জুবায়ের আল মাহমুদ রাসেল: বাংলাদেশ ক্রিকেটের দুই পেসার রুবেল হোসেন ও শাহাদাত হোসেন রাজীব হ্যাপীদের সাথে কাণ্ড ঘটিয়ে দুজনই এখন আনহ্যাপী। সর্বপ্রথম পেসার রুবেল হোসেন অভিনেত্রী নাজনিন আক্তার হ্যাপীর সাথে কথিত অনৈতিক সম্পর্ক অস্বীকার করায় মামলার ঘানি টানেন। আর সর্বশেষ জাতীয় ক্রিকেট দলের আরেক পেসার শাহাদাত হোসেন রাজীব মাহফুজা আক্তার হ্যাপীরকে অমানুষিক নির্যাতনের দায়ে মামলার ঘানি নিয়ে স্বস্ত্রীক পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।
বাংলাদেশ ক্রিকেটের কোটি ভক্ত যখন রুবেল-হ্যাপীর কাণ্ড ভুলতে বসেছিল, ঠিক তখন মুখোশ ধারি ক্রিকেটার শাহদাত তার গৃহপরিচিকা শিশু হ্যাপির উপর নির্যাতন চালিয়ে সংবাদের শিরোনাম হয়েছেন। সেই সাথে ঘৃণার পাত্র হয়েছেন দেশ-বিদেশের কোটি কোটি টাইগার ভক্তর। হ্যাপির শরীরে আঘাতের চিহ্ন সবাইকে ছুঁয়ে গেছে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতেও নিন্দার ঝড় বয়ে গেছে। ক্রিকেটারদের সঙ্গে যাদের সখ্য সেই ক্রীড়া সাংবাদিকরাও শাস্তি দাবি করেছেন শাহাদাতের!
স্পর্শকাতর এই বিষয়টিকে অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে নিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। এরই মধ্যে শাহাদাতকে সব ধরণের ক্রিকেট থেকে সাময়িক নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বোর্ডের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যত দিন হ্যাপির মামলার সুরাহা না হবে ততদিন শাহাদাত কোন ধরণের ক্রিকেট খেলতে পারবে না। বিসিবি’র এই সাহসি সিদ্ধান্ত সর্বমহলে প্রশংসা কুড়িয়েছে। সস্ত্রীক পলাতক শাহাদাত বোর্ড সভাপতি নাজুমল হাসানের দ্বারস্থ হয়েছিলেন হ্যাপিকান্ডের সমাধান খুঁজতে। ক্রিকেটারদের বড় অভিভাবক হয়েও কতটা নাখোশ হলে তিনি শাহাদাতকে সাক্ষাৎ দেননি সেটা বুঝতে বিশেষজ্ঞ হওয়ার দরকার পড়ে না।
ক্রিকেট পরাশক্তিদের একের পর এক হারিয়ে বিশ্বক্রিকেটে প্রতিষ্ঠিত শক্তি হওয়ার পথে বাংলাদেশ। তখন হ্যাপী কণ্ডের বেড়াজালে পড়ে বাংলাদেশের মুখে চুনকালি দিতে ব্যস্ত দুই তারকা ক্রিকেটার। হ্যাপীকাণ্ড ঘটিয়ে টাইগার শিবিরের দুই তারকা ক্রিকেটারের আসল চরিত্র ফুটে উঠেছে। কিন্তু একটা প্রশ্ন থেকেই যায়, এদের কুকর্ম মিডিয়ার সামনে ধরা পড়েছে বলেই এদের মুখোশ খুলে গেছে। কিন্তু বাঁকিরা ভালো আছে তো? এমন প্রশ্ন তোলা এখন খুব বেশি অযৌক্তিক কি?
বিশ্বকাপের আগে চিত্রনায়িকা নাজনিন আক্তার হ্যাপি পেসার রুবেল হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা ঠুঁকে দিয়ে হইচই ফেলে দিয়েছিলেন। এর জেরে রুবেলকে জেলও খাটতে হয়েছিল। বিশ্ব সংবাদমাধ্যমের ‘হটকেক’- পরিণত হয়েছিল রুবেল-হ্যাপির বিষয়টি। রুবেল বিশ্বকাপ খেলতে পারবেন কি না, এনিয়েও তৈরি হয় সংশয়। শেষ পর্যন্ত আইনি লড়াইয়ে জিতে বিশ্বকাপ খেলেন রুবেল।
ক্রিকেটরদের কাছে ভক্তদের একটাই চাওয়া, ক্রিকেটাররা যেন মাঠের মতো ভালো পারফর্মেন্স ব্যক্তি জীবনেও করেন। কারণ তারা তারকা, তাদের ব্যক্তি জীবনের উপরও বর্হিবিশ্বের কাছে আমাদের দেশের মান সম্মান নির্ভর করে। কাছেই প্রত্যেক ক্রিকেটার তাদের নিজেদের ব্যক্তি জীবনে আরো সৃজনশীল হয়ে ওঠবে এমনটাই প্রত্যাশা সবার।
১৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/রাসেল/এমআর