বৃহস্পতিবার, ১৩ এপ্রিল, ২০১৭, ০৩:৪২:৪৭

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশের হয়ে প্রথম বল করা নওশেদ টাইগারদের সাফল্য নিয়ে যা বললেন

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশের হয়ে প্রথম বল করা নওশেদ টাইগারদের সাফল্য নিয়ে যা বললেন

স্পোর্টস ডেস্ক: আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশের হয়ে প্রথম বলটি করেছিলেন গোলাম নওশের প্রিন্স। দেশের প্রথম গতিতারকাও তিনি। পেসের সঙ্গে থাকত কার্যকরী সুইং। ১৯৮৬ থেকে ১৯৯০- এই সময়ে বাংলাদেশের হয়ে খেলেছেন ৯টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ।

যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসে থিতু হওয়া বাংলাদেশের সাবেক এই ক্রিকেটার ও নির্বাচক দীর্ঘদিন পর এসেছিলেন দেশে। দেশ ছাড়ার আগে মুখোমুখি হয়েছিলেন। জানিয়েছেন বাংলাদেশের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ ক্রিকেট নিয়ে তার ভাবনার কথা।

শ্রীলঙ্কায় তিন ফরম্যাটেই বাংলাদেশ হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করল। দল ধারাবাহিকতা ধরে রেখে এতটা এগিয়ে যাবে ভেবেছিলেন?

সত্যি কথা বলতে কী এটা তো আমাদের এক সময়কার স্বপ্ন ছিল। আমরা কবে ওডিআই খেলব, কবে টেস্ট খেলব, কবে দেশের বাইরে গিয়ে জিতব। বাংলাদেশের উন্নতি নিয়ে ভাবতাম। মনে হত হয়ত দেখে যেতে পারব না জীবদ্দশায়। অবিশ্বাস্য ব্যাপার হলো, নিজের চোখে দেখছি আমরা পারি। আমাদের ছেলেরা সামনে আরও ভাল করবে।

কোন বিষয়গুলো আপনাকে এতটা আশাবাদী করে?

সাকিব এখন তো পারফর্মার হিসেবে আইকন হয়ে গেছে। মাশরাফি তো ক্যাপ্টেন হিসেবে এদেশের আইকন। আমাদের সময় দেশে তেমন কোনও আইকন ছিল না। এখনকার প্রজন্ম স্বপ্ন দেখবে আমি সাকিবের চেয়ে ভাল ক্রিকেটার হব, মাশরাফির চেয়ে ভাল ক্যাপ্টেনসি করব। সাকিব-মাশরাফিদের আইকন ধরেই এগিয়ে যাবে বাংলাদেশের ক্রিকেট। সময় এসে গেছে। আমাদের কেউ ঠেকাতে পারবে না।

পেস বোলিংয়ে আমাদের উন্নতি কতটা হচ্ছে?
সব কিছুই ভালো মনে হয়। আলটিমেট রেজাল্ট হল সাফল্য। আপনি যদি সাফল্য পান, তার মানে সব ডিপার্টমেন্টেই কাজ হচ্ছে। টেস্টে আরেকটু ভালোমানের ফাস্ট বোলার দরকার। উন্নতির জন্য হয়ত টিপস দরকার, কীভাবে একজন ফাস্ট বোলারের বোলিং করতে হয়। এসব দেখভাল করা দরকার।

এখনকার বাংলাদেশ দলে বাঁহাতি পেসার একজনই, মোস্তাফিজুর রহমান। আপনি নিজেও বাঁহাতি ছিলেন। বোলিং নিয়ে তাকে কোনও পরামর্শ দেয়ার আছে কিনা?

সে অসাধারণ বোলিং করছে। উইকেট পাচ্ছে। সবই ঠিক আছে। আমি শুধু একটু বলে দেই, বাঁহাতি পেসারদের ন্যাচারাল ইনসুইং থাকে। মোস্তাফিজের অনেক কিছুই আছে। কাটারের সঙ্গে ইনসুইং ট্রাই করলে ও সব ফরম্যাটেই সফল বোলার হবে। খুবই ভালো করবে। ওর বল খেলাই কঠিন হয়ে যাবে।

আমাদের পেসারদের মধ্যে ইনজুরি প্রবণতা খুব বেশি। এ বিষয়টা কতটা চিন্তার?

যে পেস বোলার টিমে আসছে দয়া করে দেশের হয়ে লম্বা সময় ধরে খেলার জন্য যেন নিজেকে একটু টেককেয়ার করে। তাহলে আমরা আরও বেটার সার্ভিস পাব। আমাদের ভালো ফাস্ট বোলার আছে; কিন্তু ইনজুরিতে পড়ে যাচ্ছে। ঠিকঠাক যত্ন নিলে হয়ত ইনজুরি প্রবণতা কমে আসবে। নিজের দায়িত্বই এখানে বড়।

আপনি নির্বাচক ছিলেন। সাকিব-তামিম-মুশফিকদের আপনারাই দলে এনেছিলেন। এখন তারা বড়মানের ক্রিকেটার। কেমন লাগে?

খেলা ছাড়ার পর আমি নির্বাচকের দায়িত্বে ছিলাম সাত-আট বছর। দলের ম্যানেজার ছিলাম। সাকিব-তামিম-মুশফিকদের সঙ্গে অনেক ট্রাভেল করেছি। ওরা যখন ছোট, তখন ওদের নিয়ে শ্রীলঙ্কা ইংল্যান্ডে ট্যুরে গিয়েছি। ওদের সঙ্গে আমি অনেক সময় কাটিয়েছি।

ভাবতেই ভালো লাগে ওরা এখন দেশের আইকন ক্রিকেটার। আমি ওদের শুরু চোখের সামনে দেখেছি। তারপর ওরা জাতীয় দলে গেল। ২০০৭ সালে বিশ্বকাপে গেল। ওই বিশ্বকাপে আমরা ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারালাম।

২০০৭ এর বিশ্বকাপে খালেদ মাসুদ পাইলটের জায়গায় মুশফিকুর রহিম দলে এলেন। কত কঠিন ছিল সিদ্ধান্তটা?

মুশফিক তার আগে কিন্তু ইংল্যান্ডে টেস্ট খেলেছে। এটা অ্যাডভানটেজ ছিল। খুবই কঠিন একটা সিদ্ধান্ত। একজনের সিদ্ধান্তে তো কোনও কিছু হয় না। সিলেকশন বোর্ড, ওখানে কোচ ডেভ হোয়াটমোর ছিলেন। কেন একটা প্লেয়ার বাদ পড়বে মোটামুটি সবাই একমতে আসা হয়। সেটা ছিল অনেক কঠিন সিদ্ধান্ত।

প্লেয়ার নির্বাচনের ক্ষেত্রে কোন বিষয়গুলো বিবেচনা করা উচিত বলে আপনার মনে হয়?

যে প্লেয়ারকে আনব, আমাদের নিশ্চিত করে আনতে হবে আনলে যেন লম্বা সময় খেলতে পারে। হুট করে আনলাম খেলালাম দুটা ম্যাচ খেলে চলে গেল। এমনটা হলে ক্রিকেটার ও নির্বাচক দুই পক্ষের জন্যই খারাপ। আমাদের দায়িত্ব হবে যাকে নিচ থেকে উপরে তোলার টার্গেট রাখব যেন ধারণা করা যায় আন্তর্জাতিক পারফর্মার হতে পারে।

কিছু প্লেয়ার আছে যারা ঘরোয়া ক্রিকেটে ভাল করে কিন্তু আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পারফর্ম করতে পারে না। ঘরোয়া ক্রিকেটে রান করল আর সুযোগ দিয়ে দিলাম। ব্যাপারটা এমন হওয়া উচিত না। দেখতে হবে রান করার পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার মত অ্যাবিলিটি তার কতটুকু।
১৩ এপ্রিল ২০১৭/এমটিনিউজ২৪/হাবিব/এইচআর

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে