অগ্নি পান্ডে: দুটো আলাদা ছবি। পার্থক্য বিশাল। ফলাফলেও ব্যাপ্তি আলাদা। দক্ষিণ আফ্রিকা অনুশীলনের সময় যেখানে ডেল স্টেন, মরনি মর্কেলের মতো বোলারদের ফিতে দিয়ে মেপে কোথায় গুড লেন্থ স্পট কিংবা আবার কোথায় ইয়র্কার, ব্লকহোল ফেলা বোলিং অনুশীলন করে েযতে হয়, সেখানে ভারতীয় বোলারদের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা ঠিক উল্টো।
যেখানে ডেথ ওভার বোলিং নিয়ে এত সমস্যা হচ্ছে, সেখান ফিতে দিয়ে মেপে স্পট বোলিং অনুশীলন করা হবে এটাই তো স্বাভাবিক। কিন্তু ভারতের অনুশীলনে সে–সবের বালাই নেই। না, কানপুর–নিধনের পর ইন্দোরে কোনও বাড়তি উদ্যোগ দেখাই গেল না! এমনই ভারতীয় শিবির। বোলাররা গতানুগতিক অনুশীলন করে গেলেন!
দক্ষিণ আফ্রিকা বোলিং কোচ ল্যাঙ্গারভেল্ট বলছেন, ‘এভাবে অনুশীলন করে আমার বোলাররা সফল হচ্ছে। ভারতীয় কন্ডিশনে নিজেরা তৈরি হয়ে মাঠে নামতে পারছে। এখানে লাইন–লেন্থ ঠিক রাখার জন্য ফিতে দিয়ে মেপে বোলিং অনুশীলন পদ্ধতিটা কাজে দিচ্ছে। এটা চালিেয় যেতে চায় স্টেন, মর্কেল, রাবাডারা।’ উল্টো দিকে কী বলছেন ভারতের বোলিং কোচ? ভরত অরুণের কাজটাই এখন সবচেয়ে কঠিন। তা মানছেন।
কিন্তু অনুশীলনে নেই কেন বাড়তি নয়া উদ্যোগ? হাসছেন ভরত অরুণ। ‘আমাদের বোলাররা নির্দিষ্ট পরিকল্পনা করে এগোচ্ছে। দেখবেন সমস্যা ঠিক কাটিয়ে উঠতে পারব আমরা।’ ডেথ ওভার বোলিং করতে গিয়ে মার খেয়ে মরছেন ভারতীয় বোলাররা। এটা সেই বাংলাদেশ থেকেই দেখছি। এখনও সময় দরকার! ভারতীয় অধিনায়ক ধোনিও চিন্তিত। কিন্তু বোলিং কোচকে দেখে মনে হল যেন কিছুই ঘটছে না। তাঁর বোলাররা যেন ভালই বোলিং করে যাচ্ছেন।
ইন্দোরের হোলকার স্টেডিয়ামের মাঠ আয়তনে বেশি বড় নয়। দু’প্রান্তেরই লং অফ, লং অন বাউন্ডারি বেশ ছোট। আবার কি এ বি ম্যাজিক দেখা যাবে? না, পাল্টা রোহিত ম্যাজিক? মঙ্গলবার ইন্দোরে ভারতীয় দলের অনুশীলনে দেখা গেল ব্যাটসম্যানরা বেশি সময় ধরে অনুশীলন করলেন। অন্যদিকে, দক্ষিণ আফ্রিকা শিবিরের ছবিও একই। ম্যাচে যতটা নিষ্ঠুর, নেটে ততটা ক্ষিপ্ত নয় প্রোটিয়া অধিনায়ক এ বি ডি’ভিলিয়ার্সের ব্যাট। সত্যি আই পি এলের সুবাদে কী জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন দক্ষিণ আফ্রিকা অধিনায়ক! কানপুরে দেখেছি। ইন্দোরেও দেখলাম। অনুশীলন দেখতে আসা হাজারখানেক জনতা সমানে এ বি, এ বি চিৎকার করে গেলেন।
রানে ভর্তি বাইশ গজ। এখানে রাহুল দ্রাবিড় নামাঙ্কিত ভারতীয় দলের ড্রেসিংরুমের এই মুহূর্তে ‘স্বপ্নের ফর্মে’ থাকা সদস্য রোহিত শর্মা জানিয়ে গেলেন, ‘আগের ম্যােচ আমাদের কিছু ভুল হয়েছিল। তবে আমরা চ্যাম্পিয়ন। আমি জানি, চ্যাম্পিয়নরা এক ভুল বারবার করে না। ঘুরে দাঁড়াতে জানে। রানের মাঠ। আশা করছি সবচেয়ে কম ৩০০ রান উঠবে।’
এখনও পর্যন্ত ইন্দোরে ধোনিরা কখনও হারেননি। সেই পালা ধরে রাখার আপ্রাণ চেষ্টায় ভারতীয় দল। ‘আমাদের টপ অর্ডার রান পাচ্ছে। এটা ভাল দিক। সেই ফর্ম ধরে রাখতে হবে। রাহানে তিন নম্বরে সফল হয়েছে। তার পর বিরাট, এম এস, রায়নারা আছে। আমাদের সেরা ব্যাটিং লাইন আপে টপ অর্ডার রান পেলে গোটা দলটাই দাঁড়িয়ে যায়। তবে একটা বিষয়, বড় রান তাড়া করতে গিয়ে টপ অর্ডারের কাউকে না কাউকে শেষ পর্যন্ত খেলতেই হয়। আমাদের ব্যাটিং কম্বিনেশন নিয়ে আলোচনা চলছে। চূড়ান্ত ঠিক করবে ধোনিই।’
ফর্মে থাকা রোহিত শর্মাকে নিয়ে ডি’ভিলিয়ার্স বাহিনীর একটা চিন্তা রয়েই গেছে। বোলিং কোচ ল্যাঙ্গারভেল্ট বলেই ফেললেন, ‘দশটি বলের বেশি খেলতে দেওয়া যাবে না রোহিতকে। দশটি বল খেলে ফেললেই আবার বড় রান করে ফেলবে। আমাদের মাথায় আছে।’ তেমনই, রোহিত যতই বলুন না কেন ‘ডেথ ওভারে এ বি–র মতো ব্যাটসম্যানের বিরুদ্ধে আমাদের বোলারদের আরও স্মার্ট হতে হবে।’ ভারতীয় বোলারদের মধ্যে কি সেই স্মার্টনেস দেখা যাচ্ছে? বিশেষত পেসারদের মধ্যে? উত্তর: না, না, না।
১৪ অক্টোবর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এসএস/এসবি