হামলায় ভাইকে হারিয়েও খেলবেন ফুটবলাররা!
স্পোর্টস ডেস্ক : টাটকা লাল থেকে কালচে হয়েছে রঙ৷ কিন্তু রক্তের ঘ্রাণ বাসি হয়নি প্যারিসে। বারুদের চাদরে চাপা পড়েছে ঝকঝকে নীল আকাশ৷ এ কোন প্যারিস? কান্না গুলিয়ে উঠছে বুকে, গলার কাছে৷ এমন আবহে কি ফুটবল খেলতে ইচ্ছে করবে? এমন দমচাপা প্যারিসে ফুটবলে পা ছোঁয়াতে কি মন চাইবে? সন্দেহ ছিল৷ কিন্তু সেই সন্দেহের বেড়া ভেঙে দিলেন ফ্রান্সের ফুটবলাররা৷
মঙ্গলবার ইংল্যান্ডের সঙ্গে প্রীতি ম্যাচ খেলবেন তারা৷ ফ্রান্স দল পূর্ণ শক্তি নিয়েই খেলবে৷ ২৩ জন ফুটবলারকে বলা হয়েছিল, না চাইলে, খেলতে হবে না৷ কিন্তু ২৩ জনের কেউই আপত্তি করেননি৷ করেননি দুই ফুটবলার লাসানা দিয়েরা এবং আন্তেনিও গ্রিজম্যানও৷ জঙ্গি হানা এই দুই ফুটবলারের একজনের ভাইকে কেড়ে নিয়েছে, আরেকজনের বোন কোনওরকমে বাঁচলেও, আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন৷
দিয়েরার ভাই দিয়াকাইট মারা গিয়েছে৷ আর গ্রিজম্যানের বোন তখন থিয়েটার হলে ছিলেন৷ কোনওরকমে বেঁচেছে৷ আসলে শুক্রবার রাতের পর থেকে ফুটবলাররা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়ছেন মাঠের বাইরেও৷ প্যারিসের স্বজনহারা মানুষের শোকে এত তাড়াতাড়ি প্রলেপ লাগানো অসম্ভব, ওঁরা জানেন৷ তবে এই কঠিন সময়ে পালিয়ে দূরে কোথাও চলে যাওয়ার কথা ফুটবলাররা ভাবছেন না৷ চাইছেন প্যারিসের মানুষের পাশে থাকতে৷
শুক্রবার প্যারিসে যখন একের পর এক মর্মান্তিক ঘটনা ঘটছে, তখন স্তাদ দ্য ফ্রান্সে প্রীতি ম্যাচে জার্মানিকে নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন সোয়াইনস্টেগার৷ তিন দিন কেটে গেছে কিন্তু প্যারিসের জঙ্গি হানার ঘোর এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেননি৷ জার্মানির অধিনায়ক সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে বলেছেন, ‘শুক্রবার যা হল তা কিছুতেই মন থেকে মুছতে পারছি না৷ এখনও নির্বাক৷ হতবাক৷’
প্যারিসের নাগরিকদের পাশে থাকার বার্তাও দিয়েছেন তিনি৷ লিখেছেন, ‘এই মর্মান্তিক ঘটনায় যারা প্রভাবিত হয়েছেন, তাদের প্রতি আমার সমবেদনা রইল৷ যারা প্রাণ হারিয়েছেন তাদের জন্য প্রার্থনা করছি৷ ধর্ম, বর্ণ ভুলে এই মুহূর্তে আমাদের এককাট্টা হতে হবে৷ এই মুহূর্তে একে-অপরের পাশে থাকাটা জরুরি৷’
১৭ নভেম্বর,২০১৫/এমটি নিউজ২৪/এসবি/এসএস