স্পোর্টস ডেস্ক: পাকিস্তানে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ফেরাতে চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে লাহোরে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে ‘বিশ্ব একাদশ’ পাঠানোর উদ্যোগ নিয়েছে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি)। এই বিশ্ব একাদশের হয়ে খেলার কথা অস্ট্রেলিয়ার সাবেক অধিনায়ক মাইকেল ক্লার্ক, দক্ষিণ আফ্রিকার হাশিম আমলা, নিউজিল্যান্ডের কলিন ব্রুম, ট্রেন্ট বোল্ট, মার্টিন গাপটিলদের মতো তারকা ক্রিকেটারদের।
আসন্ন এই সিরিজে বিশ্ব একাদশের হয়ে খেলতে কিউই তারকাদের অর্থের টোপও দিয়েছিল পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)। জানা গেছে, কিউইদের এজন্য প্রায় ৮০ লাখ টাকারও বেশি প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল! কিন্তু সেই টোপ গিলতে নারাজ নিউজিল্যান্ড। বিশ্ব একাদশের হয়ে পাকিস্তান খেলতে নিজেদের চুক্তিভুক্ত কোনো ক্রিকেটারকে অনুমতি দিবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছে নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ড (এনযেডসি)।
এ প্রসঙ্গে নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ডের প্রধান নির্বাহী ডেভিড হোয়াইট, ‘চুক্তিবদ্ধ কেউই পাকিস্তানে ওই সময় যেতে পারছে না। অন্যান্য আন্তর্জাতিক ব্যস্ততা রয়েছে। এই মুহূর্তে আমি এতটুকুই বলতে পারি।’
যদিও ওই সময় নিউজিল্যান্ডের আন্তর্জাতিক কোনও ব্যস্ততা নেই। বোর্ডের এক সুত্র ধরে কিউই গণমাধ্যম জানিয়েছে, পাকিস্তানের সাম্প্রতিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে তাদের আশঙ্কা রয়েছে। কিউই ব্যাটসম্যান গাপটিল ও পেসার বোল্ট নিজেদের শঙ্কার কথাও জানিয়েছেন বোর্ডকে। তবে সেই আশঙ্কার সঙ্গে নিজেদের জড়াতে চাইছেন না কিউই বোর্ডের এই প্রধান নির্বাহী।
তার ভাষ্যমতে, ‘আসলে এটাই বাস্তবতা। আমরা এখনই নিশ্চিতভাবে সিরিজের বিষয় নিয়ে কিছু বলতে পারবো না। তবে ওই সময় আমাদের ব্যস্ততা থাকতে পারে। তাই ছেলেরা হয়তো সেখানে খেলতে পারবে না।’ তবে চুক্তিবদ্ধ ক্রিকেটারদের অংশগ্রহণে বাধা থাকলেও চুক্তিহীন ক্রিকেটারদের এক্ষেত্রে বাধা থাকছে না। যেমন লুক রনকির মতো তারকাদের সেখানে খেলতে বাধা নেই। সেক্ষেত্রে বোর্ডের অনুমতি পত্র লাগবে।
কিউইরা সবশেষ পাকিস্তান সফর করেছিল ২০০৩ সালে। এর আগের বছর অবশ্য পাকিস্তান সফরে আসলেও করাচিতে বোমা বিস্ফোরণের কারণে সেই সফর পরিত্যক্ত করে ফিরে যায় কিউইরা। এরপর ২০০৯ সালে লাহোরে শ্রীলঙ্কা খেলোয়াড়দের বহন করা বাসে বন্দুকধারীরা হামলা চালানোর পর আর কোনো টেস্ট দল পাকিস্তান সফর করেনি।
এরপর থেকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ভেন্যু হিসেবে পাকিস্তানের নামের পাশে পড়ে গেছে লাল কালির দাগ। মাঝে অবস্থার উন্নতির দাবি করে পিসিবি টেস্ট খেলুড়ে দলগুলোকে সফরের আহ্বান করলেও, সাড়ে মেলেনি।
শেষপর্যন্ত অনেক দেন দরবার করে ২০১৫ সালে জিম্বাবুয়ে দুটি টি-টোয়েন্টি ও তিনটি ওয়ানডে খেলতে পাকিস্তানে সফর করে। ওই সিরিজেও হামলার ঘটনা ঘটে। দ্বিতীয় ওয়ানডে চলাকালীন সময়ে গাদ্দাফি স্টেডিয়াম থেকে ৮০০ মিটার দূরে বোমা বিস্ফোরণে নিহত হয় দুইজন।
এরপরও পাকিস্তানের মাটিতেই পিএসএলের ফাইনাল আয়োজন করে টুর্নামেন্ট কমিটি। এবার আইসিসির কল্যানে আবারও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের সুবাতাস পাচ্ছে পাকিস্তান। কিন্তু আন্তর্জাতিক ক্রিকেট আয়োজন করতে গিয়ে আবারো ধাক্কা খেলো পাকিস্তান!
১২ আগস্ট ২০১৭/এমটিনিউজ২৪.কম/হাবিব/এইচআর