টেনিস থেকে ক্রিকেটে, ‘ইতি’ জনসন অধ্যায়!
স্পোর্টস ডেস্ক : ছোট্ট ছেলের স্বপ্ন ছিল বড় হয়ে টেনিস প্লেয়ার হবে। সেই স্বপ্নের পেছনে শুরুও করেছিল ছুটতে! চোদ্দ যখন, কুইন্সল্যান্ড থেকে বাড়ি বদলে চলে গিয়েছিল ব্রিসবেনে। টেনিস কেরিয়ার এগিয়ে নিয়ে যেতেই। কিন্তু, সময় মোড় নিল হঠাৎই! সতেরোর ছেলে টেনিস ছেড়ে মন দিল ক্রিকেটে! জুহুরি চেনে হীরে। ছেলেটাকে চিনলেন ডেনিস লিলি।
সেই শুরু। তারপর ২০০৫ থেকে ২০১৫। দীর্ঘ পথ। সাফল্যের শিখর ছোঁয়া। শেষের দিকে সেই শিখরের পাদদেশে নেমে এসেছিলেন অনেকটাই। তবে তাঁর দাপটকে অস্বীকার করার সাহস হয়নি কারও। সেই তিনিই দিন কয়েক আগে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন অবসরের ব্যাপারে। মঙ্গলবার সরকারিভাবে জানিয়ে দিলেন অবসরের কথা। নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ওয়াকা টেস্টই তার শেষ ম্যাচ ব্যাগি গ্রিন টুপিতে, ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই বর্ণময় এক কেরিয়ারের ‘ইতি’ হল।
৭৩ টেস্টে ৩১৩ উইকেট, ১৫৩টি একদিনের ম্যাচ খেলে ২৩৯ উইকেট ঝুলিতে রয়েছে তার। ব্যাট হাতে টেস্টে শতরানও করেছেন৷ এমন চোখ ধাঁধানো পারফরমেন্স যাঁর, সেই তিনি কেন ৩৪–কেই অবসরের বয়স বাছলেন? জনসন বলেছেন, ‘যতদিন পর্যন্ত ভাল পারফর্ম করেছি, দলের হয়ে নিজের দায়িত্ব পালন করেছি, ততদিনই মানসিক তৃপ্তি পেয়েছি। কিন্তু, এখন মনে হচ্ছে, সরে যাওয়ার এটাই সঠিক সময়। দেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করতে পেরে আমি গর্বিত। এ এক দুর্দান্ত সফর। কিন্তু যে কোনও সফরেরই শেষ থাকে। ওয়াকায় আমার সফর শেষ হল। অনেক ভেবে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। মানছি, ক্রিকেট কেরিয়ারে চড়াই–উতরাই পথ পেরোতে হয়েছে। তবে একটা কথা বলতে পারি, জীবনের সবটুকু উজাড় করে দিয়েছি মাঠে। যা যা পেয়েছি, তাতে গর্বিত। অ্যােশজ জয়, বিশ্বকাপ জেতা— তার মধ্যে সবচেয়ে স্মরণীয়।’
জনসন কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন, পরিজন, বন্ধু, অনুরাগীদের। বলেন, ‘আমার পরিবার, বিশেষ করে স্ত্রী জেস প্রতি মুহূর্তে পাশে থেকেছে। জীবনে এতদূর এগোতেই পারতাম না, ওরা যদি সঙ্গে না থাকত। অনেকেই বলেন, খেলাধুলো করলে নতুন নতুন বন্ধু পাওয়া যায়। যাদের সঙ্গে খেলেছি, তাদের সঙ্গে অাজীবনের বন্ধুত্ব তৈরি হয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার সব মানুষের কাছে কৃতজ্ঞ। ওদের সামনে খেলতে পারব না আর। এই ব্যাপারটা অবশ্যই মিস করব।’
অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক স্টিভ স্মিথ বিস্মিত জনসনের অবসরের খবরে। বলেন, ‘ও খুব খারাপ খেলছিল না। তবে হয়ত মনে করেছে, সরে যাওয়ার এটাই সময়। দুর্দান্ত বোলার। প্রচণ্ড পেশাদার। নেটে ওর দেওয়া কয়েকটা বাউন্সার, কখনও ভুলব না।’ জনসনের অবসরের খবর শুনে তাকে ভবিষ্যৎ জীবনের জন্য শুভেচ্ছা জানিয়েছেন শচিন টেন্ডুলকার৷ টুইটারে শচিন লিখেছেন, ‘গুডলাক মিচেল৷ মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের হয়ে খেলার সময় ওকে আরও ভালভাবে চিনেছি৷ ওর আক্রমণাত্মক মনোভাবটা দারুণ লাগত৷ উপভোগ করতাম৷’
১৮ নভেম্বর,২০১৫/এমটি নিউজ২৪/এসবি/এসএস