সোমবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০১৫, ০৮:৫৭:৪৭

শেষ ওভারে রোমাঞ্চ টাইগার সাব্বিরের

শেষ ওভারে রোমাঞ্চ টাইগার সাব্বিরের

স্পোর্টস ডেস্ক : বরিশাল ভালো খেলবে এটা মোটামোটি সবাই জানতো, তবে তাদের ফাইনালে উঠার আসরটি এতটা রোমাঞ্চকর হবে সেটা হয়তো কারো ধারণায় ছিল না। সাব্বির রহমানের দৃষ্টিনন্দন ব্যাটিং নৈপুন্যে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) তৃতীয় আসরের ফাইনালে উঠেছে বরিশাল বুলস। টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় কোয়ালিফাইয়ার ম্যাচে রংপুর রাইডার্সকে ৫ উইকেটে হারায় বরিশাল। রংপুরের ছুড়ে দেয়া ১৬১ রানের টার্গেট ৩ বল হাতে রেখেই টপকে যায় বরিশাল। সাব্বিরের ৭৯ রানের পাশাপাশি শাহরিয়ার নাফীসের ৪৪ রান বরিশালকে ফাইনালে উঠতে মূখ্য ভূমিকা রাখে। তবে সাব্বির রহমানের দুর্দান্ত ব্যাটিং ছাড়াও চূড়ান্ত পর্যায়ে যে লড়াই দেখা গেছে, তা অনেক দিন মনে থাকবে দর্শকদের। আগামী ১৫ ডিসেম্বর কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের বিপক্ষে ফাইনালে লড়বে বরিশাল। ফাইনালে নাম লেখানোর পথে হাটতে গিয়ে শুরুতেই হোচট খায় বরিশাল। ব্যাট হাতে পুরোপুরিই ব্যর্থ হন দলের দুই ওপেনার রনি তালুকদার ও সেকুগে প্রসন্ন। দলীয় ১০ রানের মধ্যে রনি ২ ও প্রসন্ন ৭ রানে ফিরেন। তাতে কিছুটা হলেও ক্রিস গেইলের অভাবটা টের পেয়েছে বরিশাল। টের পেয়েছিলেন তিন নম্বরে নামা সাব্বির রহমান। কিন্তু তা ভুলিয়ে দেয়ার মিশনেই নেমেছিলেন পুরো টুর্নামেন্টে ফ্লপ সাব্বির। শুরুর ধাক্কাটা আমলে না নিয়ে রংপুর বোলারদের উপর চড়াও হন সাব্বির। তার সাথে তাল মেলান শাহরিয়ার নাফিস। তবে ঠান্ডা মেজাজেই ছিলেন নাফিস। সাব্বিরকে স্ট্রাইক দিতেই বেশি মনোযোগী ছিলেন নাফিস। তাতে সাহস পেয়ে যান সাব্বির। ৪৬ বলে দলের স্কোর পঞ্চাশ ছাড়ান সাব্বির ও নাফিস। দলের স্কোর তিন অংকের স্পর্শ দিতেও দেরি করেননি তারা। ১৪তম ওভারের প্রথমে বলে শতরানের পৌছায় বরিশালের স্কোর। এসময় সাব্বির ৪৯ ও নাফীস ৩৬ রানে ব্যাট করছিলেন। ঐ ওভারেই চলতি বিপিএলে প্রথম হাফ-সেঞ্চুরি তুলে নেন সাব্বির। হাফ-সেঞ্চুরির পথে ছিলেন নাফিসও। কিন্তু দলীয় ১৩৪ রানে, রান আউটের ফাঁদে পড়েন নাফিস। ৬টি বাউন্ডারিতে ৪০ বলে ৪৪ রান করেন নাফিস। নাফিস যখন বিদায় নেন তখন বরিশালের জয় পেয়েত প্রয়োজন ছিলো ২২ বলে ২৭ রান। এই রান সহজেই হয়ে যাবার কথা ছিলো বরিশালের। কারণ উইকেট ছিলেন সাব্বির, সাথে যোগ দেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। কিন্তু দলীয় ১৪১ ও ১৪৭ রানে সাব্বির ও মাহমুদুল্লাহ বিদায় নিলে, জয় নিয়ে চিন্তায় পড়ে যায় বরিশাল। সাব্বির ৭টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৪৯ বলে ৭৯ রান করেন। মাহমুদুল্লাহ করেন ৬ বলে ৫ রান। জয় নিয়ে চিন্তা পড়ে যাওয়া বরিশালকে শেষ পর্যন্ত রক্ষা করেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের দুই খেলোয়াড় রায়াদ এমরিত ও কেভন কুপার। শেষ ওভারে ৮ রান দরকার পড়ে বরিশালের। থিসারা পেরেরার করা ঐ ওভারের প্রথম তিন বল থেকে ১০ রান তুলে বরিশালকে ফাইনালে তুলে দেন এমরিত ও কুপার। এমরিত ৭ ও কুপার ১০ রানে অপরাজিত ছিলেন। ম্যাচের সেরা হয়েছেন সাব্বির। এর আগে, মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্বান্ত নেন রংপুরের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। উদ্বোধনী জুটিতে রংপুরকে ৫২ রান এনে দেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের লেন্ডল সিমন্স ও রাসেল আল মামুন। ব্যক্তিগত ২০ রান করে মামুন ফিরে গেলেও রানের চাকা সচল রাখেন সিমন্স। এর মাঝে মিডল-অর্ডার ব্যাটসম্যানরা সিমন্সকে সঙ্গ দিতে ব্যর্থ হয়েছেন। তবে সাকিব ১০ বলে ১৩ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের ড্যারেন স্যামি ১০ বলে ২৩ রান করে দলের সংগ্রহকে ৯ উইকেটে ১৬০ রানে পৌছে দেন। এই রানে পৌছাতে দলকে আসল পথটা দেখিয়েছেন সিমন্স। এবারের বিপিএলে দ্বিতীয় হাফ-সেঞ্চুরির স্বাদ নিয়ে ৫৭ বলে ৭৩ রান করেন সিমন্স। তার ৮৭ মিনিটের ইনিংসে ৯টি ও ২টি ছক্কার মার ছিলো। বরিশালের পক্ষে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কেভন কুপার ৩৯ রানে ৪ উইকেট নিয়েছেন। সংক্ষিপ্ত স্কোর : রংপুর রাইডার্স : ১৬০/৯, ২০ ওভার (সিমন্স ৭৩, স্যামি ২৩, কুপার ৪/৩৯)। বরিশাল বুলস : ১৬৩/৫, ১৯.৩ ওভার (সাব্বির ৭৯, নাফীস ৪৪, সানি ১/১৮)। ফল : বরিশাল বুলস ৫ উইকেটে জয়ী। ম্যান অব দ্য ম্যাচ : সাব্বির রহমান (বরিশাল বুলস)। ১৪ ডিসেম্বর,২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এসএম/ডিআরএ

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে