হেরে যাওয়াকে খুবই ঘৃণা করেন মেসি
স্পোর্টস ডেস্ক: পায়ে চোট পেয়ে মাঠের বাহিরে আছেন আর্জেন্টাইন ফুটবল দলের নায়ক লিওনেল মেসি। দেশের প্রিয় সর্তীথদের থেকে শুরু করে ক্লাবের কোচ এনরিকে পর্যন্ত তার ফিরে আসার অপেক্ষায় প্রহর গুনছেন। আর্জেটিনাকে বাঁচাতে দেশের জার্সিতে দ্রুত মাঠে ফেরার চাপ, এ নিয়ে ক্লাব-দেশ দ্বন্দ্ব কি সত্যি? ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর সঙ্গে রেষারেষি তাঁকে কোনও ভাবে সাহায্য করে? তাঁর আত্মজীবনীর লেখককে সাক্ষাৎকারে খোলাখুলি জানালেন লিওনেল মেসি। এমটিনিউজের পাঠকদের জন্য সাক্ষাৎকারটি দেয়া হল।
প্র: থিয়াগোর পর মাতেও। দ্বিতীয় সন্তান আসার পর ফুটবল নিয়ে আপনার দৃষ্টিভঙ্গিটা কি বদলেছে?
মেসি: ফুটবল নিয়ে যদি বলেন, তা হলে বলব কিছু পাল্টায়নি। তবে এক জন বাবা হিসেবে বদলেছে। দায়িত্ব বেড়ে গিয়েছে। সন্তানদের বড় করার দায়িত্ব।
প্র: আপনার মতো ফুটবলারকে নিয়ে বলা হয়, প্রত্যেকটা হার মানে ছোট-ছোট মৃত্যু। হারার পর আপনি অনেক সময়ই কেঁদেছেন। বাবা হওয়ার পর হারটাকে কী ভাবে নেন?
মেসি: হেরে যাওয়াকে প্রবল ভাবে ঘৃণা করি। এখনও। বাবা হওয়ার সঙ্গে হার নিয়ে নিজের মানসিকতা বদলে যাওয়ার কোনও সম্পর্ক নেই। তবে এখন জানি, হারের পর বাড়ি ফিরে সান্ত্বনা হিসেবে ছেলেদের সঙ্গে সময় কাটানোটা আছে।
প্র: ফুটবল বিশ্বকে অনেক সময় চেনা যায় না। কখনও মিথ্যেকে ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে দেখানো হয়, কখনও কম গুরুত্বপূর্ণ কিছুকে ঠেলে দেওয়া হয় সামনে। নিজেকে তখন কি অন্য গ্রহের বাসিন্দা মনে হয়? মনে হয়, পাগলদের দুনিয়ায় আপনি এক কিশোর?
মেসি: আসলে আমরা এমন একটা সমাজে বাস করি যেটা ঘণ্টায় এক হাজার কিমি গতিতে ছুটছে। মানুষের সমস্যা বাড়ছে। আর ফুটবল এমন একটা জনপ্রিয় খেলা যে অনেকে এখানে নিজেদের সমস্যা থেকে বেরিয়ে আসার রাস্তা খোঁজেন।
প্র: মাঠে আপনার ভূমিকা এখন বদলেছে। গোল করার পাশাপাশি দলকে গোছানোর দিকটাও সামলাতে হচ্ছে। এই পরিবর্তনটা কতটা স্বাভাবিক?
মেসি: দেখুন প্রত্যেকটা ম্যাচের জন্য যা প্রয়োজন সেটা আমরা করতে থাকব। ফরোয়ার্ডে গোল করার মতো কখনও কখনও মাঠে নীচে নেমে সাহায্য করাটাও জরুরি।
প্র: ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর সঙ্গে একই যুগে খেলাটা লিওনেল মেসিকে কি সাহায্য করে?
মেসি: এটা অনেকে বলে। ক্রিশ্চিয়ানোর সঙ্গে আমার কোনও লড়াই নেই। আশা করি ওর ক্ষেত্রেও ব্যাপারটা একই। আমি চাই টিমের জন্য নিজের সেরাটা দেওয়ার, সেটাই আমার কাছে সব কিছু।
প্র: আপনার সঙ্গে আর্জেন্তিনার সম্পর্ককে কি ‘মিঠে-কড়া’ বলা যায় ?
মেসি: সত্যিটা হল আমরা আর্জেন্তিনীয়রা খুব আবেগপ্রবণ। ফুটবল তারকাদের আমরা মাথায় তুলে রাখি, তবে অনেকেই আছেন দেশের জার্সিতে খেলা প্লেয়ারদের সম্মান দেন না। তবে সেটা তো সবার নিজস্ব মতামতের উপর নির্ভর করে।
প্র: অন্য কোনও লিগে খেলা নিয়ে কোনও পরিকল্পনা?
মেসি: বেশি দূরের দিকে এখন তাকাতে চাই না। আমি এই মুহূর্তে বার্সেলোনার ফুটবলার, আর খেলি স্প্যানিশ লিগে, যেখানে আমার একটা জায়গা রয়েছে। আর এখানে আমি বেশ ভাল আছি।
প্র: কখনও দিনে স্বপ্ন দেখেন?
মেসি: জেগে স্বপ্ন দেখি না। পরিবারের সঙ্গে সব সময় মিলেমিশে থাকতে চাই। এটাই আমার কাছে স্বপ্ন ছাড়া দিন কাটানো। নিশ্চয়ই নানা ধরনের আশা-আকাঙ্ক্ষা আছে। তবে সেটা একান্তই ব্যক্তিগত।
প্র: চোট লাগার সময় কী মনে হচ্ছিল?
মেসি: অদ্ভুত লাগছিল। বুঝতে পেরেছিলাম এটা সাধারণ চোট নয়, বড় চোট।
প্র: ফের কবে ফুটবলে পা দিতে পারবেন বলে মনে হচ্ছে?
মেসি: যখন নিজের মনে হবে আমি ঠিক আছি। যখন ডাক্তাররাও সেটা বলবেন। প্রত্যেক দিন আমি একটু একটু করে সুস্থ হয়ে উঠছি। কোনও লক্ষ্য স্থির করে এগোচ্ছি না। কেন না সেটা আমার হাতে নেই। আমি তো কালকেই মাঠে নামতে চাই, কিন্তু ডাক্তাররা অনুমতি দেবেন না। যখন ওঁরা জানাবেন আমি সম্পূর্ণ সুস্থ, তখনই মাঠে ফিরব। সূত্র : আনন্দ বাজার পত্রিকা
২৫অক্টোবর,২০১৫/এমটিনিউজ২৪/আরিফুর রাজু/এআর