম করব। ভারতের বিভিন্ন জায়গায় খেলব।

সেই প্রেক্ষাপটে মুক্তিযুদ্ধের গাইড অনুযায়ী দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে খেলোয়াড় জোগাড় করা শুরু করলাম। এম আই সিদ্দিকী তখন ক্রিকেট খেলতেন, তাকে আনলাম। এভাবে কাজটা শুরু হলো। তখন কিন্তু মুক্তিযুদ্ধ প্রায় তুঙ্গে এবং ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধ লেগে যায় অবস্থা। তখন আমাদের দলটাও প্রায় গঠন হয়ে গেছে।

ডিসেম্বর মাসের ১৬ তারিখ তো আমরা বিজয় লাভ করলাম। ক্রিকেটটা যেহেতু শীতকালীন খেলা। কাজেই আমাদের খেলাটা শুরু করার কথা ছিল জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারির দিকে। কারণ দেশ স্বাধীন হয়ে গেছে। আমাদের আসল প্রাপ্তিটা পেয়ে গেছি। এই হলো মুক্তিযুদ্ধে আমার পরোক্ষ এবং প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ইতিহাস।

বিশ্বের কোনো দেশ এতবড় আত্মাহুতি দেয়নি। আজকে যখন ২০১৬ সালে দাঁড়িয়ে পেছনের দিকে ফিরে তাকাই দেখি, মানুষের মধ্যে কত মিল, কত সহমর্মিতা। আজকে যখন দেখি অনেক ঘাটতি, সবাই ব্যস্ত হয়ে গেছে নিজেকে নিয়ে তখন অনেক কষ্ট লাগে। মুক্তিযুদ্ধ কেবল যুদ্ধ ছিল না, এটা ছিল জনযুদ্ধ। এটাতে সবাই অংশ নেয়। ক্রীড়াঙ্গনের কেউই বাদ যাননি, অফিশিয়াল, খেলোয়াড়, ফুটবলার, ক্রিকেটার, অ্যাথলেট সবাই এখানে যোগ দেন। অনেকে সরে গিয়েছেন। ক্রীড়াঙ্গনে যারা শহীদ হয়েছেন তাদের খোঁজখবর নিয়ে যদি একটা লিস্ট করা যেত এবং তাদের সত্যিকার অর্থে মূল্যায়ন করা হতো, তাহলে হয়ত তাদের আত্মা আরেকটু শান্তি পেতো। আমি আশা করব সরকার এ কাজটি করবেন।

বাংলাদেশ স্বাধীন না হলে আমার ব্যক্তিগত ক্রিকেট ক্যারিয়ার সমৃদ্ধ হতো। নিঃসন্দেহে পাকিস্তান দলে খেলতাম। ’৭১ সালে ইংল্যান্ডে ট্যুর ছিল। আমি ওই ট্যুরে যেতাম। সেটা হয়নি। মূলত আমার ক্যারিয়ার ওখানেই শেষ।

তবে এ নিয়ে আমার কোনো আফসোস নেই। আমার কাছে দেশ স্বাধীন হওয়ার প্রাপ্তিটা বেশি বড়। আমরা একটা দেশ পেয়েছি। লাল-সবুজের পতাকা পেয়েছি। এর চেয়ে আর বড় প্রাপ্তি নেই। তাই আজ আমার কোনো কষ্ট নেই। যদিও আমি টেস্ট ম্যাচ খেলিনি। কিন্তু স্বাধীনতার পর আমি তো বাংলাদেশের অধিনায়ত্ব করেছি। বাংলাদেশ না হলে তো আমি রকিবুল ক্রিকেট খেলে দেশের অধিনায়কত্ব করতে পারতাম না। হয়ত ব্যক্তিগত ক্যারিয়ার সেখানে সমৃদ্ধ হয়নি। কিন্তু এ নিয়ে কোনো আক্ষেপ বা আফসোস নেই। দেশ আমাকে সম্মান দিয়েছে। আপনারা সাংবাদিকরা সম্মান দিচ্ছেন।

আমি মাশরাফিকে ধন্যবাদ দেই। সে তার আত্মজীবনীতে আমাকে প্রকৃত বীর বলেছে। ও আমার প্রতি সম্মান দেখিয়েছে। আমরা যে যুদ্ধ করেছিলাম, মাশরাফিরা আজ ব্যাট-বল হাতে সে যুদ্ধ করছে। আমার কাছে খুব ভালো লেগেছে যে, মাশরাফির প্রজন্মরাও এটা মনে রেখেছে। কিন্তু দুঃখের বিষয়, আমাদের এই প্রজন্ম আমাদের স্বাধীনতার ইতিহাসটা পুরোপুরি জানে না। আমাদের কারা সেক্টর কমান্ডার ছিলেন, বঙ্গবন্ধু কি ছিলেন, কারা কারা বীর ছিলেন, কারা শহীদ হয়েছে, এটা কিন্তু পারিবারিকভাবেও যুদ্ধোত্তর হয়ত জানতে পারেনি তারা। কারণ তখন তো আজকের মতো প্রযুক্তি ছিল না। তাছাড়া পাঠ্যপুস্তকে এগুলো আসেনি এবং আসতে দেওয়া হয়নি। কারণ স্বাধীনতার দল আওয়ামী লীগ বেশিদিন ক্ষমতায় থাকতে পারেনি, থাকতে দেওয়া হয়নি। যারা স্বাধীনতার বিরুদ্ধে কাজ করে তারা তখনো সক্রিয় ছিল, এখনো আছে, তারা চাচ্ছে কিভাবে মুক্তিযুদ্ধকে প্রশ্নবিদ্ধ করা যায়। মাশরাফির প্রতি আমার সশ্রদ্ধ সালাম। সে বাংলাদেশের বীর। সে আমাকে স্মরণ করেছে তার লেখা বইয়ের মধ্যে। আমি তার কাছে কৃতজ্ঞ এবং তাকে আমি সালাম জানাই।

প্রত্যেকে প্রত্যেকের জায়গা থেকে স্বাধীনতা সংগ্রাম করেছে।  ’৭১ সালে ৭ কোটি লোক ছিল। আমি মনে করি, একটা গ্রুপ ছাড়া, রাজাকার-আলবদর ছাড়া প্রত্যেকেই মুক্তিযোদ্ধা। আমরা রাতের অন্ধকারে যুদ্ধ করতে গিয়ে অনেকের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছি, ক্ষুধা পেয়েছে, তখন খাবার নেই, তাদেরকে তারা মুড়ি দিয়েছে। খাবার রান্না করে খাইয়েছে। রাস্তায় দাঁড়িয়ে মা-বোনরা জগ হাতে কলসি কাঁধে তারা হাতে পানি দিয়েছে।

মানুষের মধ্যে সহযোগিতা, মুক্তিযুদ্ধকে সামনে রেখে তাদের মধ্যে একটা মহব্বত, প্রত্যেকের প্রতি টান ছিল মুক্তিযুদ্ধের প্রতি। তাই আমি বলতে পারি, মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিল গুটি কয়েক লাখ লোক ছাড়া প্রত্যেকটি বাঙালি, যার যার নিজস্ব অবস্থান থেকে। কেউ প্রত্যক্ষ সমর যুদ্ধে অংশ নিয়েছে, কেউ পেছনে থেকে সহায়তা করেছে, কেউ খাবার দিয়েছে, কেউ টাকা-পয়সা দিয়ে সহযোগিতা করেছে। প্রত্যেকে যার যার অবস্থান থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য লড়াই করেছে। এটা বড় জিনিস, আমার কাছে বড় প্রাপ্তি। লেখক-রকিবুল হাসান: বাংলাদেশের ক্রিকেট কিংবদন্তি
১৬ ডিসেম্বর ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/হাবিব/এইচআর

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে