স্পোর্টস ডেস্ক : ৮ মার্চ, ওয়েলিংটন টেস্টের প্রথম দিনটা ভেসে গেছে বৃষ্টিতে। ওয়েলিংটনের বৃষ্টিভেজা সন্ধ্যায় মেহেদী হাসান মিরাজের কি খুব মনে পড়ছিল প্রীতি অর্থাৎ রাবেয়া আখতার প্রীতির কথা? এই টেস্টে মিরাজ একাদশে নেই। বৃষ্টিবাধায় দলের খেলাও নেই। নিস্তরঙ্গ সময়ে মনে পড়তেই পারে শতসহস্র মাইল দূরে থাকা প্রেয়সীর কথা। বাতাসের শহর ওয়েলিংটনে মনে গুনগুন সুর উঠতেই পারে, ‘সময় যেন কাটে না/ বড় একা একা লাগে/ এই মুখর জনারণ্যে/বিরহী বাতাস বহে...।’
মিরাজ বিয়ের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করেছেন ওয়েলিংটনে থাকতেই। ভেবেছেন, ছয় বছরের পরিণয়কে পরিণতি দিতে এটাই সেরা সময়। মিরাজ মনে করেছেন, প্রীতির হৃদয় যেখানে, তাঁর হৃদয়ও সেখানে। দুটি হৃদয় যেহেতু সংগ্রামমুখর দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে মিলেছে এক বিন্দুতে, আর দেরি করা ঠিক নয়।
মিরাজের ছয় বছরের প্রেমের সম্পর্ক নিয়ে তাঁর ভক্তদের অনেক কৌতূহল। তিন বছর আগেও যিনি খেলেছেন অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট, তিনি প্রেম শুরু করেছেন কবে থেকে? প্রেমের সম্পর্কটা আসলে কত দিনের, সেটি নির্ণয় করতে পারেন না মিরাজ নিজেও। শুধু জানেন, প্রীতির সঙ্গে তাঁর পরিচয় ছয় বছর আগে, খুলনায় শৈশবের কোচ আল মাহমুদের সূত্র ধরে, ‘মাহমুদ ভাইকে প্রায়ই দুষ্টুমি-রসিকতা করে বলতাম, আপনার পরিচিত কোনো মেয়ে থাকলে বলতে পারেন। যদি ভালো লেগে যায়, তাকেই বিয়ে করব। আমি রসিকতা করে বললেও মাহমুদ ভাই গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছিলেন। সত্যি সত্যি একদিন আমাদের এলাকার একটা মেয়েকে দেখালেন তিনি। তারিখটা স্পষ্ট মনে আছে—২০১৪ সালের ২৮ মার্চ। আরব আমিরাতে মাত্রই ২০১৪ অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ খেলে এসেছি। ওকে প্রথম দেখাতেই ভালো লাগল। আমারই বয়স তখন আর কত! ও তো আরও ছোট। কিন্তু ভালো যখন লেগে গেছে, মনে মনে ঠিক করে ফেললাম, জীবনে যদি বিয়ে করি ওকেই করব।’
সম্প্রতি গণমাধ্যমকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে মিরাজ বলেন, আসলে খেলার জন্য সবসময় তো সময় পেতাম না। প্রেমের শুরু থেকেই খেলার মাঝে বেশি থাকতাম । যার কারণে তেমন কোনো স্মরণীয় স্মৃতি নেই। তবে প্রায় ওর সঙ্গে দেখা করতে খুলনায় যেতাম। ভালো লাগত যখন এত দূর থেকে ওর সঙ্গে দেখা করতে যেতাম। আর প্রেম করলে তো সবারই কষ্ট করতে হয়। কিন্তু আমার উপর হয়তো আল্লাহর রহমত ছিল তাই আমার বেশি কষ্ট করতে হয়নি। অল্পতেই প্রেমে সফল হয়েছি।
তিনি আরও বলেন, আমি সবসময় ক্রিকেটকে ভালোবাসি। তাই ক্রিকেটে মনোযোগ দিতে হুট করে বিয়ের সিদ্ধান্ত নেই। পরিবারও চেয়েছে তাই আর দেরি না করে বিয়ে করে ফেলি। মূলত ক্রিকেট থেকে যেন দূরে না যাই সেই জন্যই এই সিদ্ধান্ত নেই। যেন সবসময় ক্রিকেটে মনোযোগ দেওয়া হয়।