শনিবার, ২৮ নভেম্বর, ২০১৫, ১০:৪৩:২৩

রান খরায় নিভু নিভু জ্বলছে এবারের বিপিএল!

রান খরায় নিভু নিভু জ্বলছে এবারের বিপিএল!

স্পোর্টস ডেস্ক: স্বল্প আসরের ম্যাচ টি-টোয়েন্টি মানেই বাড়তি উত্তেজনা। ব্যাটসম্যানদের চার-ছক্কা আর বোলারদের সুকৌশল বোলিং খুরদার। এক কথায় বলতে গেলে মারমার কাটকাট ব্যাটিং-বোলিং। চোখের পলক এদিক থেকে সেদিক ফেলতেই ছয়-চার না হয় উইকেটের সমাপ্তি। কিন্তু বাংলাদেশের হাই-ভোল্টেজ আসর টি-টোয়েন্টিতে দেখা যাচ্ছে ভিন্ন এক চিত্র। টুর্নামেন্টটির প্রথম ম্যাচ দেখে অনেকে ভেবে বসেছিল। ভালোই উত্তেজনা ছড়াবে এই আসরটি। প্রথম ম্যাচে সাকিবের রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে ১৮৭ রানের স্কোর দাঁড় করিও জিততে পারেনি তামিম ইকবালের চিটাগং ভাইকিংস! এরপরও প্রথম ইনিংসে বেশি রান হয়েছে মোটে চারটি ম্যাচে। মূল ছন্দপতনটা ঘটে টুর্নামেন্টের চতুর্থ দিনে এসে। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের বিপক্ষে ৮৯ রানে অলআউট বরিশাল বুলস। সেই থেকে কাল প্রথম ম্যাচ পর্যন্ত ১১০ রানই সর্বোচ্চ। প্রথমে ব্যাট করা দল এক শর নিচে অলআউট দুই ম্যাচে। কাল দ্বিতীয় ম্যাচে অবশ্য ১৬৬ করে সে ধারাটা ভেঙেছে ঢাকা ডায়নামাইটস। রান অল্প হওয়ার পিছনে আইকন প্লেয়ারদের মধ্যে ভিন্ন মত লক্ষ্য করা গেছে। তারা বলেন একি মাঠে টানা খেলা হচ্ছে বলে উইকেট দূর্বল হয়ে পড়ছে। সে কারণে বল উঠছেনা। আর তাতে রান করাও কষ্টসাধ্য ব্যাপার হয়ে দাঁড়াচ্ছে। একিই কথা কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজারও। এ দুই আইক প্লেয়ারের কথায় সায় দিলেন বাংলাদেশ দলের উপদেষ্টা খালেদ মাহমুদও বললেন, ‘উইকেট বিশ্রাম পাচ্ছে না। তা ছাড়া রাতে এখন শিশির পড়লেও প্রতিদিনই খেলা থাকায় উইকেট ঢেকে রাখা যাচ্ছে না। শিশির থেকে বাঁচাতে পারলেও উইকেট কিছুটা শক্ত থাকত।’ মাশরাফি-সাকিবের ভিন্নমতও আছে। কম রানের জন্য উইকেটকে যেমন দায়ী করছেন তারা, তেমনি বলছেন, কম মানে এই নয় যে এক শর নিচে বা তার আশপাশে অলআউট হওয়ার মতো উইকেট। ‘এই উইকেটে হয়তো ১৭০-১৮০ রান করা সম্ভব নয়, তবে এটা ১০০ বা ১২০ রানের উইকেটও না। আমার মনে হয় ব্যাটসম্যানরা একটু তাড়াহুড়ো করে খেলছে বলেই এটা হচ্ছে। নয়তো এখানেও ১৪০-১৫০ রান সম্ভব’—কাল রংপুর রাইডার্সকে ৯ উইকেটে হারিয়ে উঠে বলেছেন মাশরাফি। এর আগে সাকিবও বলেছেন, ‘১৩০-১৪০ রান এই উইকেটেও সম্ভব। ব্যাটসম্যানরা ১৭০-১৮০ করার জন্য খেলতে গিয়েই উল্টো এক শর নিচে অলআউট হয়ে যাচ্ছে।’ আসলে বিপিএলের সূচিটাই এ রকম যে, উইকেটের ওপর ‘নির্যাতন’ বন্ধ হওয়ার নয়। ঢাকায় ভেন্যু শুধু শেরেবাংলা স্টেডিয়ামই, চট্টগ্রামেও খেলা হবে একমাত্র জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে। ৩০ নভেম্বর থেকে ৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত সেখানেও প্রতিদিন ২টি করে ম্যাচ। টানা ছয় দিনে ১২টি ম্যাচ হওয়ার পর অবশ্য আজ থেকে আট দিনের বিরতি পাবে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়াম। তাতে যদি ৬ ডিসেম্বর থেকে এ মাঠের পরের পর্বে কিছু রানের দেখা মেলে! অবশ্য ওই পর্বেও ১০ দিনে ম্যাচ হবে ১৪টি। অন্যান্য দেশে ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক টুর্নামেন্টগুলো হোম-অ্যাওয়ে ভিত্তিতে হয় বলে এক-দুটি মাঠের ওপর এত চাপ পড়ে না, যতটা পড়ছে বিপিএলে। মিরপুরে ২, ৩ ও ৫ নম্বর উইকেটেই ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে প্রতিদিন দুটি করে ম্যাচ হয়েছে। উইকেট পরিচর্যার সময় কোথায়? এ মাঠে আরও পাঁচটি উইকেট থাকলেও সব উইকেটেই ম্যাচ খেলা সম্ভব নয়। তা ছাড়া অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের প্রস্তুতি দেখতে আগামী মাসের শুরুতে আইসিসির পর্যবেক্ষক দল বাংলাদেশে আসবে। তাদের দু-একটি ভালো উইকেটও দেখাতে চায় বিসিবি। ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে তিনটি উইকেটে খেলার সেটিকেই কারণ বলছেন বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্যসচিব ইসমাইল হায়দার মল্লিক, ‘সব উইকেটে খেলা দেওয়া যাচ্ছে না কারণ বিশ্বকাপের জন্য আমাদের কয়েকটা উইকেট রিজার্ভ রাখতে হচ্ছে।’ সমস্যার সমাধানের জন্য আগামীবার থেকে বিপিএলে তিন দিন পর একদিন বিরতি রাখার চিন্তাভাবনা আছে। এবারও ঢাকার পরের পর্বে ছয়টি উইকেটে খেলা হতে পারে বলে জানিয়েছেন মল্লিক। এ ছাড়া শিশিরের প্রভাব কিছুটা কমাতে টুর্নামেন্টের বাকি দিনগুলোতে দ্বিতীয় ম্যাচ শুরুর সময় এগিয়ে আনা হয়েছে ১৫ মিনিট। পয়েন্ট তালিকা ম্যাচ জয় হার পয়েন্ট নে.রা.রে. কুমিল্লা ৪ ৩ ১ ৬ +০.৯২৮ রংপুর ৫ ৩ ২ ৬ +০.০৪৪ ঢাকা ৪ ৩ ১ ৬ -০.০৮৭ বরিশাল ৩ ২ ১ ৪ +০.০২২ চট্টগ্রাম ৪ ১ ৩ ২ -০.৪৮৪ সিলেট ৪ ০ ৪ ০ -০.৫২৫ সূত্র : প্রথম আলো ২৮ নভেম্বর,২০১৫/এমটিনিউজ২৪/আরিফুর রাজু/এআর

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে