কোহলির মাঝে সৌরভের ছায়া!
স্পোর্টস ডেস্ক : তিনি মনে করেন, ওর মধ্যে দিয়েগো মারাদোনার মতো প্যাশন রয়েছে। আর ওর সতীর্থরা মনে করে থাকেন, ওর মধ্যে মাঠে ও ড্রেসিংরুমে ‘দাদা’র ছায়া দেখতে পাওয়া যায়। এভাবেই দু’জনে নিজেদের অজান্তেই একে অপরের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছেন নিঃশব্দে। যা আখেরে ভারতীয় দলকে অন্য মাত্রায় পৌঁছে দিতে বাধ্য।
সৌরভ গাঙ্গুলি ও বিরাট কোহলির কথাই বলতে চাইছি। সৌরভ তো প্রকাশ্যে বলে থাকেন, কোহলির মধ্যে তিনি মারাদোনার মতো প্যাশন দেখতে পান। মাঠে ভাল করার খিদে যেন মারাদোনার মতোই। আর ভারতীয় দলে কোহলির সতীর্থরা বলেন, বিরাট তাদের কাছে অনেকটা সৌরভের মতোই অধিনায়ক। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ক্রিকেটার বেঙ্গালুরুতে বলেছিলেন, সৌরভ গাঙ্গুলি মাঠে যেমন সতীর্থদের মধ্যে অন্য একটা লড়াইয়ের স্বাদ এনে দিয়েছিলেন, বিরাটও সেরকম। বিরাটও প্রত্যেকের মধ্যে লড়াই করার খিদে ঢুকিয়ে দিয়েছেন। বিপক্ষের বিরুদ্ধে বুক চিতিয়ে লড়াই করার মানসিকতা এনে দিয়েছেন। বিপক্ষে যে দলই থাকুক না কেন, বিরাট সেই দলের বিরুদ্ধে সামনে থেকে লড়ার কায়দা শিখিয়ে দিয়েছেন। সে জন্য বর্তমান ভারতীয় দলের অনেকেই সৌরভের ছায়া খুঁজে পান কোহলির মাঝে।
আরও জানা গেল ভারতীয় শিবিরে খোঁজ নিয়ে। সৌরভ গাঙ্গুলি অধিনায়ক হিসেবে যেভাবে তাঁর ক্রিকেটারদের পাশে সবসময় দাঁড়াতেন, বিরাট কোহলিও ঠিক একই পন্থা নিয়েছেন। তিনি প্রকাশ্যে কখনও কোনও ক্রিকেটার সম্পর্কে সমালোচনা করেন না। কোনও ক্রিকেটারের ধারাবাহিক ব্যর্থতা চললেও কোহলি নেতা হিসেবে পাশে দাঁড়িয়ে সেই সংশ্লিষ্ট ক্রিকেটারের মধ্যে সাহস জুগিয়ে থাকেন। এটা সৌরভও করতেন। কোহলির দলে কোনও ক্রিকেটার খারাপ পারফরমেন্স করে থাকলে কোহলি সেই ক্রিকেটারের সঙ্গে আলাদা করে কথা বলতেই ভালবাসেন বলে জানা গেছে। তিনি ড্রেসিংরুমের মধ্যেও অন্যান্য ক্রিকেটারের সামনে সেই ক্রিকেটারকে কোনও কিছু না বলে পরে বলে থাকেন। কোহলির এই দিকটা বর্তমান ভারতীয় ক্রিকেটাররা দারুণভাবে দেখছেন বলেই জানা গেল।
ছোট্ট উদাহরণ বেঙ্গালুরু টেস্টের পর শোনা গেল। জানা গেছে, টেস্টের প্রথম দিন এবি ডি’ভিলিয়ার্সের যে অসাধারণ ক্যাচটি ধরেছিলেন ঋদ্ধিমান সাহা, তা নিয়ে দিনের শেষে সতীর্থদের কাছে উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছেন ভারত অধিনায়ক। ভারতীয় ড্রেসিংরুম মনে করছে, সবাই দেখেছে ঋদ্ধিমান কীভাবে দুরন্ত ক্যাচটা নিয়েছিলেন। সবাই মাঠেই তারিফ করেছে। কিন্তু দিনের শেেষ ড্রেসিংরুমে অধিনায়ক আলাদা করে ঋদ্ধিমানের ক্যাচের প্রসঙ্গ তুলেছিলেন। তার ফলে ঋদ্ধিমানের মানসিকতা আরও উদ্বুদ্ধ হতে বাধ্য। বিরাট জেনেবুঝেই সেই কাজ করতে পিছপা হননি। তিনি জানেন, কীভাবে সতীর্থদের উদ্বুদ্ধ করতে হয়। ক্রিকেটাররাও মনে করেছেন, এমন অধিনায়ককে পেয়ে তাঁরা একটা ‘দল’ হিসেবে তৈরি হতে বাধ্য। যা ভারতীয় ক্রিকেটকে আগামী দিনে অনেকটাই এগিয়ে নিয়ে যাবে।
সৌরভ ও কোহলিকে কাছ থেকে দেখা এক ভারতীয় সদস্য বলছিলেন, ‘দুজনেই হৃদয় থেকে কথা বলে। দুজনেরই প্যাশন রয়েছে। সে জন্য দুই অধিনায়কের নেতৃত্বেই ক্রিকেটাররা নিজেদের আরও উজাড় করে দিতে পারে। এটা সতি্য খুব ভাল লক্ষণ যে–কোনও দলের ক্ষেত্রে।’ সত্যি, শুরুতেই লিখেছিলাম না, দু’জনে নিজেদের অজান্তেই দু’জনের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছেন ইতিবাচকভাবেই।
২০ নভেম্বর,২০১৫/এমটি নিউজ২৪/এসবি/এসএস