১৩-০ করে ফেলল বাংলাদেশ!
স্পোর্টস ডেস্ক: তামিমের ব্যাটে এল ইনিংস সর্বোচ্চ ৩১। ছবি: শামসুল হকভুলে গেলেও ভুলে গিয়ে থাকতে পারেন। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশের সর্বশেষ পরাজয়টি যে আড়াই বছর আগের ঘটনা! এর পর সব মিলিয়ে দুই দল ১৩ বার মুখোমুখি হয়েছে। প্রতিটি ম্যাচেই জিতেছে বাংলাদেশ। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সর্বশেষ পরাজয়টি ছিল টি-টোয়েন্টিতে। আজ বোলিংয়ে আর ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ খানিকটা খুঁড়িয়েছে বলে হয়তো বুলাওয়ের সেই হারের স্মৃতি ক্ষণিকের অতিথির মতো উঁকি দিতে পারে আপনার মনে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ‘লাকি থারটিন’ জয়টিও তুলে নিল বাংলাদেশ।
জিম্বাবুয়ের দেওয়া ১৩২ রানের লক্ষ্য ১৪ বল আর ৪ উইকেট হাতে রেখেই ছুঁয়ে ফেলল মাশরাফি বিন মুর্তজার দল। নিশ্চিত করল আরও একটি সিরিজের ট্রফি। দুই ম্যাচের সিরিজের শেষটি হারলেও সিরিজে তো আর হারছে না। অবশ্য বলতে পারে, শেষ ম্যাচটায় হারার কথাই বা আসছে কেন? বালাই ষাট! এ নিয়ে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টানা আটটি ওয়ানডে, দুটি টি-টোয়েন্টি আর তিনটি টেস্ট জিতল বাংলাদেশ।
এনামুল আর মুশফিক বাদে বাংলাদেশের বাকি ছয় ব্যাটসম্যানই দুই অঙ্ক ছুঁয়েছেন। ২৮ বলে ৩১ করেছেন তামিম। সাব্বির ১৮, লিটন ১৭, নাসির ১৭, মাহমুদউল্লাহ অপরাজিত ২২ আর মাশরাফি অপরাজিত ১৫। এমনকি মিস্টার এক্সট্রাও ১৪ রান দিয়ে গেলেন। তবুও বাংলাদেশ খানিকটা ভুগেছে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট পড়ায়, বড় জুটি না গড়ে ওঠায়। ৮০ রানের মধ্যে ৫ উইকেটও পড়ে গিয়েছিল। সেখান থেকে প্রথমে লিটনের সঙ্গে ৩৮, এর পর মাশরাফির সঙ্গে অবিচ্ছিন্ন ১৮ রানের জুটিতে দলকে জয়ের বন্দরে নিয়ে যান মাহমুদউল্লাহ।
এর আগে ওয়ালারের টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের প্রথম ফিফটিতে এক সময় ব্যাটিংয়েও বেশ জিম্বাবুয়ে বেশ ঝামেলায় ফেলে দিয়েছিল। প্রথমে ওয়ার্নার, এরপর ওয়ালার—ক্রিকেটের আজকের দিনটা বোলারদের ওপর ছড়ি ঘোরালেন এই দুই ডব্লিউ। ম্যালকম ওয়ালারের ৩১ বলে ৬৮ রানের ইনিংসে এক সময় ঝড়ই তুলেছিল জিম্বাবুয়ে। চার যেমন মেরেছেন চারটি, ছক্কাও ছয়টি। অথচ ওয়ালার এর আগে ১৩ ইনিংস মিলিয়েই ছক্কা হাঁকিয়েছিলেন সাতটি। আজ ফিফটি করেছেন মাত্র ২০ বলে।
ওয়ালারকে ফিরিয়েছেন মুস্তাফিজ। পানিয়াঙ্গারাকেও এলবিডব্লুর ফাঁদে ফেলে ৩ বল আগে অলআউট করেছেন জিম্বাবুয়েকে। তাঁর সঙ্গে আল আমিনও রানে বাঁধ দেওয়ায় রেখেছেন বড় ভূমিকা। আর শুরুতে মাশরাফি বিন মুর্তজার মাপা বোলিং শেষ পর্যন্ত জিম্বাবুয়েকে আটকে রাখল ১৩১ রানে। এই তিন বোলারই দুটি করে উইকেট নিয়েছেন। মাশরাফি-আল আমিন দুজনই দিয়েছেন ২০ রান, মুস্তাফিজ দিয়েছেন ১৬। টি-টোয়েন্টিতে নিজের সেরা বোলিংটা আজ করলেন এই বাঁ হাতি পেসার।
মাশরাফি আর আল আমিন বোলিংয়ে দারুণ শুরু এনে দিয়েছিলেন। এর সঙ্গে নাসিরও মিলে শুরুতে বেশ চাপে ফেলে দিয়েছিল জিম্বাবুয়েকে। ৯ ওভারে ৪ উইকেটে তারা তুলল মাত্র ৩৯। এ ম্যাচে অভিষিক্ত জুবায়ের দশম ওভারটি করতে এসেই ১৭ রান দিয়ে বসলেন। সেই শুরু ওয়ালারের তাণ্ডব। পরের ওভারে নাসিরকেও দুটো করে ছক্কা-চার হাঁকিয়ে ওই ওভারে তুললেন ২০। ১০ থেকে ১৪-এই পাঁচ ওভারেই জিম্বাবুয়ে তুলে ফেলল ৬৬!
ওভারে ১২-এর ওপরে করে রান তোলার এই গতিতে প্রথম বাঁধ দিলেন মাহমুদউল্লাহ। মাত্র ৩৪ বলে ৬৭ রান তোলা জুটিটা শুধু ভাঙলেনই না, ১৫তম ওভারটি করলেন উইকেট মেডেন। প্রথমেই ওমন একটা বাজে ওভার করার পরও জুবায়েরে হাতে বল তুলে দেওয়ার জুয়া খেললেন মাশরাফি। আর সেই ওভারে জুবায়ের তুলে নিলেন জঙ্গুয়ে আর মাদজিভাকে।
তখনো কাঁটা হয়ে ছিলেন ওয়ালার। ১৮তম ওভারে আক্রমণে এসে সেই কাঁটা সরালেন মুস্তাফিজ। দিলেন মাত্র ৩ রান। পরের ওভারে আল আমিন ৪ রানে তুলে নিলেন ক্রেমারকে। মুস্তাফিজ শেষ ওভারটিতে চার রান দিয়ে ফেরালেন পানিয়াঙ্গারাকে। শেষ তিন ওভার আর তিন উইকেটে তাই আর ঝড় তোলা হলো না জিম্বাবুয়ের। মাত্র ১২ রান যোগ করতেই অলআউট।
বোলাররা এভাবে ঘুরে না দাঁড়ালে বাংলাদেশের তেরোতে তেরো করাটা কঠিনই হতো!-প্রথম আলো
১৩ নভেম্বর ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এইচএস/কেএস
�