সোমবার, ১৯ জুন, ২০১৭, ০৯:০৪:৪৫

ভারতের বিপক্ষে ফাইনাল ম্যাচে ১৩টি রেকর্ড করলো পাকিস্তান!

ভারতের বিপক্ষে ফাইনাল ম্যাচে ১৩টি রেকর্ড করলো পাকিস্তান!

স্পোর্টস ডেস্ক: লন্ডনের ওভালে অনুষ্ঠিত ফাইনালে গতকাল চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতকে ১৮০ রানের বিশাল ব্যবধানে হারিয়ে প্রথমবার আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির শিরোপা জয় করেছে উপমহাদেশের আরেক দল পাকিস্তান। টস হেরে প্রথমে ব্যাটিং করতে নেমে আজহার আলী (৫৯) ও ফখর জামানের(১১৪) উদ্বোধনী জুটিতে ১২৮ রানের সুবাদে ৪ উইকেট হারিয়ে ৩৩৮ রানের বিশাল সংগ্রহ দাঁড় করায় পাকিস্তান। পক্ষান্তরে ১৫৯ বল বাকি থাকতে ১৫৮ রানেই গুটিয়ে যায়। ভারতের পক্ষে মাত্র ৪৩ বলে সর্বোচ্চ ৭৬ রান করতে সক্ষম হন হার্ডিক পান্ডিয়া।

আটটি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ফাইনালের উল্লেখযোগ্য পরিসংখ্যান :
১. ৪ বিশ্বকাপ, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি এবং টি-২০ বিশ্বকাপ আইসিসির তিন ইভেন্টের সবক’টি শিরোপা জয় করা চতুর্থ দেশ পাকিস্তান। দলটি ১৯৯২ বিশ্বকাপ, ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত ২০০৯ টি-২০ বিশ্বকাপ এবং এবার চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির শিরোপা জয় করল। আইসিসি’র সব শিরোপা জয় অপর তিন দেশ হচ্ছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ, ভারত ও শ্রীলংকা।

২. ৭ আইসিসি ইভেন্টগুলোর ফাইনালে যুবরাজ সিংয়ের অংশগহণ। তিনি ২০০৩ এবং ২০১১ বিশ্বকাপ, ২০০৭ এবং ২০১৩ টি-২০ বিশ্বকাপ এবং চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ২০০০, ২০০২ আসরের পর সদ্য শেষ হওয়া টুর্নামেন্টের ফাইনালে অংশ নিলেন। যা যে কোন খেলোয়াড়ের সর্বোচ্চ সংখ্যা। ছয়টি করে ফাইনালে অংশ নেয়া কুমার সাঙ্গাকারা, মাহেলা জয়াবর্ধনে এবং রিকি পন্টিংকে ছাড়িয়ে যুবরাজ এখন সবার উপরে।

৩. ১৮ বছর ২৫৭ দিন আইসিসি ওয়ানডে টুর্নামেন্টের কোন ফাইনাল জেতা সবচেয়ে কম বয়সী খেলোয়াড় শাদাব খান। এর আগে ২০০০ চ্যাম্পিয়ন্স চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে এ রেকর্ডের মালিক ছিলেন যুবরাজ সিং (১৮ বছর ৩০৮ দিন)। এর আগে সবচেয়ে কম বয়সে এ রেকর্ডের মালিক ছিলেন পাকিস্তানের আকিব জাভেদ। ১৯৯২ বিশ্বকাপ ফাইনালে রেকর্ড গড়ার সময় জাবেদের বয়স ছিল ১৯ বছর ২৩৩ দিন।

৪. ১৩ বছর পর পাকিস্তানের উদ্বোধনী জুটির ১০০ বা ততোধিক রান সংখ্যা। গতকালের ফাইনালে আজহার আলী- ফখর জামান ওপেনিং জুটিতে ১২৮ রানের আগে সেমিফাইনালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সেমিফাইনালে ১১৮ রান করেন। সর্বশেষ ২০০৩ সালে ডিসেম্বরে নিজ মাঠে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ইয়াসির হামিদ ও ইমরান ফরহাত এ রেকর্ড গড়েছিলেন।

৫. ২৫২ কোনো পাকিস্তানি খেলোয়াড়ের প্রথম চার ওয়ানডে ম্যাচে ফখর জামানের রানের রেকর্ড। ইতোপুর্বে দেশটির হয়ে এ রেকর্ডের মালিক ছিলেন ২২৯ রান করা সেলিম এলাহি। একই সঙ্গে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে কোনো পাকিস্তানি খেলোয়াড়ের সর্বোচ্চ রানের রেকর্ডও গড়লেন জামান। নভোজাত সিধু, রবিন্দু শাহ, টম কুপার, পিটার ফরেস্ট এবং উসমান গনির পর নিজের প্রথম ওয়ানডে সিরিজে তিনটি হাফ সেঞ্চুরি প্লাস রান করা বিশ্বের ষষ্ঠ ও পাকিস্তানের প্রথম খেলোয়াড়ও এখন তিনি।

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির কোনো আসরে পাকিস্তানি খেলোয়াড়দের সর্বোচ্চ রান
খেলোয়াড় বছর ইনিংস রান সর্বোচ্চ গড় স্ট্রাইক রেট ১০০ ৫০প্লাস ৫০
ফখর জামান ২০১৭ ৪ ২৫২ ১১৪ ৬৩ ১১৩ ১ ২ ২
আজহার আলী ২০১৭ ৫ ২২৮ ৭৬ ৪৫.৬ ৭৪.০২ ০ ৩ ৩
সাঈদ আনোয়ার ২০০০ ২ ২০৯ ১০৫* ২০৯ ৮৩.৯৩ ২ ০ ০
মোহাম্মদ ইউসুফ ২০০৯ ৪ ২০০ ৮৭ ৫০ ৭৫.১৮ ০ ১ ১

৬. ০ ফখর জামানের আগে আইসিসি’র কোন টুর্নামেন্টের ফাইনালে পাকিস্তানের কোন খেলোয়াড় সেঞ্চুরি সংখ্যা। আইসিসি ইভেন্টের নকআউট পর্বের ম্যাচে সেঞ্চুরি করা অপর খেলোয়াড় হলেন সাঈদ আনোয়ার। তিনি তিনটি সেঞ্চুরি করেছিলেন। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে সেঞ্চুরি করা দ্বিতীয় খেলোয়াড়ও জামান। কেনিয়ায় ২০০০ আসরে সাঈদ আনোয়ার দু’টি সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছিলেন।

৭. ১১৪ ভারতের বিপক্ষে অভিষেক ইনিংসে পাকিস্তানী খেলোয়াড়দের মধ্যে সর্বোচ্চ রান ফখর জামানের। ভারতের বিপক্ষে অভিষেক ম্যাচেই সেঞ্চুরি করা পাকিস্তানের অপর খেলোয়াড় সালমান বাট। ২০০৪ সালে কোলকাতায় ১০৮ রান করেছিলেন বাট।

৮. ৩ ভারতের বোলার সংখ্যা যারা চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে ৬০ রানের বেশি খরচ করেছেন। এ তিন জন হলেন- রবিচন্দ্রন অশ্বিন ৭০, জসপ্রিত বুমরাহ ও রবীন্দ্র জাদেজা যথাক্রমে ৬৮ ও ৬৭ রান দিয়েছেন। এর আগে ২০০৪ আসরে ওভালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সর্বোচ্চ ৫৮ রান দিয়েছিলেন ইংল্যান্ডের ড্যারেন গফ।

৯. ৩৩৮/৪ ওয়ানডে ক্রিকেটে ভারতের বিপক্ষে সংগ্রহ করা পাকিস্তানের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান। ২০০৪ সালে করাচিতে সর্বোচ্চ ৮ উইকেটে ২৪৪ রান সংগ্রহ করেছিল পাকিস্তান। ২০০৪ সালে ওভালে নিউজিল্যান্ডের করা ৪ উইকেটে ৩৫৯ রানের পর চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানও এটা।
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে দলগত সর্বোচ্চ রান:
দল স্কোর প্রতিপক্ষ ভেন্যু তারিখ ফল
নিউজিল্যান্ড ৩৫৯/৪ যুক্তরাষ্ট্র ওভাল ১০ সেপ্টেম্বর,২০০৪ জয়ী
পাকিস্তান ৩৩৮/৪ ভারত ওভাল ১৮ জুন, ২০১৮ জয়ী
ভারত ৩৩১/৭ দক্ষিণ আফ্রিকা কার্ডিফ ৬ জুন, ২০১৩ জয়ী
ইংল্যান্ড ৩২৩/৮ দক্ষিণ আফ্রিকা সেঞ্চুরিয়ন ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০০৯ জয়ী
শ্রীলংকা ৩২২/৩ ভারত ওভাল ৮ জুন, ২০১৭ জয়ী
ভারত ৩২১/৬ শ্রীলংকা ওভাল ৮ জুন, ২০১৭ পরাজয়
২২.০০ আট ওয়ানডে ফাইনালে বিরাট কোহলির ব্যাটিং গড়। ৭৭.৭৭ স্ট্রাইক রেটে আট ইনিংসে তার মোট রান মাত্র ১৫৪। যার মধ্যে মধ্যে সর্বোচ্চ ৪৩ রান করেছেন ২০১৩ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে এজবাস্টনে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে।

১০. ৩২ বলে হার্ডিক পান্ডের হাফ সেঞ্চুরি। আইসিসি ওয়ানডে টুর্নামেন্টের কোন ফাইনালে যা এ যাবতকালে সবচেয়ে কম বলে। ইতোপুর্বে এ রেকর্ডটি গড়েছিলেন অস্ট্রেলিয়ার এডাম গিলক্রিস্ট। ১৯৯৯ বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে ৩৩ বলে হাফ সেঞ্চুরি করেছিলেন তিনি। একই দিন এর আগে ৩৪ বলে হাফ সেঞ্চুরি করেছিলেন মোহাম্মদ হাফিজ।

১১. ১৫ ফাইনালে ছক্কা সংখ্যা। যার নয়টি হাকিয়েছে পাকিস্তান এবং ছয়টি ভারত। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ম্যাচে এটাই সর্বোচ্চ ছক্কার ইনিংস। ১৪টি করে ছক্কা আছে ২০০৪ আসরে ওভালে নিউজিল্যান্ড-যুক্তরাস্ট্র এবং২০০৯ আসওে সেঞ্চুরিয়নে ইংল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচে।

১২. ১ ধাপ ভাল বোলিং ফিগার। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে হাসান আলীর ১৯ রানে তিন ও মোহাম্মদ আমিরের ১৬ রানে তিন উইকেট শিকারের এক ধাপ ভাল বোলিং ফিগার।১৯৯৮ বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত আইসিসি নকআউট বিশ্বকাপে ঢাকায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৩০ রানে ৫ উইকেট শিকার করেছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার জক ক্যালিস।
১৩. ১৮০ রান বিচেনায় ভারতের বিপক্ষে পাকিস্তানের সবচেয়ে বড় ব্যবধানের জয়। এর আগে ভারতের বিপক্ষে পাকিস্তানের সবচেয়ে বড় ১৫৯ রানের জয়টি এসেছিল ২০০৫ সালে দিল্লিতে।
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে সবচেয়ে বড় ব্যবধানের জয়গুলো(রান বিবেচনায়)
দল ব্যবধান প্রতিপক্ষ ভেন্যু তারিখ
নিউজিল্যান্ড ২১০ রান যুক্তরাষ্ট্র ওভাল ১০ সেপ্টেম্বর.২০০৪
শ্রীলংকা ২০৬ রান নেদারল্যান্ডস কলম্বো ১৭ সেপ্টেম্বর.২০০৪
পাকিস্তান ১৮০ রান ভারত ওভাল ১৮ জুন, ২০১৭
দক্ষিণ আফ্রিকা ১৭৬ রান কেনিয়া কলম্বো ২০ সেপ্টেম্বর. ২০০২
নিউজিল্যান্ড ১৬৭ রান বাংলাদেশ কলম্বো ২৩ সেপ্টেম্বর. ২০০২
অস্ট্রেলিয়া ১৬৪ রান নিউজিল্যান্ড কলম্বো ১৫ সেপ্টেম্বর.২০০২
ইংল্যান্ড ১৫২ রান জিম্বাবুয়ে বার্মিংহাম ১০ সেপ্টেম্বর. ২০০৪।
১৯ জুন ২০১৭/এমটিনিউজ২৪ডটকম/আ শি/এএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে