সোমবার, ২০ নভেম্বর, ২০১৭, ০৪:৩০:২৪

আইসক্রিম বিক্রেতা থেকে তারকা ফুটবলার

আইসক্রিম বিক্রেতা থেকে তারকা ফুটবলার

স্পোর্টস ডেস্ক : তখন মাত্র ১৪। ‘‌দুশ্চিন্তা’‌ শব্দটার অর্থ তখনও পরিষ্কার নয়। দিব্যি মনের সুখে খেলছিল ফুটবল। বন্ধুদের সঙ্গে রাস্তায়। নোভা ভেনেসিয়া। উত্তর–পূর্ব ব্রাজিলের অংশে। খেলতে খেলতে এতই মগ্ন, কে আছে আশপাশে খেয়ালই করেনি।

হঠাৎ করেই একজন কপালে এসে ঠেকাল বন্দুক!‌ তারপর?‌ প্রকাশ্য রাস্তায় হুমকি। ‘‌সাহস তো কম নয়?‌ আমাদের ড্রাগ পাচার করার জায়গায় অনধিকার প্রবেশ?‌ এখনই খতম করে দেবো।’‌ এমন হুমকি শুনে যে কারও পায়ের তলার মাটি সরে যাবে। গেছিলও। রিচার্লিসনের। কে তিনি?‌

সেদিনের সেই ১৪ বছরের ছেলে এখন ওয়াটফোর্ডের নতুন তারকা ফুটবলার। নোভা ভেনেসিয়ার সড়ক থেকে যার ফুটবলের যাত্রা শুরু, তিনি আজও ভুলতে পারেননি অতগুলো বছর আগের ঘটে যাওয়া সেই ঘটনা। রিচার্লিসনের কথায়, ‘‌কী করে ভুলব?‌ সেদিন যে খুব ভয় পেয়েছিলাম। ওই লোকটা যদি বন্দুকের ট্রিগারটায় একবার চাপ দিত, সব শেষ হয়ে যেত তখনই।’

তিনি বলেন, ‘লোকটা বলেছিল, আমাকে আর আমার বন্ধুদের ওই রাস্তায় যদি আর কখনও দেখে, কিছু বলার আর সুযোগ দেবে না। খতম করে দেবে। জানেন, আমার মনে হয় ওই দুষ্কৃতী অন্য কারও সঙ্গে আমাকে গুলিয়ে ফেলেছিল। ওই লোকটা ছিল ড্রাগ পাচারকারী। ভেবেছিল, আমি ওদের ডেরায় ঢুকে ড্রাগ চুরি করতে গেছি!‌ লোকটা আমাকে ছাড়তেই ঊর্ধ্বশ্বাসে ছুটেছিলাম। একবারও পেছন ফিরে তাকায়নি। আর কখনও ওই রাস্তাটাতেও যায়নি।’‌
 
এই মুহূর্তে তার দিকে নজর অন্য দলের স্কাউটদের। কিন্তু রিচার্লিসনের জীবনের গল্পে শুধু এই একটাই মোড় ছিল তা নয়। তিনি একসময় আইসক্রিমের গাড়ি নিয়ে রাস্তায় বিক্রি করেছেন। বন্ধুদের দোকানে কাজ করেছেন। গাড়ি পরিষ্কারও করেছেন। কিন্তু রিচার্লিসনের বাকি বন্ধুরা ড্রাগ পাচার করে মোটা টাকা রোজগার করত সেই সময়।

চাইলেই বিপথে যেতে পারতেন। কিন্তু যাননি। মায়ের কথা আর কোচেদের কথা শুনেই ভেসে যাননি। যখন সতেরো বছর বয়স, তখন আমেরিকা মিনেইরো ক্লাবে চুক্তি করার পর প্রথম বুটজোড়া কিনতে পেরেছিলেন। কিন্তু তারও ফুটবলই থেকেছে তার ধ্যানজ্ঞান। যখন জুতো কেনার সামর্থ্য ছিল না, তখন এ–‌ওর কাছে চেয়ে জোগাড় করতেন।

গত বছর আয়াক্সে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পর্তুগিজ ম্যানেজার মার্কো সিলভা তার সঙ্গে যোগাযোগ করে নিয়ে আসেন ওয়াটফোর্ডে। ব্যস, তারপর থেকে একটু একটু করে বদলে গেছে ছবিটা। এ

খন তার পায়ের নড়াচড়া, বলের ওপর নিয়ন্ত্রণ দেখে অনেকেই রোনাল্ডোর সঙ্গে তুলনা করতে শুরু করেছেন। রিচার্লিসন এসব নিয়ে ভাবেন না। তার জীবনের প্রতিটা দিনই যে লড়াই। সেই লড়াইয়েই তাই মজে থাকেন। ‌
এমটিনিউজ/এসএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে