শনিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ১০:১৭:০২

ভারতকে হারিয়ে দেয়ায় নাসিরের যত অবদান

ভারতকে হারিয়ে দেয়ায় নাসিরের যত অবদান

স্পোর্টস ডেস্ক : উইকেট শিকারি নাসিরের উল্লাস। ভারত ‘এ’ দলের ৫ উইকেট নেওয়ার আগে বাংলাদেশ ‘এ’ দলের অলরাউন্ডার করেছেন অপরাজিত সেঞ্চুরি। এক নাসিরের কাছেই কাল হেরে গেছে ভারত ‘এ’ দল । বিসিসিআইব্যাটে-বলে দ্যুতি ছড়ালেন নাসির হোসেন আর তাতেই জয়ের হাসি হাসল বাংলাদেশ ‘এ’ দলও।

সিরিজের প্রথম ম্যাচে চেষ্টা করেও বাংলাদেশ ‘এ’ দলকে জেতাতে পারেননি। কাল দ্বিতীয় এক দিনের ম্যাচে ব্যাট-বলে অতিমানবীয় পারফরম্যান্স করেই বাংলাদেশ ‘এ’ দলকে জেতালেন অলরাউন্ডার নাসির। অপরাজিত সেঞ্চুরির পর অফ স্পিন বোলিংয়ে ৫ উইকেট, নাসিরের ম্যাচে বাংলাদেশ ‘এ’ জিতল ৬৫ রানে। সমতাও ফিরল সিরিজে।
প্রথম ম্যাচে উইকেটে এসেছিলেন ৮৭ রানে ৫ উইকেট পড়ার পর।

কালও ৫ উইকেট পড়ার পর উইকেটে এলেন নাসির, টস হেরে ব্যাটিং পাওয়া দলের রান তখন মাত্র ৮২। আগের ম্যাচে লিটন দাসকে নিয়ে ১২০ রানের জুটি গড়ে চেষ্টা করেছিলেন দলকে জেতাতে। সেদিন হয়নি, কিন্তু কাল লিটন-নাসিরের ৭০ রানের জুটিটাই ভিত গড়ে দিল বাংলাদেশ ‘এ’ দলের জয়ের।

লিটন এবার ফিফটি পাননি, ফিরেছেন ৪৫ রানে। তবে নাসির লোয়ার অর্ডার ব্যাটসম্যানদের নিয়ে দলের রানটা ২৫২-তে নিয়ে গিয়েই ফিরেছেন ড্রেসিংরুমে। সহ-অধিনায়ক পেয়েছেন লিস্ট ‘এ’ ক্যারিয়ারের তৃতীয় সেঞ্চুরি, ৯৬ বলে তাঁর অপরাজিত ১০২ রানের ইনিংসটি সাজানো ১২টি চার ও ১টি ছয়ে।

লিটনের আউটের পর ইনিংসের শেষ ১৬.৪ ওভারে আরাফাত সানি, শফিউল ইসলাম ও রুবেল হোসেনকে নিয়ে ঠিক ১০০ রান যোগ করেন নাসির।

২৫৩ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করা ভারত ‘এ’ দলের শুরুটা আশঙ্কাই জাগিয়েছিল। ৩১ রানে ওপেনার মায়াঙ্ক আগরওয়ালকে হারালেও আর কোনো উইকেট না হারিয়েই ২৮তম ওভারে স্বাগতিকেরা পৌঁছে যায় ১১৯ রানে। অধিনায়ক উন্মুক্ত চাঁদ ও মনীশ পান্ডে দারুণ ব্যাট করছিলেন। নাসির ধ্বংসযজ্ঞের সূচনা করলেন ওই ওভারেই। নিজের তৃতীয় ওভারের তৃতীয় বলে চাঁদকে উইকেটকিপার লিটনের ক্যাচ বানালেন। ২৯তম ওভারে মুমিনুল আক্রমণে ফেরালেন প্রথম ৫ ওভারে ১৫ রান দিয়ে ১ উইকেট নেওয়া রুবেলকে। এক ওভার পরেই পান্ডেকে বোল্ড করে অধিনায়কের আস্থার প্রতিদান দিলেন এই পেসার।

৩ উইকেটে ১৩৭, জিততে হলে শেষ ১৯ ওভারে ভারত ‘এ’ দলকে করতে হবে ১১৬ রান—ম্যাচে তখনো দুই দলের সমান সম্ভাবনা। ৬ ওভার পরেই অবশ্য ম্যাচটা পুরোপুরি হেলে পড়ল বাংলাদেশ ‘এ’ দলের দিকে। ৩৪তম ওভারে নাসিরের জোড়া আঘাত। তিন বলের মধ্যে ভারতীয় ‘এ’ দলের সবচেয়ে বড় নাম সুরেশ রায়না ও করুণ নায়ারকে স্টাম্পিংয়ের ফাঁদে ফেললেন নাসির। পরের ওভারে রুবেল শূন্য রানে ফেরালেন সঞ্জু স্যামসনকে। পাঁচ বল পর নাসিরের শিকার আগের ম্যাচে ঝোড়ো ফিফটি করা ঋষি ধাওয়ান। এরপর কর্ণ শর্মাকে তুলে নিলেন রুবেল। ২ উইকেটে ১৩৭ থেকে দেখতে না-দেখতেই ৮ উইকেটে ১৫৭ ভারত ‘এ’।
এরপর যা একটু চেষ্টা করলেন প্রথম ম্যাচের নায়ক গুরকিরাত। তবে তাঁকে বোল্ড করেই ম্যাচের ইতি টেনেছেন আল আমিন। অবশ্য এর আগেই রুশ কালারিয়াকে আউট করে প্রথমবারের মতো স্বীকৃত ক্রিকেটে ৫ উইকেট পেয়ে গেছেন নাসির। স্টাম্পড হয়েছেন কালারিয়া। তিন স্টাম্পিং ও দুই ক্যাচ মিলিয়ে পাঁচ ডিসমিসাল নিয়ে দিনটাকে স্মরণীয় করে রেখেছেন উইকেটকিপার লিটন দাসও।
সিরিজে সমতা এসেছে। এবার সিরিজ জয়ের আশা। আগামীকাল একই মাঠে শেষ এক দিনের ম্যাচ। তার আগে অসাধারণ এই জয় খেলোয়াড়দের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দিয়েছে বলেই মনে করেন বেঙ্গালুরুতে দলের সঙ্গে থাকা প্রধান নির্বাচক ফারুক আহমেদ।

সংক্ষিপ্ত স্কোর
বাংলাদেশ ‘এ’: ৫০ ওভারে ২৫২/৮ (রনি ০, সৌম্য ২৪, এনামুল ৩৪, মুমিনুল ৩, লিটন ৪৫, সাব্বির ১, নাসির ১০২*, আরাফাত ১৭, শফিউল ৪, রুবেল ৯*; কালারিয়া ১/৩৫, অরবিন্দ ০/৫৬, ধাওয়ান ৩/৪৪, গুরকিরাত ০/৫৫, কর্ণ ২/৪০, রায়না ১/২১)। ভারত ‘এ’: ৪২.২ ওভারে ১৮৭ (আগরওয়াল ২৪, চাঁদ ৫৬, পান্ডে ৩৬, রায়না ১৭, নায়ার ৪, গুরকিরাত ৩৪, স্যামসন ০, ধাওয়ান ০, কর্ণ ২, কালারিয়া ৫, অরবিন্দ ০*; শফিউল ০/৩২, আল আমিন ১/৩৫, রুবেল ৪/৩৩, আরাফাত ০/২৯, সৌম্য ০/১২, নাসির ৫/৩৬, মুমিনুল ০/৫)। প্রথম আলো
১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/হাবিব/এইচআর

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে