সিরিজ হারের পর কিউরেটরের সঙ্গে ঝামেলায় জড়িয়েছেন রবি শাস্ত্রী
স্পোর্টস ডেস্ক: ওয়াংখেড়েতে সিরিজ নির্ণায়ক ওয়ান ডে-তে ভারতের বিশ্রী হারের পর পিচ কিউরেটরের সঙ্গে তীব্র ঝামেলায় জড়িয়ে পড়লেন ভারতীয় টিম ডিরেক্টর রবি শাস্ত্রী। এমনকী ওয়াংখেড়ে কিউরেটর সুধীর নায়েককে গালিগালাজ করার অভিযোগও উঠে পড়ল শাস্ত্রীর বিরুদ্ধে। যার মধ্যে শেষ পর্যন্ত ঢুকে পড়ল বোর্ডও।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে সিরিজের শেষ ওয়ান ডে-তে যে পিচ দেওয়া হয়েছিল, তাতে টার্নের কোনও নামগন্ধ ছিল না। এবং টস জিতে প্রথমে ব্যাট করে ৪৩৮ তুলে দেয় দক্ষিণ আফ্রিকা। এবি ডে’ভিলিয়ার্স সহ তিন জন দক্ষিণ আফ্রিকান ব্যাটসম্যান সেঞ্চুরি করে যান। ম্যাচে ভারতের ফেরার কোনও রাস্তাও আর ছিল না। সিরিজ নির্ণায়ক যুদ্ধে বিশ্রী ভাবে হারতে হয় ভারতকে। যা নিয়ে নাকি কিউরেটরের সঙ্গে ভাল রকম লেগে যায় শাস্ত্রীর। যা মিডিয়ায় বেরিয়েও যায়। শাস্ত্রী নাকি প্রথমে সুধীরকে তির্যক ভাবে বলেন যে, দুর্দান্ত উইকেট হয়েছে! তার পরই মরাঠিতে গালাগাল দেন। নায়েকও নাকি চুপ করে থাকেননি। তিনিও ভারতীয় টিম ডিরেক্টরকে পাল্টা শুনিয়ে দেন, ‘‘তোমার থেকে উইকেট নিয়ে আমি কথা শুনব না। ভারতের হয়ে আমিও খেলেছি।’’ নায়েক যার পর বসে থাকেননি। সোজা মুম্বই ক্রিকেট সংস্থাকে জানিয়ে দেন শাস্ত্রী তাঁকে কী কী বলেছেন। সরকারি অভিযোগনামা জমা করে দেন বলেও খবর।
শাস্ত্রী বা নায়েক— মিডিয়ায় এখনও পর্যন্ত কেউ মুখ খোলেননি ব্যাপারটা নিয়ে। মুম্বইয়ে ফোন করলে বলা হল, নায়েকের সরকারি চিঠি এখনও জমা পড়েনি। কিন্তু ব্যাপারটা যে হয়েছে, শাস্ত্রী যে ঝামেলায় জড়িয়েছেন কিউরেটরের সঙ্গে, সেটা মেনে নিয়েছেন কেউ কেউ। এটাও বলা হচ্ছে যে, প্রাক্তন জাতীয় ক্রিকেটার সুধীর নায়েককে মাসখানেক আগেই আনা হয়েছে ওয়াংখেড়ের পিচ তৈরির দায়িত্বে। আর আনার এক মাসের মধ্যেই বিপর্যয়।
ভারতীয় শিবির যে ওয়াংখেড়ে উইকেট নিয়ে মোটেও খুশি নয়, তা ম্যাচ শেষে মহেন্দ্র সিংহ ধোনির সাংবাদিক সম্মেলনে বোঝা গিয়েছিল। ধোনি বলে দিয়েছিলেন যে, পিচ সম্পূর্ণ ব্যাটিং উইকেট ছিল। সেখানে টার্নের কোনও ব্যাপারই ছিল না। ম্যাচের আগের দিনও দেখা গিয়েছে শাস্ত্রী-সহ টিম ম্যানেজমেন্টের কেউ কেউ পিচের পাশে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে কিউরেটরের সঙ্গে কথা বলছেন। মিডিয়ায় বেরনো কোনও কোনও মুম্বই ক্রিকেট সংস্থার কর্তার কথা ধরলে, ওয়াংখেড়েতে নাকি টার্নার চেয়ে পাঠানো হয়েছিল ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্টের পক্ষ থেকে। বিশেষ করে চেন্নাইয়ে দক্ষিণ আফ্রিকাকে স্পিন-মন্ত্রে উড়িয়ে দেওয়ার পর দাবি আরও জোরালো হয়েছিল।
কিন্তু রাতারাতি ওয়াংখেড়ে পিচের চরিত্র পাল্টানো নিয়ে দোটানায় পড়ে যায় এমসিএ। তাদের কারও কারও বক্তব্য, ভারতীয় টিমের পক্ষ থেকে পিচ নিয়ে অনুরোধ এত দেরিতে আসে যে শেষ মুহূর্তে কিছু করা সম্ভব হয়নি। কারণ তখন কিছু করতে গেলে হিতে বিপরীত হয়ে যেতে পারত। তাই ঝুঁকি নেওয়া হয়নি। সাড়ে তিনশোর পিচই রেখে দেওয়া হয়। শাস্ত্রী-নায়েক ঝামেলার পর কেউ কেউ এটাও বলছেন যে, দক্ষিণ আফ্রিকার কোনও অসুবিধে হল না। তারা পিচের সঙ্গে মানিয়ে নিল। তা হলে এত কথাবার্তার মানে কোথায়?
সোমবার রাতের দিকে ভারতীয় বোর্ড সচিব অনুরাগ ঠাকুরকেও যা নিয়ে মুখ খুলতে হয়। বোর্ড সচিব বুঝিয়ে দেন যে, বিরাট কোহলির সঙ্গে ভারতীয় সাংবাদিকের ঝামেলার সময় বোর্ড যে রাস্তায় চলেছিল, এ বারও একই রাস্তা ধরা হবে। ‘‘শাস্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে কিউরেটরের সঙ্গে ঝামেলার। আমরা পুরো ব্যাপারটা খতিয়ে দেখব।’’ সঙ্গে আরও যোগ করেন, ‘‘অস্ট্রেলিয়ায় (পড়তে হবে বিরাট কোহলি কাণ্ডের সময়) আমরা যা করেছিলাম, এ বারও সেই রাস্তা ধরে এগনো হবে।’’ আনন্দবাজার
২৭ অক্টোবর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/রাসেল/মাহমুদ