বিপিএল নিয়ে বিসিবির সাথে একমত হননি যেসব তারকা ক্রিকেটার
স্পোর্টস ডেস্ক : বাংলাদেশ ক্রিকেট লীগে (বিপিএল) ক্রিকেটারদের সম্মানীর অংকে লাগাম টেনে ধরতে নিলামের পরিবর্তে প্লেয়ার্স ড্রাফট কৌশল বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল প্রবর্তন করায় সাশ্রয়ী বাজেটে দল গঠন করতে পেরেছে ৬টি ফ্রাঞ্চাইজির সবাই। বিপিএল ‘টু’তে খেলোয়াড় সংগ্রহের বাজেটের অর্ধেকেরও কমে নেমে এসেছে বিপিএল ‘থ্রি’র বাজেট।
বিপিএল’র সর্বশেষ সংস্করণে (বিপিএল ‘টু’) যেখানে নিলাম অনুষ্ঠানে ৯৫ ক্রিকেটারকে (অংশগ্রহণ না করা পাকিস্তানের ২৬ ক্রিকেটারকে বাদ দিয়ে) কিনতে ৭ ফ্রাঞ্চাইজিকে নিলামে দর হাঁকাতে হয়েছে যেখানে ৫৬ কোটি ৬ লাখ ৪৩ হাজার টাকা, সেখানে আসন্ন বিপিএল থ্রি’র প্লেয়ার্স ড্রাফটে বিক্রি হওয়া ১০৫ ক্রিকেটারকে (প্লেয়ার্স ড্রাফট অনুষ্ঠানের আগে চুক্তিবদ্ধ ২৪ বিদেশী ক্রিকেটারসহ) কিনতে ৬ ফ্রাঞ্চাইজির বাজেট দাঁড়াচ্ছে ৩১ কোটি ১০ লাখ টাকা। ২০১৩ সালে অনুষ্ঠিত বিপিএল ‘টু’তে যেখানে নিলামে ওঠা ক্রিকেটারদের নিয়ে দল গড়তে গড়পড়তা সাড়ে ৯ কোটি টাকা খরচের অঙ্গীকার করতে হয়েছে, এবার সেখানে ৫ কোটি’র ঘরে রাখতে হচ্ছে এই বাজেট।
ফ্রাঞ্চাইজি ফি এবং দল গঠনে ৬ থেকে ৭ কোটি টাকা খরচ হবে বলে ফ্রাঞ্চাইজিদের যে ধারণা দেয়া হয়েছিল বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের পক্ষ থেকে, সেই বাজেটেই বিপিএল ‘থ্রি’ সম্পন্ন করতে পারবে এক একটি ফ্রাঞ্চাইজি।তবে ক্রিকেটারদের সম্মানীর অংকে লাগাম টেনে ধরতে এবার স্থানীয় ক্রিকেটাররা প্রত্যাশিত আয় থেকে হচ্ছেন বঞ্চিত। বিপিএল ‘টু’তে যেখানে স্থানীয় ক্রিকেটারদের নিলাম মূল্য দাঁড়িয়েছিল ৩১ কোটি ২৩ লাখ ১২ হাজার টাকা, এবার সেখানে স্থানীয় ৬৩ ক্রিকেটারের পেছনে গুণতে হবে ফ্রাঞ্চাইজিদের ১২ কোটি ৪৪ লাখ টাকা!
তবে স্থানীয় ৬৩ ক্রিকেটারের সম্মানীর সমষ্টিকে এবার ছাড়িয়ে যাচ্ছে বিদেশী ৪৩ ক্রিকেটার। বিপিএল’র সর্বশেষ আসরে যেখানে নিলামে ওঠা ৪২ বিদেশী ক্রিকেটারকে পেতে নিলামে দর হেঁকেছে ফ্রাঞ্চাইজিরা ১৪ কোটি ৮৩ লাখ ৩২ হাজার টাকা, এবার সেখানে ৪৩ বিদেশী ক্রিকেটারের (প্লেয়ার্স ড্রাফটের আগে বিক্রি হওয়া ২৪ বিদেশী ক্রিকেটারসহ) সম্মানীর পেছনে ৬ ফ্রাঞ্চাইজিকে গুণতে হবে ১৮ কোটি ৬৬ লাখ টাকা।
বিপিএল নিয়ে বিসিবির সাথে একমত হননি কয়েকজন ক্রিকেটার । বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের বেঁধে দেয়া সর্বোচ্চ দর ৭০ হাজার মার্কিন ডলারে খেলতে রাজি হননি ক্রিস গেইল, আফ্রিদি, রবি বোপারা, শোয়েব মালিক, সাঙ্গাকারাসহ অনেকেই। এ কারণে দল মালিকরা ব্যক্তিগত ভাবে দলে নিয়েছেন তদের।
নিলামে দর হেঁকে ক্রিকেটারদের পাওনা পরিশোধ করেনি অতীতের ২ আসরে ফ্রাঞ্চাইজিরা।
বাধ্য হয়ে তাদের সেই পাওনা পরিশোধ করতে হয়েছে বিসিবিকে এবং বকেয়া পেতে বড় ধরনের অর্থ ছাড় দিতে হয়েছে ক্রিকেটারদের। তবে স্থানীয় ক্রিকেটারদের পেছনে এবার যে অংক খরচ করতে হচ্ছে এক একটি ফ্রাঞ্চাইজিকে, তার চেয়েও বড় বাজেটে ঢাকার প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লীগে শীর্ষস্থানীয় দলগুলোকে স্থানীয় ক্রিকেটারদের গড়তে হয়েছে গত আসরে দল।
সাকিব, তামীম, মুশফিকুরদের এক একজনের অংক যেখানে গত বছর প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লীগে ছাড়িয়ে গেছে অর্ধকোটি টাকা, এবার বিপিএলএ তাদেরকে ৩৫ লাখ টাকায় থাকতে হচ্ছে সন্তুষ্ট। যে মিডিওকার ক্রিকেটারদের পেছনে প্রিমিয়ার ডিভিশনের সর্বশেষ আসরে গড়পড়তা ৩০ লাখ টাকা গুণতে হয়েছে ক্লাবগুলোকে, বিপিএলএ সেই মিডিওকারদের সম্মানীর অংক এবার ১২ থেকে ১৮ লাখের ঘরে। প্লেয়ার্স ড্রাফট অনুষ্ঠানে বিক্রি হওয়া স্থানীয় ক্রিকেটার সংগ্রহে এবার বাজেটে সবাইকে ছাড়িয়ে গেছে বরিশাল বুলস।
১১ স্থানীয় ক্রিকেটার সংগ্রহে ২ কোটি ২৪ লাখ টাকা খরচ করতে হচ্ছে তাদেরকে। বিদেশী ক্রিকেটার সংগ্রহে বাজেট সবচেয়ে বেশি রংপুর রাইডার্সের। ৩ কোটি ৪৬ লাখ টাকা খরচ হচ্ছে তাদের ৬ বিদেশী ক্রিকেটারের সম্মানী খাতে। ১৯ জন দেশী বিদেশী ক্রিকেটার সংগ্রহে সবেচেয়ে বেশি ৫ কোটি ৩৮ লাখ টাকা খরচ করতে হচ্ছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের।
অথচ কি জানেন, লটারী ভাগ্যে সাকিব, সৌম্যকে পেয়েও স্থানীয় ১০ ক্রিকেটার সংগ্রহে তাদের বাজেট সবচেয়ে কম, ১ কোটি ৭৫ লাখ টাকা মাত্র! খেলোয়াড় সংগ্রহে কার বাজেট কতোফ্রাঞ্চাইজি স্থানীয় ক্রিকেটারদের সম্মানী বিদেশী ক্রিকেটারদের সম্মানী মোট অংককুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স ২ কোটি ১৮ লাখ টাকা ৩ কোটি ২০ লাখ টাকা ৫ কোটি ৩৮ লাখ টাকা|
ঢাকা ডায়নামাইটস ১ কোটি ৯৮ লাখ টাকা ৩ কোটি ৩৬ লাখ টাকা ৫ কোটি ৩৪ লাখ টাকাচিটাগাং ভাইকিংস ২ কোটি ১৭ লাখ টাকা ২ কোটি ৯৬ লাখ টাকা ৫ কোটি ১৩ লাখ টাকাবরিশাল বুলস ২ কোটি ২৪ লাখ টাকা ২ কোটি ৭২ লাখ টাকা ৪ কোটি ৯৬ লাখ টাকাসিলেট সুপার স্টারস ২ কোটি ১২ লাখ টাকা ২ কোটি ৯৬ লাখ টাকা ৫ কোটি ৮ লাখ টাকারংপুর রাইডার্স ১ কোটি ৭৫ লাখ টাকা ৩ কোটি ৪৬ লাখ টাকা ৫ কোটি ২১ লাখ টাকামোট ১২ কোটি ৪৪ লাখ টাকা ১৮ কোটি ৬৬ লাখ টাকা ৩১ কোটি ১০ লাখ টাকা|-ইনকিলাব
২৪ অক্টোবর ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/হাবিব/এইচআর