চার নাম্বারে ওঠার লড়াইয়ে মাঠে নামবে বাংলাদেশ
স্পোর্টস ডেস্ক: রাশিয়া ফুটবল বিশ্বকাপ বাঁছাইয়ে গ্রুপের চার প্রতিপক্ষের মধ্যে একমাত্র তাজিকিস্তানকেই হারাতে সক্ষম হয়েছে বাংলাদেশের ফুটবলাররা। পাঁচ ম্যাচ খেলে এক পয়েন্ট অর্জন করতে সক্ষম হয় তারা। তাও এই একটি পয়েন্ট তাজিকিস্তানের বিপক্ষে খেলেই। সুবাধে এবার তাদের বিপক্ষে ম্যাচ জেতার চিন্তা উঁকি দেওয়াটা অস্বাভাবিকও নয়। আর এই ম্যাচ জিতলেই পাঁচ দলের গ্রুপে চার নম্বরে ওঠার লক্ষ্যপূরণও হবে বাংলাদেশের।
একসঙ্গে বিশ্বকাপ বাছাই ও এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের ম্যাচ চলছে এশিয়া অঞ্চলে। গ্রুপে চার নম্বরে থাকতে পারলে এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের পরের পর্বটা অনেকখানি নিশ্চিত হয়ে যাবে স্বাগতিক বাংলাদেশের। না হলে সমীকরণটা একটু কঠিনই হয়ে যাবে। তাই আজকের ম্যাচটা যে দুই দলের কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ, সেটা বোঝা গেছে বাংলাদেশ কোচ ফাবিও লোপেজের কথায়, 'এই ম্যাচটি দুই দলের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ, দুটি দলই লড়বে গ্রুপে চার নম্বর হওয়ার জন্য। দুই দলই জেতার চেষ্টা করবে, তাই চমৎকার একটি ম্যাচই হবে আশা করি। নিজেদের মাঠে তাজিকিস্তান অবশ্য শক্তিশালী দল, তবে আমরাও এসেছি জেতার লক্ষ্য নিয়ে।' বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৬টায় দুশানবেতে দুই দল মুখোমুখি হবে এবং তাদের লক্ষ্য হবে অভিন্ন। কোনো দলই পাঁচ দলের গ্রুপে সবশেষ অবস্থানটি পেতে চাইবে না। নতুন ইতালিয়ান কোচের অধীনে এটা বাংলাদেশের দ্বিতীয় ম্যাচ। শক্তিশালী কিরগিজস্তানের বিপক্ষে আগের ম্যাচে তিনি কোনো লক্ষ্যের কথা না বললেও এবার তাজিকিস্তান গেছেন জয়ের প্রত্যাশা নিয়েই। ছয় দিন আগে দল নিয়ে তাজিকিস্তান গেছেন ঠাণ্ডা আবহাওয়ার সঙ্গে আগাম মানিয়ে নিতে, 'ঠাণ্ডার মধ্যে তারা প্র্যাকটিস করেছে, এটা নিশ্চয়ই ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে ম্যাচে।' ম্যাচেই বোঝা যাবে আসলে ঠাণ্ডা আবহাওয়ার সঙ্গে কতটা মানিয়ে নিতে পেরেছেন ফুটবলাররা।
ঠাণ্ডা এবং বৃষ্টি বড় চ্যালেঞ্জ হলেও তাজিকিস্তান থেকে দলের উন্নতির খবর মিলছে। নিজের পজিশন ফিরে পাওয়া মামুনুল ইসলাম বলেছেন, 'আমাদের খেলার উন্নতি হয়েছে। দলগত খেলা আরো ভালো হয়েছে। কৃত্রিম ঘাসের মাঠে আমরা ভালো ম্যাচ খেলার জন্য তৈরি।' অধিনায়ককে তাঁর আগের পজিশন অর্থাৎ একদম মধ্যমাঠে ফিরিয়ে নেওয়ার পেছনে বড় কারণ হলো মোনায়েম খান রাজুর অনুপস্থিতি। আগের মতোই খেলাটা এখন তৈরি করতে হবে মামুনুলকে এবং তারপর আক্রমণে উঠবে দুই উইং ধরে। সাধারণত উইং অ্যাটাকই বাংলাদেশের পছন্দ আর তকলিস, সাখাওয়াত হোসেন ও সোহেল রানার মধ্যে দুজনকে দেখা যাবে দুই দিকে। 'নাম্বার নাইন' পজিশনে গত ম্যাচে নাবীব নেওয়াজকে দেখা গেলেও এ ম্যাচে জায়গা পেতে এই তরুণের সঙ্গে লড়াই চলছে আমিনুর রহমানের। কোচ সিদ্ধান্ত নেবেন শেষ মুহূর্তে। ম্যাচ জেতার লক্ষ্যের কথা কোচ বড় গলায় বললেও জোর দিচ্ছেন বেশি ডিফেন্সে। চার ডিফেন্ডার রায়হান, নাসির, ইয়াসিন ও আব্দুল বাতেনের পেছনে ফর্মে ফেরা গোলরক্ষক শহীদুল আলমের দায়িত্ব গোল ঠেকানোর। তাঁদের ওপরই নির্ভর করছে ম্যাচের ভাগ্য, তাঁরা চাপ সামলে গোলপোস্ট সুরক্ষিত রাখতে পারলে ৩ পয়েন্ট পাওয়ার একটা সুযোগও থাকে।
ঢাকায় গত জুনের হোম ম্যাচে অবশ্য বাংলাদেশ শেষ পর্যন্ত নিজেদের গোলপোস্ট সামলে রাখতে পারেনি। এগিয়ে থেকেও শেষ মুহূর্তে প্রতিপক্ষের চাপের কাছে আত্মসমর্পণ করে জয় জলাঞ্জলি দিয়েছিল বাংলাদেশ। সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে জামাল ভূঁইয়া বলেছেন, 'শেষ মুহূর্তের গোলে আমরা ঢাকায় পুরো ৩ পয়েন্ট পাইনি। আমরা জানি, নিজেদের মাঠে তাজিকিস্তান শুরু থেকে চেষ্টা করবে গোল বের করে নিতে, অ্যাটাকিং ফুটবল খেলবে। আমরাও এসেছি এই ম্যাচ জিততে। এটা আমাদের পয়েন্ট অর্জনের ভালো সুযোগ।' শেষ সুযোগও বটে। শক্তিশালী অস্ট্রেলিয়া ও জর্দানের বিপক্ষে শেষ দুই ম্যাচের আশা ছেড়ে দিয়ে তাই নাগালের ভেতর থাকা তাজিকিস্তানকে লক্ষ্য বানিয়েছে বাংলাদেশ। সূত্র - কালের কন্ঠ
১২ নভেম্বর,২০১৫/এমটিনিউজ২৪/আরিফুর রাজু/এআর