স্পোর্টস ডেস্ক : টি-টোয়েন্টি সিরিজ খোয়ানোর পর প্রথম ওয়ান ডে-তেও হেরে ইনদওরে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচ খেলতে নামবে মহেন্দ্র সিংহ ধোনির ভারত। বুধবার, দুপুর দেড়টা থেকে। সেই ম্যাচের আটচল্লিশ ঘণ্টা আগে ভারতীয় ক্রিকেট অনুরাগীর আলোচনায় যে সব প্রসঙ্গ উঠে আসতে পারে:
হোলকারের আশীর্বাদ: ইনদওরের প্রাচীন মরাঠা রাজবংশের নামাঙ্কিত স্টেডিয়ামে কোনও দিন হারের মুখ দেখেনি ভারত। এই মাঠে তারা খেলেছে তিনটে ওয়ান ডে, এবং তিনটেতেই জিতেছে। ২০০৬ এবং ২০০৮-এ ইংল্যান্ডকে এখানে হারিয়েছে ভারত। প্রায় চার বছর আগে এ মাঠেই বীরেন্দ্র সহবাগের অবিশ্বাস্য ২১৯ করা। যার সৌজন্যে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে দেড়শো রানেরও বেশি ব্যবধানে হারিয়েছিলেন ধোনিরা।
রানের স্বর্গ: ইনদওরের পিচ কিউরেটর সমন্দর সিংহ চৌহানকে ফ্ল্যাট পিচ স্পেশ্যালিস্ট বললে খুব একটা ভুল হবে না। তাঁর তৈরি পিচে ২৮৯ তাড়া করে জিতেছে ভারত। পরের দুটো ওয়ান ডে-তে প্রথমে ব্যাট করে তুলেছে ২৯২ এবং ৪১৮। শোনা গেল, এ দিন বেশির ভাগ সময়ই পিচ ঢাকা থাকায় বুধবারের ম্যাচ উইকেট দেখার সুযোগ পাননি বিশেষ কেউ। তবে মনে করা হচ্ছে, এ বারও হোলকার স্টেডিয়াম রানের ভুরিভোজ নিয়ে অপেক্ষা করে থাকবে।
টিকিট-আর্তি: সাতাশ হাজার দর্শকসংখ্যার স্টেডিয়াম আন্তর্জাতিক ম্যাচ খুব কম পেয়েছে, সুতরাং টিকিট নিয়ে হাহাকার স্বাভাবিক। অনলাইন টিকিট কেনার হিড়িকে ওয়েবসাইট ক্র্যাশ করে যাওয়া, ব্যাঙ্ক শাখায় টিকিট কাউন্টারে সারা রাত লাইন দেওয়া, জঙ্গি টিকিট ক্রেতাদের উপর পুলিশের লাঠিচার্জ— কোনওটাই বাদ যায়নি। টিকিটের এই আকালে শহরের বিশিষ্ট রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদেরও খালি হাতে ফেরাতে বাধ্য হচ্ছে মধ্যপ্রদেশ ক্রিকেট সংস্থা। যা নিয়ে কোনও কোনও মন্ত্রী নাকি আদালতে নালিশও করছেন! প্রত্যাশিত ভাবেই ম্যাচের দিন নজিরবিহীন নিরাপত্তার ব্যবস্থা থাকছে মাঠে। কটক-কাণ্ডের পরে ইনদওরেও জলের বোতল নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গ হরভজন: এ দিন সন্ধেয় ইনদওরে ঢুকে পড়লেন রবিচন্দ্রন অশ্বিনের বদলি হরভজন সিংহ। দিল্লি-ইনদওর ফ্লাইটে ওঠা থেকে ইনদওর বিমানবন্দরে নেমে টিম হোটেলের গাড়িতে ঢোকা পর্যন্ত ভক্তদের ভিড় সামলাতে হল তাঁকে। তার কিছুক্ষণ আগে শহরে ঢুকে গিয়েছে টিম ইন্ডিয়া। নবরাত্রির উৎসবের মধ্যে ইনদওরকে ক্রিকেট-উৎসবেরও আগাম স্বাদ দিয়ে। তবে অশ্বিনের চোটের কী অবস্থা, ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্টের পক্ষ থেকে তা নিয়ে কোনও নতুন আপডেট আসেনি।
আফ্রিকান আত্মবিশ্বাস: টিম ইন্ডিয়া যখন নানা সঙ্কটে ডুবে, দক্ষিণ আফ্রিকা তখন আত্মবিশ্বাসের শিখরে। রবিবার ম্যাচ জিতে হাসিম আমলা হাসতে হাসতে বলে গিয়েছিলেন, ওই ম্যাচ জিতবে আশাই করেনি তাঁর টিম। সিরিজের শুরুতেই যে জয় তাঁর টিমকে অনেকটা এগিয়ে দিয়েছে বলে তাঁর বিশ্বাস। অন্য দিকে ধোনি-সংহারক কাগিসো রাবাদা বলছিলেন, কী ভাবে স্কুল ক্রিকেটে ডেথ ওভারে বল করে করে নিজেকে আন্তর্জাতিক মঞ্চের চাপের জন্য তৈরি করেছেন। ডেল স্টেইন আবার টুইট করে এ সবের মধ্যে মর্নি মর্কেলকে শততম ম্যাচের অভিনন্দন জানাচ্ছেন। আর ইনদওর পিচের রান-প্রেমের খবর পেয়ে নিশ্চয়ই আঙুল চাটছেন এবি ডে’ভিলিয়ার্স।
মিষ্টিমুখ বাদ: জানা গেল, প্রত্যেক শহরের টিম হোটেলকে নাকি প্লেয়ারদের জন্য বিশেষ ডায়েট চার্ট তৈরি করে পাঠিয়েছে ভারতীয় বোর্ড। তাতে দক্ষিণ আফ্রিকানদের খাবারে মশলা কম দেওয়ার নির্দেশ যেমন আছে, তেমনই আছে প্লেয়ারদের খাবারের মেন্যু থেকে অতিরিক্ত ক্যালোরি ছেঁটে ফেলার পরামর্শ। এমনকী ধোনিদের ডায়েট চার্ট থেকে সব রকমের ডেজার্ট বাদ দিয়ে দেওয়া হয়েছে। জয়ের মিষ্টত্বের খোঁজ পেয়ে গেলে অবশ্য এ সব ছুটকো ব্যাপার নিশ্চয়ই প্লেয়াররা মনে রাখবেন না।
১৪ অক্টোবর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এসএস/এসবি