স্পোর্টস ডেস্ক: মঞ্চটা ছিল ‘শচীন-আ বিলিয়ন ড্রিমস’-এর ট্রেলারের মুক্তি। দক্ষিণ শহরতলির মাল্টিপ্লেক্সে তখনও মাস্টার ব্লাস্টারের আবির্ভাব হয়নি। তার অনেক আগে থেকেই প্রেক্ষাগৃহে ‘শচীন শচীন’ ধ্বনি। উত্তেজনা চরমে পৌঁছাল, যখন আধা ফর্ম্যাল পোশাকে নায়কের আবির্ভাব হল। সেই দিনগুলো ফিরে এল, যখন কোটি কোটি ভারতবাসী অপেক্ষা করে থাকতেন, কখন ভারতের দ্বিতীয় উইকেট পড়বে।
শচীনও শুরুতেই ফিরে গেলেন সেই শুরুর দিনটায়, ‘১৯৯২ সালে যখন প্রথম প্রেস কনফারেন্সে এসেছিলাম, তখন যেরকম নার্ভাস লেগেছিল, আজ ঠিক সেরকমই লাগছে। তখনও জানতাম না, সাংবাদিক সম্মেলনে কী হয়। আসার আগে ড্রেসিংরুমে সবাইকে জিজ্ঞেস করে এসেছিলাম, কী হতে পারে। ওরা তো আরও ভয় পাইয়ে দিয়েছিল। বলেছিল, একের পর এক প্রশ্ন ধেয়ে আসবে। আজও সেরকমই অনুভূতি হচ্ছে। তবে এটা স্পেশাল। ’
তবে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হতে হয়নি তাঁকে। ১৫ মিনিট ছিলেন। তারপরেই চলে যান আইপিএলের স্টুডিওতে। ওই ১৫ মিনিটে বলেন, ‘এই সিনেমাটা শুধু আমার ক্রিকেট নিয়ে নয়। আমার জীবনে আরও অনেক অধ্যায় আছে। কখনও ভাবিনি, আমার জীবনটা এই জায়গায় পৌঁছাবে। শুধু ব্যাট হাতে ভারতের হয়ে ক্রিকেট খেলতে চেয়েছিলাম। সেটাই আমার স্বপ্ন ছিল। ’
এরপর আইপিএলের স্টুডিওতে এসে তাঁর ছবি নিয়ে শচীন বললেন—
• আমি খুব ঘরোয়া মানুষ। তাই ক্রিকেট মাঠের বাইরে আমি কীরকম, সেটা অনেকেই জানতে পারেননি। জানি, সবাই সেগুলো জানতে চান। এই সিনেমা সেগুলোই তুলে ধরবে। মানুষ কতটা জানতে চান, আর আমি কতটা জানাতে চাই, তার মধ্যে একটা ভারসাম্য যেন থাকে, সেটা আমাকে ঠিক করতে হয়েছে। মনে হয়েছে নিজেকে চেনানোর এটাই সেরা মঞ্চ। যা কেউ আগে কখনও দেখেননি, জানেননি আমার সম্পর্কে, এ ছবিতে সেটাই দেখবেন সবাই।
অজানা শচীনের কিছু নমুনাও তুলে ধরলেন তিনি।
● ছোটবেলায় শুধু খেলতে চাইতাম। ক্রিকেট, ফুটবল, হকি, হ্যান্ড টেনিস সব চলত। আমাদের বাড়িতে তখন একজন পরিচারিকার কাজ করতেন। তিনি আমার জন্য দুধ, খাবার নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতেন, পেছন পেছন ঘুরতেন। জানি না, বাবা-মা কী করে সামলেছেন আমাকে।
● স্কুল শেষ হওয়ার পর আমাদের হাতে খেলার জন্য খুব কম সময় থাকত। তাই ম্যাচ যাতে তাড়াতাড়ি শেষ হয়, তার জন্য আমরা নিয়ম করেছিলাম, ডানহাতিরা বাঁহাতে এবং বাঁহাতিরা ডান হাতে ব্যাট করবে। ফলে বাঁহাতে ব্যাট করাটাও আমি বেশ রপ্ত করে ফেলেছিলাম। একবার ওয়ার্ল্ড কাপের আগে নেটে এমনিই বাঁহাতে ব্যাট করছিলাম। তা দেখে গুজব ছড়িয়েছিল, আমি নাকি ওয়ার্ল্ড কাপে বাঁহাতে ব্যাট করব! এটা নাকি আমার নতুন টেকনিক!
ভারতের প্রাক্তন পেসার বিবেক রাজদান একটা মজার তথ্য ফাঁস করলেন শচীন সম্পর্কে, ‘১৯৯০ সালে নিউজিল্যান্ডে একটা ওয়ান ডে ম্যাচ চলছিল। শচীন চোট পেল। মাঠে স্ট্রেচার ছিল না। আমি গিয়ে শচীনকে সেটা বললাম। ও বলল, ‘আমায় কোলে করে নিয়ে চল। ’ আমার তো জিভ বেরিয়ে গেছে। খানিকটা যাওয়ার পর দেখি স্ট্রেচার আসছে। ধড়ে প্রাণ এল। শচীনকে বললাম, ‘শচীন, স্ট্রেচার আসছে। ’ ও বলল, ‘আমি এখানেই ভাল আছি!’-আজকাল
১৪ এপ্রিল ২০১৭/এমটিনিউজ২৪ডটকম/এপি/ডিসি