বুধবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ০৯:২৯:৩৭

বাজিতে জিতে গেল মেসি, জুভদেরকে ৩-০তে হারিয়েছে বার্সা

 বাজিতে জিতে গেল মেসি, জুভদেরকে ৩-০তে হারিয়েছে বার্সা

স্পোর্টস ডেস্ক: লিওনেল মেসি বলে কথা।  তার ফুটবল জাদু মোহিত করে কোটি হৃদয়ে।  বাজি ধরা হোক আর না হোক তিনি মেসি।  গোল করা তার সহজাত অভ্যাস।  বিশ্বের অন্যতম সর্বকালের সেরাদের মধ্যে তার স্থান মনে করা হয়।  মঙ্গলবার মেসির জোড়া গোলে জুভদের ৩-০তে হারিয়েছে পাঁচবারের ইউরোপ জয়ীরা।  বার্সার জার্সি গায়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে নতুন কোনও ফরোয়ার্ডের অভিষেকে গোল করার অভ্যাসটা এম্যাচেও ধরে রেখেছেন মেসি।  ডেম্বেলের অভিষেকের দিনে তার জোড়ার সঙ্গে অন্য গোলটি ইভান রাকিটিচের।  এতে বার্সার হয়ে সবশেষ ১১ ফরোয়ার্ডের অভিষেকের ম্যাচে গোল পেয়ে ফ্রেমবন্দী সময়টাকে স্মরণীয় করে রাখলেন ক্ষুদে জাদুকর।

অন্যপ্রান্তে জুভেন্টাসের গত মৌসুমের অটুট রক্ষণভাগ এদিন ছিল অনুপস্থিত।  এসি মিলানে পাড়ি জমানো ডিফেন্ডার বোনুচ্চির অভাব হাড়ে-হাড়ে টের পেয়েছে জুভরা।

ন্যু ক্যাম্পে যদিও শুরুটা দিচ্ছিল অন্য ইঙ্গিতই।  স্বাগতিকদের বিপক্ষে প্রথম থেকেই চড়াও হয়েছিল জুভেন্টাস।  ৬ মিনিটের মাথায় সালিজিওর রকেট গতির শট অল্পের জন্য খুঁজে পায়নি বার্সার জাল।  এর তিন মিনিট পরেই পাওলো দিবালার শট আটকে দিয়েছেন বার্সা গোলরক্ষক আন্দ্রে টের স্টেগেন।

ম্যাচের ১২ মিনিটে আবারও আক্রমণ শানায় জুভরা।  তুরিনের দলটির মিডফিল্ডার পিয়ানিচের ২৫ গজ দূর থেকে নেওয়া শট কোনরকমে আটকে দিয়েছেন টের স্টেগেন।  কিছুপর হিগুয়েনের শট আটকে যায় বার্সা গোলরক্ষকের দেয়ালে।

থেমে ছিল না বার্সাও।  মেসি তখন কড়া মার্কিংয়ে।  আর উজ্জ্বলতা ছড়াচ্ছিলেন অভিষিক্ত উসমানে ডেম্বেলে।  ফরাসি এই ফরোয়ার্ডের নৈপুণ্যে প্রথম ১৫ মিনিটেই ডানভাগ দিয়ে কয়েকটি আক্রমণ সাজিয়েছে বার্সেলোনা।  যদিও সেগুলো অতিথিদের রক্ষণ দেয়ালে আটকে গেছে।

ম্যাচের ২০ মিনিটে আরেকটি পাল্টা আক্রমণে অতিথিদের কাঁপিয়ে দেয় বার্সা।  ডি-বক্সের একটু বাইরে থেকে নেওয়া মেসির ফ্রি-কিক রক্ষণব্যূহ থেকে ফিরে আসলে পাল্টা শট নেন লুইস সুয়ারেজ।  কিন্তু বুলেট গতির সেই শটে হাত ছুঁয়ে দলকে বাঁচিয়েছেন গোলরক্ষক বুফন।

বিরতির বাঁশি বাজার ঠিক আগমুহূর্তে অকস্মাৎ জ্বলে উঠে বার্সাকে গোল আনন্দে ভাসিয়েছেন লিওনেল মেসি।  ৪৫ মিনিটে সুয়ারেজের সঙ্গে বল দেওয়া-নেওয়া করে বাঁ-পায়ের কোনাকুনি শটে বুফনকে বোকা বানিয়ে জাল খুঁজে নেন আর্জেন্টাইন মহাতারকা।

দ্বিতীয়ার্ধে ফিরেই বার্সার জাল বরাবর শট নিয়েছে জুভেন্টাস।  ৪৮ মিনিটে দিবালার আগুনগোলা শট অল্পের জন্য খুঁজে পায়নি প্রতিপক্ষের জাল।

তখনই পাল্টা আক্রমণ গেছে বার্সা।  সাফল্যও আসতে যাচ্ছিল।  ৫২ মিনিটে মেসির বাঁ পায়ের জোড়াল শট ফিরেছে জুভেন্টাসের বারপোস্টে লেগে।  ৫৪ মিনিটে অবশ্য ফাউলের শিকার হয়ে প্রতিপক্ষের পিয়ানিচকে হলুদ কার্ড দেখানোর আবেদন করে উল্টো নিজেই কার্ড দেখতে হয়েছে মেসিকে।

ম্যাচের ৫৬ মিনিটে আর হতাশ হতে হয়নি স্বাগতিকদের।  বামপ্রান্ত দিয়ে নেয়া মেসির শট প্রথম চেষ্টায় জুভেন্টাস ডিফেন্ডারে গায়ে লেগে ফিরলেও ফিরতি শটে রাকিটিচ জাল খুঁজে পান।

পরে ৬৯ মিনিটে আবারও মেসি-জাদু।  দারুণ এক পাল্টা আক্রমণে প্রায় মাঝ মাঠ থেকে মেসির পায়ে বলের জোগান দেন অধিনায়ক ইনিয়েস্তা।  সেই পাস থেকে জুভেন্টাসের দুই ডিফেন্ডারকে বোকা বানিয়ে জোড়া গোল পূর্ণ করেন আর্জেন্টাইন জাদুকর।  চ্যাম্পিয়ন্স লিগে গোলের শতক পূর্ণ করতে আর মাত্র চার গোলের অপেক্ষা থাকল মেসির।

আরও একটি গোল পেতে পারতো বার্সা।  ৭৮ মিনিটে ফাউলের অভিযোগে সুয়ারেজের একটি গোল বাতিল করে দেন রেফারি।  আর ৮১ মিনিটে দিবালার নীচু শট ঝাঁপিয়ে পড়ে কর্নারের বিনিময়ে ঠেকান টের স্টেগেন।  সেই কর্নার থেকে জুভেন্টাসের আরেকটি শট গোললাইন থেকে জেরার্ড পিকে ফিরিয়ে দিলে খালী হাতে ফেরার হতাশায় নীল হতে হয়েছে তুরিনের বুড়িদের।

একই রাতে ‘ডি’ গ্রুপের অন্য ম্যাচে গ্রিসের অলিম্পিয়াকোসকে ৩-২ গোলে হারিয়েছে পর্তুগালের স্পোর্তিং লিসবন।
এমটিনিউজ২৪.কম/টিটি/পিএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে