সোমবার, ১৯ জুন, ২০১৭, ১১:৫২:০৪

আকাশ ছোঁয়ার স্বপ্ন দেখিয়ে গেলেন মাশরাফি

আকাশ ছোঁয়ার স্বপ্ন দেখিয়ে গেলেন মাশরাফি

সাজ্জাদ খান: সজলী, শারমিন, আফরোজা, রিমি- প্রথম পরিচয়ে এরা সবাই কিশোরী। তবে আর দশটা সমবয়সীদের মত শৈশব পায়নি ওরা। কপালে অনাহূতের মত জুটে গেছে সুবিধাবঞ্চিত শিশুর তকমা। বাবা-মা হারিয়ে একসময় আশ্রয় নিতে হয়েছে সুবিধাবঞ্চিতদের নিয়ে কাজ করা সংগঠন স্পৃহা বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনে।

পরিবার-শৈশব হারা এমনই অনেক শিশুদের আশ্রয় হয়ে প্রতিপালন ও পড়াশোনার দায়ভার নিয়েছে সংগঠনটি। আর এসব শিশুরা নানা সীমাবদ্ধতার মাঝে থেকেও বড় হওয়ার স্বপ্ন দেখছে। সেই স্বপ্নের পরিধি আরও বাড়িয়ে দিলেন মাশরাফি বিন মর্তুজা।

মোবাইল ফোনের ব্র্যান্ড প্রতিষ্ঠান লাভা’র সৌজন্যে গুলশানে সুবিধাবঞ্চিত এসব শিশুদের সঙ্গে সোমবার ইফতার আয়োজনে অংশ নিয়েছেন বাংলাদেশের ওয়ানডে দলের অধিনায়ক মাশরাফি। পাশাপাশি বসে ওদের বলে যান, বড় হয়ে দেশের জন্য কিছু করতে হবে।

মাশরাফির কথা শুনে সজলী-শারমিনদের স্বপ্ন বড় হচ্ছে। আইনজীবী হওয়ার স্বপ্ন দেখছে সজলী। এখন পড়ছে ক্লাস এইটে। স্বপ্ন পূরণ আদৌ হবে কিনা জানে না এই মেয়েটি। তবে মাশরাফির কথায় বেশ অনুপ্রাণিত হওয়ার আভা ফুটে উঠল তার চোখে-মুখে, ‘স্বপ্ন দেখি আইনজীবী হওয়ার, চেষ্টা করবো। যে পরিবেশে থাকি, যেখানে থাকি, হয়তো হতে পারবো না! তবে চেষ্টা করে যাব।’

সজলীর এই স্বপ্ন পূরণ হবে কিনা সেটি সময়ের হাতেই তোলা থাকল। তার আগেই অন্য একটি স্বপ্ন যে পূরণ হয়ে গেল তার। যে স্বপ্ন কোনোদিন দেখেনি এই মেয়েটি। ক্যাডেট কলেজ মিলনায়তনে কথা হয়ে গেল বাংলাদেশ দলের অধিনায়কের সঙ্গে। সামনাসামনি কথা তো দূরে থাক, দেখা হওয়ার সুযোগই যে আসবে- সেটাই তো কখনো ভাবনায় আসেনি। মাশরাফির সঙ্গে কথা বলার পর তাই আনন্দের অশ্রু সজলীর চোখে।

‘স্বপ্নের মতো লাগছে, কখনো ভাবিইনি, আমরা যেখান থেকে এসেছি ভাবার মতো নয়। যেখানে থাকি, যে পরিবেশে থাকি, সেখান থেকে আমরা এখানে আসতে পেরেছি; এটাই আমাদের জন্য অনেক। স্বপ্নেও ভাবিনি বাংলাদেশ টিমের ক্যাপ্টেন যে তার সাথে দেখা করবো। তাকে আমরা টিভিতে দেখেছি। কেমন লাগছে তা আসলে বলার মতো নয়। যখন উনি (মাশরাফি) আমাদের পাশে বসলেন, তখন মনে হচ্ছিল স্বপ্নের দেশে চলে যাচ্ছি।’

সজলীর মতোই আরেক সুবিধাবঞ্চিত শিশু শারমিন বললেন, ‘কখনও কল্পনাই করতে পারিনি এত বড় মানুষের সাথে দেখা করতে পারবো। আমরা সবাই খুব খুশি। অনেক বড় ভাগ্য আমাদের।’

বার বার হাঁটুর চোটে পড়েও গুরে দাঁড়িয়ে খেলে যাচ্ছেন মাশরাফি। শত সীমাবদ্ধতা জয় করে সামনে এগিয়ে যাওয়ার অনুপ্রেরণা তো সেই মাশরাফিই দিতে পারেন সবচেয়ে বেশি। সেটা ম্যাশ যখন দেন, তাতে আনুপ্রেরণার সঙ্গে মিশে থাকে পরম মমতাও। চলে যেতে যেতে তাই মাশরাফি বলে গেলেন, মেয়েরা আসি।

সঙ্গে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের পাশে দাঁড়াতে সমাজের বিত্তবানদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে গেলেন টাইগার অধিনায়ক, ‘খুবই ভালো লাগছে। লাভা মোবাইল কোম্পানি খুব ভালো উদ্যোগ নিয়েছে। সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের সঙ্গে তারা আছে। ওদের জন্য কাজ করছে। শিক্ষার ব্যবস্থা করছে। আশা করি তারা কাজটা চালিয়ে যাবে। সবারই দায়িত্ব যার যার জায়গা থেকে মানুষের জন্য কিছু করার। আমার জায়গা থেকে আমি করবো। সবাই এগিয়ে আসলে সবাই ভালো থাকতে পারবে।’-চ্যানেল আই
১৯ জুন ২০১৭/এমটিনিউজ২৪ডটকম/আ শি/এএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে