জুতা কেনার সামর্থ্য নেই, খালি পায়ে নেমেই মুচির মেয়ের স্বর্ণ জয়
স্পোর্টস ডেস্ক: বাবা মঙ্গেশ মহৈশুনে একজন দিনমজুর। মুচির কাজ করে সংসারটা কোন রকম চালিয়ে নিচ্ছেন। নুন আনতে পান্তা ফুরায় এই যা অবস্থা আর কি। মেয়ে সায়লিকে নতুন জুতো কিনে দেবেন, সে সামর্থ্য নেই বাবা মঙ্গেসের।
তো কী হল! ভেঙ্গে পড়ার মত মেয়ে নয় সায়লিকা। হা-হুতাশ না-করে, খালি পায়েই ট্র্যাকে নেমে পড়েন এই প্রতিশ্রুতিমান স্প্রিন্টার। নাম কা ওয়াস্তে নামা নয়, আর সকলকে বার বার পিছনে ফেলে, ট্র্যাকে সবার আগে শেষ করে সে। সোনার পদক না-নিয়ে ঘরে ফেরে না। স্কুল পর্যায়ে একের পর এক সোনা। তা সে ১০০ মিটার হোক, ২০০ মিটার, ৪০০ মিটার কিংবা ৩০০০ মিটার। আন্তঃস্কুল অ্যাথলিটে গত সোমবারই অনূর্ধ্ব ১৭ বিভাগে সে ৩০০০ মিটার দৌড় শেষে করেছে ১২:২৭.৮ সেকেন্ডে।
মেয়ের এই সাফল্যে আত্মহারা বাবা। মেয়ের খেলা দেখতে যাওয়ার খুবই শখ তার। কিন্তু গেলে যে বাতি জ্বলবে না তার পরিবারে।জানালেন পরিবারে অন্ন জোগান দেয়া তার কাছে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।' দাদারের দোকানে বসে, জুতো পালিশ করার ফাঁকেই বলছিলেন মঙ্গেশ।
কথায় কথায় জানালেন, ‘মাস গেলে তাঁর আয় তিন থেকে দশ হাজারের মধ্যে। এই সামান্য টাকার সিংহভাগই চলে যায় দুই মেয়ের পড়াশোনার খরচ জোগাতে। দুই মেয়ের মধ্যে সায়লি ছোট। বড় মেয়ে ময়ূরীর বয়স এখন ১৭, তথ্যপ্রযুক্তিতে ডিপ্লোমা করছেন। স্ত্রী সবিতা শারীরিক ভাবে সুস্থ নন। ঘন ঘন রোগে ভোগেন। ফলে, দুই মেয়ের পড়া, খাওয়া খরচ, স্ত্রীর চিকিত্সা... কী ভাবে যে সামাল দেবেন, কূলকিনারা পান না। তবে, সংসারে যত অভাব, কষ্টই থাক, মেয়ের জন্য খুবই গর্ববোধ করেন মঙ্গেশ।’
যাকে ঘিরে বাবার এত স্বপ্ন, সেই সায়লি পড়ছে ক্লাস নাইনে। ষোল এখনও হয়নি। জানায়, নওগাঁও পুলিশ গ্রাউন্ড মাঠেই চলে তার অনুশীলন। কখনও শুকনো খটখটে ময়দানে। কখনও বর্ষার জলকাদায়। রোদে ঘেমে, বৃষ্টিতে ভিজে চলে অবিরত দৌড়। লক্ষ্য একদিন দেশের প্রতিনিধিত্ব করা। অনেক দূর যে যেতে হবে তাকে। সূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া
২৫অক্টোবর,২০১৫/এমটিনিউজ২৪/আরিফুর রাজু/এআর
�