সোমবার, ০১ মে, ২০১৭, ১০:৩৫:১৯

অথচ, তাঁকেই আমরা গলাধাক্কা দিয়েছিলাম!

অথচ, তাঁকেই আমরা গলাধাক্কা দিয়েছিলাম!

মাহিয়ান মিশুক: মহানায়কের ৬৬ তম জন্মদিনে আক্ষেপ করা ছাড়া কি বা করতে পারি আমরা!

বাংলাদেশের ক্রিকেট এখন বিশ্বমানের। স্বপ্ন এখন আরও ওপরে ওঠার। শুধু সুনাম কুড়ানোই নয়, আমরা এখন স্বপ্ন দেখি বিশ্ব জয়ের। এই অবস্থানে দাঁড়িয়ে একজনের নাম না নিলেই নয়।

তিনি হলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের গর্ডন গ্রিনিজ, ওয়েস্ট ইন্ডিজের কিংবদন্তি। আমাদের জন্য কিংবদন্তি বললেও আসলে কম বলা হয়। বাংলাদেশের জন্য তিনি সত্যিই ছিলেন এক পরশ পাথর। তাঁর জাদুর কাঠির সোনার স্পর্শে বদলে যায় আমাদের ক্রিকেট।

বিশ বছর আগে, ১৯৯৭ সালে আইসিসি ট্রফিতে বাংলাদেশের কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি আমাদের সেই দলটার পেছনে যথেষ্ট পরিশ্রম করেন। দলের সবার মধ্য থেকে সেরাটা বের করে আনার অন্যতম কারিগরও ছিলেন তিনি।  সেবার চ্যাম্পিয়ন হয় বাংলাদেশ। প্রথমবারের মত বিশ্বকাপের মত মঞ্চে নিজেদের প্রমাণ করারও সুযোগ পায় দলটি।

এমন অর্জনের পর তো তিনি তো আমাদেরই একজন হয়ে গেলেন। বাংলাদেশ ক্রিকেট দলে তাঁর অসামান্য অবদানের জন্য তৎকালীন বাংলাদেশ সরকার গর্ডন গ্রিনিজকে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব প্রদান করেন।

তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ ও তাঁর কাজের প্রতি সম্মান প্রদর্শনেই সরকার তাকে এদেশের একজন নাগরিক হিসেবে গ্রহণ করে নেন। আসলে ক্যা‌রিবীয় এই তারকার কাছে আমা‌দের কত ঋণ, এটা ব‌লে শেষ করার মতো নয়!

এর দু’বছর বাদে ইংল্যান্ডে বিশ্বকাপ খেলতে যায়। মাঝে ১৯৯৮ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে কেনিয়াকে হারানোর মধ্য দিয়ে প্রথমবারের মত জয়ের স্বাদ পায় বাংলাদেশ। বিশ্বকাপটাও চলে যাচ্ছিল মোটামুটি ভালই। গ্রুপ পর্যায়ে স্কটল্যান্ডকে হারায় বাংলাদেশ।

মূল ঘটনা ঘটে, নর্দাম্পটনে পাকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক ম্যাচ শুরু হওয়ার ঘণ্টাখানেক আগে। ক্যারিবিয়ান ক্রিকেটের ইতিহাসের অন্যতম সেরা এই ওপেনারের হাতে বিদায়ের চিঠি ধরিয়ে দেয় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।

পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচের কিছুক্ষণ আগে খেলোয়াড়দের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে যান তিনি। বলে যান, ‘আমার কাছে এসে গর্ডন বলল, আকরাম আমি যাচ্ছি, তোমাদের ক্রিকেট বোর্ড আমাকে বরখাস্ত করেছে। ভালো থেকো।’

সেই বিদায়টা আকরাম খান, খালেদ মাহমুদ সুজন, আমিনুল ইসলাম বুলবুলদের কতটা তাঁতিয়ে দিয়েছিল, তার প্রমাণটা পাওয়া গিয়েছিল মাঠে। সেদিন সেবারের বিশ্বকাপের রানা আপ দল পাকিস্তানকে হারিয়ে দিয়ে ইতিহাস গড়েছিল বাংলাদেশ।

ধারণা করা হয়, ওই সময় বিসিবির সাথে টানাপোড়েন চলছিল গ্রিনিজের। প্রথম শ্রেণির কোনো পূর্ণাঙ্গ কাঠামো ছিল না। তারপরও টেস্ট স্ট্যাটাস পেতে উঠে পড়ে লেগেছিল বোর্ডের কর্তারা। গ্রিনিজের মতে, টেস্ট খেলার জন্য বাংলাদেশ তখনও ​তৈরি ছিল না।

ব্যস, তাঁতেই কপাল পোড়ে এই ক্যারিবিয়ানের। ১০৮ টেস্টে ৭৫৫৮ রান, আর ১২৮ ওয়ানডেতে ৫১৩৪ রান করা মহানায়ককে আমরা গলাধাক্কা দিলাম। তাঁর ৬৬ তম জন্মদিনে এই নিয়ে আক্ষেপ করা ছাড়া কি বা করতে পারি আমরা!-খেলাধুলা
এমটিনিউজ২৪ডটকম/এইচএস/কেএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে