সোমবার, ১৬ নভেম্বর, ২০১৫, ০৮:২৯:২৪

পার্থ টেস্টে রেকর্ডের বন্যা

পার্থ টেস্টে রেকর্ডের বন্যা

স্পোর্টস ডেস্ক: পার্থে অস্ট্রেয়িলা ও নিউজিল্যান্ডের চলতি টেস্টে রেকর্ডের বন্যা বয়ে যাচ্ছে। চলতি এই ম্যাচের ফল যাই হোক না কেন, টেস্টটিকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য যথেষ্ট রসদের জোগান পাওয়া গেছে চার দিনের মাথায়। রেকর্ডের পর রেকর্ড ভেঙে ব্যাটিং স্বর্গে রূপ নিয়েছে উইকেট। রেকর্ড ভাঙছেন ব্যাটসম্যানেরাই। রান উৎসবে মেতে চতুর্থ দিন শেষে অস্ট্রেলিয়া দ্বিতীয় ইনিংসে লিড নিয়েছে ১৯৩ রানের। এর আগে অস্ট্রেলিয়ার প্রথম ইনিংসে করা ৫৫৯ রানের জবাবে নিউজিল্যান্ড করে ৬২৪। দিনের শুরুতেই রেকর্ডের বইটি উল্টে পাল্টে দেখা শুরু করতে বাধ্য করেছিলেন রস টেলর। লাঞ্চের আগেই বাধ্য করলেন রেকর্ড বইয়ে কলম বসাতে। দলের শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হওয়ার আগে ২৯০ রান করেছেন। আর সেই সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে সফরকারী কোনো দলের ব্যাটসম্যান হিসেবে সর্বোচ্চ রানের ইনিংসের মালিকও হয়ে গেলেন এই কিউই ব্যাটসম্যান। রেকর্ডটি গড়ার পথে প্রায় ১১২ বছর পুরোনো এক রেকর্ড ভেঙেছেন টেলর। ১৯০৩ সিডনি টেস্টে নিজের অভিষেক টেস্টে ইংলিশ টিপ ফস্টার করেছিলেন ২৮৭ রান। এত বছর এই রেকর্ডটি ছিল সবার ধরাছোঁয়ার বাইরে। টেলরের হাতে পড়ে রেকর্ডটি অবশেষে হাতছাড়া হলো ফস্টারের। অবশ্য এই এক ইনিংস দিয়েই আরও কিছু রেকর্ড ভেঙেছেন টেলর। নিউজিল্যান্ডের ইতিহাসেই তিনি এখন দেশের বাইরে সর্বোচ্চ ইনিংসের মালিক তিনি। এর আগের রেকর্ডটি ছিল স্টিফেন ফ্লেমিংয়ের। ২০০৩ সালে পি সারা ওভালে ২৭৪ রান করেছিলেন তিনি। আর নিউজিল্যান্ডের ব্যাটসম্যানদের সর্বোচ্চ রানের ইনিংসের তালিকায় টেলরের এই ইনিংস আছে তৃতীয় স্থানে। তবে একটি স্থানে প্রথম স্থানেই আছেন টেলর। চার নম্বরে ব্যাট করতে নামা সফরকারী ব্যাটসম্যান হিসেবে সর্বোচ্চ ইনিংসটিও এখন তাঁর। এই রেকর্ডটি আগে ছিল ব্রায়ান লারার দখলে, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষেই চার নম্বরে নেমে ২৭৭ করেছিলেন লারা ১৯৯৩ সালে। আজ ২২ বছর পুরোনো সেই রেকর্ডটিও নিজের করে নিলেন টেলর। টেলরের এই ইনিংসটি আরেকটি রেকর্ডে ভাগ বসিয়েছে। ওয়ার্নারের পর টেলরের ২৫০ পার করা এই ইনিংসের ফলে দুই দলের হয়েই দুজন ব্যাটসম্যান ২৫০ রান করার রেকর্ড গড়লেন। শেষবার এমন ঘটেছিল ২৪ বছর আগে। ওয়েলিংটন টেস্টে নিউজিল্যান্ডের মার্টিন ক্রো ২৯৯ রান করেছিলেন, আর শ্রীলঙ্কার হয়ে অরবিন্দ ডি সিলভা করেছিলেন ২৬৭ রান। টেস্ট ইতিহাসেই এমন ঘটনা ঘটেছে মাত্র তিনবার। ১৯৬৪ সালেই প্রথম ঘটেছিল এমন ঘটনা। রেকর্ড বইকে নিয়ে টানা হেঁচড়া এখানেই থামেনি। নিউজিল্যান্ডের প্রথম ইনিংস ৬২৪ রানে শেষ হওয়ার পর দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমেছে অস্ট্রেলিয়া দল। মাত্র ৪৬ রানে দুই উইকেট হারিয়ে বিপাকেই পড়েছিল স্বাগতিক দল। কিন্তু তিনে ও চারে ব্যাট করতে নামা স্টিভ স্মিথ এবং অ্যাডাম ভোজেসের জোড়া সেঞ্চুরিতে বিপর্যয় কাটিয়ে এসেছে অস্ট্রেলিয়া। দুজনে মিলে যোগ করেছেন ২১২ রান। দিন শেষে অপরাজিত থেকে মাঠ ছেড়েছেন দুজনই। আর এই জুটি গড়ার পথেই আরেকটি রেকর্ড ভেঙেছেন তাঁরা। অবশ্য এই রেকর্ডে দুই দলের প্রথম চার ব্যাটসম্যানেরই অবদান রয়েছে। প্রায় ৬৭ বছর আগে হেডিংলি টেস্টে দুই দলের প্রথম চারজন ব্যাটসম্যান মিলে ১১৫০ রান করেছিলেন। আর এই টেস্টে দুই দলের প্রথম চার ব্যাটসম্যান মিলে ইতিমধ্যেই করে ফেলেছেন ১১৯০ রান। স্মিথ এবং ভোজেস দুজনই অপরাজিত আছেন। নিউজিল্যান্ডের দ্বিতীয় ইনিংসও বাকি রয়েছে। রেকর্ডটি আরও বড় হচ্ছে এটা নিশ্চিত। ওহ, এমন এক রেকর্ড গড়তে গিয়ে ব্যক্তিগত এক অর্জনও করে ফেলেছেন স্মিথ। ওয়াকা অস্ট্রেলিয়ার জন্য অনেক পয়া এক মাঠ, কিন্তু অস্ট্রেলীয় অধিনায়কদের জন্য অনেক দিন ধরেই এই মাঠটি অপয়া হয়েই ছিল। ১৯৮৬ সালে সর্বশেষ অ্যালান বোর্ডার অস্ট্রেলীয় অধিনায়ক হিসেবে সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছিলেন। গত ২৯ বছরে অন্য কোনো অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক এখানে তিন অঙ্ক ছুতে পারেননি। অবশেষে স্মিথের ব্যাটে সেই গেরো কাটল অস্ট্রেলিয়ার। ওয়াকা থেকে পার্থ টেস্ট সরিয়ে নেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, সেদিক থেকে এটিই হতে পারে ওয়াকায় কোনো অস্ট্রেলীয় অধিনায়কের সর্বশেষ সেঞ্চুরিও! ১৬ নভেম্বর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/রাসেল/মাহমুদ

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে