স্পোর্টস ডেস্ক: প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসে পুরোপুরি বদলে দিয়েছে অনেক মানুষের ভাগ্য। কাউকে করেছে একেবারে নিঃস্বও। ক্রীড়া জগতেও পড়েছে এর ভয়ঙ্কর প্রভাব। তেমনই একজন ভারতীয় ফুটবলার সংগীতা কুমারী। অসহায় হয়ে এখন তিনি স্থানীয় একটি ইটভাটায় দিনমজুরের কাজ করছেন।
যে সময় পায়ে বল ঠেলে মাঠ দাপিয়ে বেড়ানোর কথা, সেই সময়ে মাথায় ইটের বোঝা বয়ে বেড়াচ্ছেন ২০ বছর বয়সী ভারতীয় ফুটবলার সংগীতা। করোনা পরিস্থিতি দুর্বিষহ জীবন থেকে একটু হাফ ছেড়ে বাঁচতেই এই পেশা গ্রহণ করেছেন তিনি।
যদিও সাধারণ মানের কোন খেলোয়াড় নন সংগীতা। ঝাড়খণ্ড নারী ফুটবল দলের দলপতি তিনি। তদুপরি ২০১৮ সালে ভারতের অনূর্ধ্ব-১৮ দলের হয়ে ভুটানে খেলেছেন। এর পর অনূর্ধ্ব-১৯ দলের হয়ে থাইল্যান্ডেও খেলে এসেছেন এই তরুণী।
খেলাই সংগীতার পেশা। কিন্তু লকডাউনের কারণে গত দুই বছর ধরে খেলাধুলা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন ভারতের এই কৃতী নারী ফুটবলার। এই সময়টিতে ভারত সরকারের পক্ষ থেকে সহায়তা বা কোনো কাজও পাননি তিনি।
পরে পেটের টানে ইটভাটায় কাজ নেন সংগীতা। ইটের বোঝা বয়ে জীবনের ঘানী টেনে নেওয়া কেমন উপভোগ করছেন সংগীতা? জবাবে বললেন, “গত বছর কঠোর লকডাউন থাকায় কেউ দিনমজুরের কাজও করতে পারেনি। প্রায় ভাতে মরতে বসেছিলাম। এবার লকডাউন অতোটা কঠোর নয়। আমি যতগুলো ইট বয়ে নিয়ে যাই, প্রত্যেকটার জন্য টাকা পাই। ১০টা থেকে ৫টা পর্যন্ত কাজ করে ১৫০-২০০ টাকা হাতে আসে। এটা দিয়ে কোনোমতে চলে যাচ্ছে। কাজ যে করতে পারছি এতেই খুশি আমি।”
এমন সব কথা বলে সংগীতা নিজের করুণ দশাকে ঢাকার চেষ্টা করলেও বিষয়টি সরকারের নজরে এনেছেন ভারতের জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারপারসন রেখা শর্মা। তার মতে, “সংগীতার মতো একজন ক্রীড়াবিদ ইটভাটায় কাজ করছেন— এটি জাতির জন্য লজ্জা। অবিলম্বে সংগীতাকে সাহায্য করে তার মাথা থেকে ইটের বোঝা নামানোর জন্য ঝাড়খণ্ড সরকারের কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি।”
রেখা শর্মার সেই অনুরোধে সাড়া দিয়েছে ঝাড়খণ্ড সরকার। সেখানকার স্পোর্টস সেক্রেটারি পূজা সিংঘাল জানিয়েছেন, “সংগীতাকে আর্থিক সহায়তা করা হবে শিগগিরই। রাজ্যের কোনো একটি স্পোর্টস স্কলারশিপ প্রোগ্রামের আওতায় নিয়ে আসা হবে এই জাতীয় দলে ফুটবলারকে।”