সঞ্জয় পার্থ: মেসি ইতিমধ্যে ফিফাকে সত্যি সত্যি একটা চিঠি দিয়েছেন। সেটার ভাষা আপনারা জানেন। কিন্তু কেমন হতো, যদি মেসি মনের কথা লিখতেন চিঠিতে। ট্রাইবুনা ডট কম নামে একটি রম্য ওয়েবসাইট কল্পনা করার চেষ্টা করেছে, মেসি নিজে লিখলে চিঠিটা কেমন হতে পারতো।
প্রিয় মিস্টার ও মিসেস ফিফা,
আমার নাম লিওনেল আন্দ্রেস মেসি। আমার বয়স ২৯ বছর। আমি ফুটবল খেলতে ভালোবাসি। আমার বন্ধুরা আমাকে লিও বলেই ডাকে। আপনারা যদি আমার প্রতি একটু সদয় হন, তাহলে খুব সম্ভবত আমি আপনাদেরকেও আমাকে লিও বলে ডাকার অনুমতি দিয়ে দিব।
আপনারা মনে করছেন আমি রেফারিকে খারাপ কথা বলেছি, সেজন্য আমাকে চার ম্যাচ নিষেধাজ্ঞাও দিয়েছেন। এটা জানতে পেরে আমি মনে খুব কষ্ট পেয়েছি। সে কারণেই আজ আপনাদের কাছে লিখতে বসেছি।
আমি আমার লেগো (বাচ্চাদের খেলনা) সংগ্রহের দিব্যি দিয়ে বলছি, আমার কথাগুলো রেফারিকে উদ্দেশ্য করে বলা ছিল না। আমি কেবল মনে করছিলাম আর্জেন্টিনাকে ট্রফিহীন রাখতে বছরের পর বছর ধরে গঞ্জালো হিগুয়েইন কি কি করেছে। আর সেটা মনে করেই বাতাসে আপন মনে কিছু কথা বলে ফেলেছিলাম। আমি ওকে অনেক ঘৃণা করি। ও সবচেয়ে খারাপ, ওর মত খারাপ আর হয় না।
যে ভিডিওটাতে দেখা যাচ্ছে আমি রেফারির দিকে উদ্দেশ্য করে গালি দিচ্ছি সেটা পুরোটাই এডিটেড। এই ভিডিও আমার বিরুদ্ধে প্রমাণ হিসেবে ব্যবহার করা যায় না। মাদেইরাতে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর মূর্তি বানিয়েছেন যে ভাস্কর, তিনিই প্রমাণ করে দিয়েছেন, অন্য কারোর হাতে পড়লে বাস্তবতা খুব সহজেই বদলে দেয়া যেতে পারে। সত্যিটা আমরা সবাই জানি, বাস্তবে ক্রিশ্চিয়ানো ওই মূর্তিটার চেয়েও বাজে দেখতে।
আমি নিশ্চিত করছি, এটা ভুল বোঝাবুঝি ছাড়া আর কিছুই না। রেফারি আমার কথায় অপমানিত বোধ করে থাকলে আমি তার কাছে ক্ষমা চাচ্ছি। কিন্তু হিগুয়েইনের কাছে আমি কিছুতেই ক্ষমা চাইবো না। আবারো বলি, ও সত্যিই সবচেয়ে খারাপ এবং আমি আমার সর্বস্ব দিয়ে ওকে অপছন্দ করি। দয়া করে ওকে চিরতরে ফুটবল থেকে নির্বাসনে পাঠান। ওর এইটাই প্রাপ্য।
আমি আশা করব আমার এই চিঠিটি আপনাদের প্রতি আমার সততা, আনুগত্যকে প্রকাশ করবে। তা যদি নাও হয়, অন্তত আমার নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের ব্যাপারে আপনাদের একটু হলেও দোটানায় ফেলবে, যাতে করে ভবিষ্যতে এই ধরণের চিঠি আপনাদের আর না পেতে হয়।
পুরো চিঠিটার সারমর্ম আরও একবার মনে করিয়ে দিচ্ছি, আমি রেফারিকে অপমান করিনি, গঞ্জালো নিকৃষ্টতম ফুটবলার, ওকে চিরতরে নিষিদ্ধ করা উচিত।
প্লিজ আমার নিষেধাজ্ঞাটা উঠিয়ে নিন, আর আরেকবার অবসর নেয়ার আগে পর্যন্ত আমাকে খেলতে দিন। এর বেশি কিছু বলার নেই আমার।
ওহ আরও দুইটা কথা; ১) হাফটাইমে টানেলের ভেতর আর্সেন ওয়েঙ্গারকে নিয়ে এই একই কথা আমি অ্যালেক্সিস সানচেজকে বলতে শুনেছিলাম সেই ব্যাপারে আমার কোন সন্দেহ নেই, আর ২) আমার কুকুরটা কিন্তু অনেক বড়, লোকজন আমার ব্যাপারে বাজে কথা বললে ও একদমই সহ্য করতে পারেনা সেটা।
আপনাদের বিবেচনার জন্য ধন্যবাদ। আশা করি আমরা বন্ধু হয়ে থাকতে পারব, এবং ভবিষ্যতে কোন এক সময় একত্রে আমরা বোলিং খেলতে যাব।
ভালোবাসা নেবেন,
লিওনেল মেসি।
[রম্য রচনা। দয়া করে সত্যি ভেবে সিরিয়াস হবেন না]
০১ এপ্রিল ২০১৭/এমটি নিউজ২৪ডটকম/আ শি