স্পোর্টস ডেস্ক: তাকে বলা হয় বাংলাদেশ দলের বোলিং আক্রমনের প্রাণ ভোমরা। মাঠে খেলেন নিজের শতভাগ উজাড় করে, জীবনের চেয়েও বেশি ভালবাসেন ক্রিকেট। বার বার বড় ধরনের ইনজুরিতে পড়েন, থাকতে হয় মাঠের বাইরে। আবার ফর্ম নিয়ে ফিরেও আসেন সগৌরবে। তাইতো তার আচমকা টি-টোয়েন্টি থেকে অবসরের ঘোষনায় চমকে গেছে দেশের ক্রিকেট ভক্তরা।
এদিকে এরই মধ্যে মাশরাফিকে ফেরাতে দেশের বিভিন্ন জায়গায় মানববন্ধন হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমজুড়ে চলছে ম্যাশ বন্দনা। চায়ের দোকান থেকে শুরু করে সব মহলেই চলছে আলোচনার ঝড়। সবার মুখে একই কথা, ‘মিস ইউ ক্যাপ্টেন ইন টি-টোয়েন্টি।’
ওয়ানডের মত টি-টোয়েন্টি দলকেও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা কারর ঠিক এক সপ্তাহর মাথায় আচমকা অবসরের ঘোষনা দেন মাশরাফি। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ২ ম্যাচ টি-টোয়েন্টি প্রথম ম্যাচে টসের সময় এই ছোট ফরম্যাট থেকে অবসর নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।
মাশরাফির হুট করে অবসর নেওয়ার সিদ্ধান্তে সবাই যখন বিস্মিত তখন তার এই সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানিয়েছেন বাংলাদেশ দলের প্রধান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। তিনি বলেন সঠিক সময়ে টি-টোয়েন্টি থেকে অবসর নিয়েছেন মাশরাফি।
‘আমি মনে করি মাশরাফির অবসর নেওয়ার এটিই সঠিক সময় ছিল। সে দলকে দীর্ঘদিন যাবত সার্ভিস দিয়ে আসছে। আমি মনে করি সে তার দায়িত্বটা সঠিকভাবেই পালন করেছে।’‘সামনে যেহেতু কোন বিশ্বকাপ নেই তাই এটাই সঠিক সময় তরুণদের জন্য নিজেদের উপস্থাপন করার। এটা মাশরাফির থেকে ভালো সিদ্ধান্ত ছিল।’
বিসিবির অভ্যন্তরীণ এক সূত্র জানায়, শ্রীলঙ্কায় ওয়ানডে সিরিজ শুরুর আগেই চাপে রাখা হয়েছিল বাংলাদেশ অধিনায়ককে। শ্রীলঙ্কায় পৌঁছানোর পরই টিম ম্যানেজমেন্টের মিটিংয়ে হাজির হতে হয় মাশরাফিকে। যেখানে তাকে বলা হয়েছিল, তার বোলিং ঠিকঠাক হচ্ছে না। বোলিং নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। মাশরাফির উপর চাপ বাড়ানোর অংশ হিসেবে টি-টোয়েন্টি দল থেকে বাদ দেয়া হয় রুবেল হোসেনকে।
সূত্র আরও জানায়, সিরিজের মাঝপথে বোর্ডের পক্ষ থেকে তার কাছে বার্তা পাঠানো হয়। শেষতক বিসিবির শীর্ষ কর্তারা মিটিংয়ে বসেন মাশরাফিকে নিয়ে। সেখানে তাকে জানানো হয়, টি-টোয়েন্টি দলের নতুন অধিনায়ক চায় বিসিবি। তবে সেই মিটিংয়ে অনেক ডাকাডাকির পরও উপস্থিত ছিলেন না কোচ চান্দিকা হাতুরুসিংহে।
প্রসঙ্গত, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে মাঠে নামার আগে ক্রিকেটের এই ফরম্যাটকে বিদায় বলে দেন মাশরাফি বিন মর্তুজা।২০০৬ সালে খুলনায় জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে জার্সি গায়ে জড়ান মাশরাফি। এরপর থেকে ৫৪টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন। বল হাতে শিকার করেছেন ৪২টি উইকেট। ব্যাট হাতে ৩৯ ইনিংসে করেছেন ৩৭৭ রান। সর্বোচ্চ ৩৬। অপরাজিত ছিলেন ১১ বার। টি-টোয়েন্টিতে রেকর্ড ২৮টি ম্যাচে বাংলাদেশ দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন মাশরাফি। তাঁর নেতৃত্বতে লাল-সবুজের দেশটি জিতেছে ১০টি ম্যাচ। যেটা অধিনায়ক হিসেবে কোনো বাংলাদেশির সর্বোচ্চ সাফল্য।
১০ এপ্রিল ২০১৭/এমটি নিউজ২৪/এইচএস/কেএস