বৃহস্পতিবার, ০৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ০৪:১১:৩৭

তামিমরা কি ওয়ার্নারের চেয়েও বেশি আগ্রাসী?

তামিমরা কি ওয়ার্নারের চেয়েও বেশি আগ্রাসী?

স্পোর্টস ডেস্ক: এই সিরিজের আগেও এশিয়ায় ডেভিড ওয়ার্নারের ব্যাটিং গড় ছিল ৩০.৩৮। ১৩ টেস্টে যে একটা সেঞ্চুরি পেয়েছিলেন, সেটি উপমহাদেশে নয়, দুবাইয়ে। উপমহাদেশের স্পিন-সহায়ক উইকেট যাঁর কাছে ছিল বিরাট ধাঁধা, সেই ওয়ার্নার বাংলাদেশের বিপক্ষে পেলেন টানা দুই সেঞ্চুরি।

বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে একাই প্রতিপক্ষের বোলিং ধ্বংস করে দিতে যিনি পারদর্শী, সেই ওয়ার্নারকে চট্টগ্রামে দেখা গেল অন্য চেহারায়। প্রচণ্ড গরম আর আর্দ্রতায় ধৈর্যের প্রতিমূর্তি হয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা টিকে রইলেন উইকেটে। বাংলাদেশের স্পিন আক্রমণকে সামলে সিরিজের একমাত্র ব্যাটসম্যান হিসেবে টানা দুবার ছুঁলেন তিন অঙ্ক।

চট্টগ্রাম টেস্টে ৩৬২ মিনিট উইকেটে থেকে ২৩৪ বলে ওয়ার্নার করলেন ১২৩। তাঁর সবচেয়ে মন্থর সেঞ্চুরি এটাই। টেস্ট ক্যারিয়ারে যাঁর স্ট্রাইক রেট ৭৮.১২, চট্টগ্রাম টেস্টে সেটি ৫২.৫৬। পুরো ইনিংসে চারের মার সাতটি, ছক্কা নেই একটিও। টেস্টের প্রথম দিনেই লাঞ্চের আগে যাঁর সেঞ্চুরির রেকর্ড আছে, সেই ওয়ার্নার পরিস্থিতির দাবি মেনে ঢুকে গেলেন খোলসে। ধৈর্যের বিচারে ওয়ার্নার তাই এই সেঞ্চুরিকে সবচেয়ে এগিয়ে রাখলেন।

ওয়ার্নারের ব্যাটিংয়ে অনেক বার্তা থাকল বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের জন্য। কঠিন উইকেট আর বিরুদ্ধ পরিস্থিতিতে কীভাবে চরিত্রের বাইরে গিয়ে নিজের খেলাটা খেলতে হয়, সেটির উজ্জ্বল উদাহরণ এই ইনিংস। বারবার ব্যর্থ হওয়ার পর কীভাবে এবার উপমহাদেশের ধাঁধা মিলিয়েছেন, সেটিই কাল বলছিলেন ওয়ার্নার, ‘আপনাকে তো উপায় বের করতেই হবে। এই কন্ডিশনে গেমপ্ল্যান কী হবে, সেটা বের করতে আমার প্রায় ১৬-১৭ টেস্ট লেগে গেছে। যদি প্রতিপক্ষ আপনার ইগো নিয়ে খেলে, আপনার বাউন্ডারির পথ বন্ধ করে দেয়, আপনাকে তখন সিঙ্গেলের ওপর থাকতে হবে।’

বাংলাদেশের এই দলে বাহারি স্ট্রোক খেলার ব্যাটসম্যানের অভাব নেই। কিন্তু বিরুদ্ধ পরিস্থিতিতে দাঁতে দাঁত কামড়ে লড়ার প্রশ্ন যদি আসে, সেই সামর্থ্য আছে কজনের?

বাংলাদেশের অনেক ব্যাটসম্যান মনে করেন আক্রমণই সেরা রক্ষণ। কিন্তু দল ও পরিস্থিতির প্রয়োজনে তো চরিত্র বদলাতে হয়। এটাই তো টেস্ট ক্রিকেট। ওয়ার্নারের ব্যাটিংয়ের উদাহরণটা টাটকাই ছিল। কিন্তু আজ সাব্বির-তামিমরা যেভাবে ডাউন দ্য উইকেটে গেলেন, শুরু থেকে তামিমের ছটফটানি, সাব্বিরের একের পর এক রিভার্স সুইপ...।

একটা ভুল বাকি সব প্রচেষ্টাকে ব্যর্থ করে দেয়। এই সিরিজটা জিতে চেয়েছিল বাংলাদেশ। এগিয়ে থেকে এখন সিরিজ ড্র করার শঙ্কায়। ছোট ছোট ভুল মিলে যে পাহাড় হয়ে যায়!
এমটিনিউজ২৪ডটকম/আ শি/এএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে