বৃহস্পতিবার, ০৩ ডিসেম্বর, ২০১৫, ০৯:১৩:১১

দুর্দান্ত বোলিং অথচ ৩২ ম্যাচে বল করেছেন মাত্র দুটিতে

দুর্দান্ত বোলিং অথচ ৩২ ম্যাচে বল করেছেন মাত্র দুটিতে

স্পোর্টস ডেস্ক: যারা বোলিং হিসেবে দলে সুযোগ পায় তারা বল করবে এটাই তো স্বাভাবিক। তবে যারা অলরাউন্ডার হিসেবে দলে সুযোগ পায় অনেক সময় তারা সব ম্যাচে বল করে না-ক্রিকেটে এমন চিত্র সবারই জানা। তাই বলে দলের নির্ভরযোগ্য বোলিং ২১ ওয়ানডের মধ্যে ১৯টি ওয়ানডেতে কোন বলই করেন নি,ভাবা যায়! অন্যদিকে নিজের খেলা সর্বশেষ ১৩টি টি-টোয়েন্টিতেও বল করেন নি তিনি। বলছি জিম্বাবুয়ের অলরাউন্ডার এলটন চিগুম্বুরার কথা। সে কারণে গতকাল বরিশাল বুলসের বিপক্ষে চিটাগং ভাইকিংসের এলটন চিগুম্বুরার করা ১৯তম ওভার নিয়ে ছিল নানা কৌতুহল। বোলিংয়ে চিগুম্বুরার অনভ্যস্ততার কথা কি জানতেন না চিটাগং ভাইকিংস অধিনায়ক তামিম ইকবাল? বিপিএলের চট্টগ্রাম পর্বের আলোচিত ওই ম্যাচের এই জায়গাতেই খটকা বিসিবির দুর্নীতি দমন ইউনিটের। কিন্তু এটিকে তারা সন্দেহে রূপান্তর করতে পারছেন না তামিমের পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তির কারণে। ক্রিকেট দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাতীয় দলের এই ওপেনার বরাবরই সোচ্চার এবং সহযোগিতাপূর্ণ আচরণ করে আসছেন। তাঁকে ঘিরে তাই সন্দেহ দানা বাঁধছে না। চিগুম্বুরার ও রকম বোলিংকে এখন পর্যন্ত ক্রিকেটীয় ব্যর্থতা হিসেবেই দেখা হচ্ছে। তবে কামরান আকমলের রানআউটের সঙ্গে কোনো কিছুর যোগসূত্র আছে কি না সেটি খতিয়ে দেখা হতে পারে। বিপিএল চলাকালে পাকিস্তানের এই ব্যাটসম্যানের সঙ্গে বাইরের জগতের যোগাযোগটা নাকি একটু বেশিই দেখা যাচ্ছে। একই অভিযোগ বাংলাদেশ দলের এক বাঁহাতি স্পিনারের বিরুদ্ধেও। এ ছাড়া দুর্নীতি দমন ইউনিটের কড়া নজরদারিতে আছেন জাতীয় দলের এক টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান। তাঁর প্রতি সন্দেহটা অতীত রেকর্ডের কারণে। দুর্নীতি দমন ইউনিটের আচরণবিধি মানছেন না বিসিবির দু-একজন পরিচালক ও কয়েকটি ফ্র্যাঞ্চাইজির মালিক পক্ষের লোকজনও। বিপিএলে বিভিন্ন দলের সঙ্গে থাকা সবার চলাফেরা ও আচরণের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট দিকনির্দেশনা আছে। ম্যাচ চলাকালে ড্রেসিংরুম বা খেলোয়াড়দের এলাকা ও মালিকপক্ষের ডাগ-আউটের সঙ্গে বাইরের কারও যোগাযোগ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। এমনকি একবার যার যার জায়গায় ঢুকে যাওয়ার পর সেখান থেকে বাইরে যাওয়ার ওপরও আছে নিষেধাজ্ঞা। কিন্তু ঢাকা ডায়নামাইটসের এক কর্মকর্তা শুরু থেকেই এসব নিয়ম অমান্য করে আসছেন বলে জানিয়েছে সূত্র। বিসিবি দুর্নীতি দমন নীতি করেছে, আছে দুর্নীতি দমন ইউনিটও। কিন্তু সরষের মধ্যেই ভূত থাকায় কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছে না। বিসিবির অন্য দু-একজন পরিচালকের বিরুদ্ধেও এই ফ্র্যাঞ্চাইজির কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বিশেষ ‘সখ্য’র কথা শোনা যাচ্ছে। সূত্র জানিয়েছে, প্রায় প্রতি ম্যাচ শেষেই এসব পরিচালক স্টেডিয়াম কিংবা স্টেডিয়ামের বাইরে ফ্র্যাঞ্চাইজির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে সভা করছেন। বিপিএল চলাকালে বোর্ড কর্মকর্তাদের বিশেষ কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজির সঙ্গে এমন নিবিড় যোগাযোগ সন্দেহের বাতাবরণ ছড়ায় বৈকি। বিসিবি দুর্নীতি দমন নীতি করেছে, আছে দুর্নীতি দমন ইউনিটও। কিন্তু সরষের মধ্যেই ভূত থাকায় কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছে না সেসব। গুরুতর অভিযোগ আছে সিলেট সুপারস্টারসের বিরুদ্ধেও। তাদের টিম মিটিংয়ে নাকি উপস্থিত থাকেন খেলোয়াড়দের এক পাকিস্তানি এজেন্ট! এ ছাড়া খেলোয়াড়দের হোটেল রুমে টিম ম্যানেজমেন্ট সদস্যদের বাইরে কারও যাওয়া নিষেধ থাকলেও বরিশাল বুলস নাকি নিয়মটি মানছে না। এসব বিষয়ে বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্যসচিব ইসমাইল হায়দারের বক্তব্য, ‘টিম মিটিংয়ে খেলোয়াড় এজেন্ট উপস্থিত থাকাটা অবশ্যই গুরুতর অন্যায়। আমাদের কানেও এ রকম একটা কথা এসেছে। তবে অন্য অভিযোগগুলো অতটা গুরুত্বপূর্ণ মনে করছি না। মাঠে একবার ঢুকলে আর বের হওয়া যাবে না, এ রকম ধরাবাঁধা নিয়ম নেই।’ জানা গেছে, এসব বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোকে একাধিকবার সতর্ক করেও ইতিবাচক সাড়া পায়নি দুর্নীতি দমন ইউনিট। উল্টো বিরূপ অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে হয়েছে। ঢাকা ডায়নামাইটসের ওই কর্মকর্তাকে সতর্ক করতে গিয়ে তো ‘চাপে’ই পড়ে গিয়েছিলেন ইউনিটের সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা। অপমানিতও হতে হয়েছে! তবে রংপুর রাইডার্স, চিটাগং ভাইকিংস ও কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের মধ্যে এখন পর্যন্ত তেমন কোনো সমস্যা দেখেনি দুর্নীতি দমন ইউনিট। ফ্র্যাঞ্চাইজির মালিক-কর্মকর্তাদের নিয়ম অমান্য করা সম্পর্কে জানতে চাইলে বিস্তারিত বলতে রাজি হননি বিসিবির দুর্নীতি দমন ইউনিটের প্রধান আবু মোহাম্মদ হুমায়ুন মোর্শেদ। ৩ ডিসেম্বর, ২০১৫/এমটি নিউজ২৪/জুবায়ের/রাসেল

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে